অপরাধী যেই হোক কোন ছাড় দেয়া হবে না : লিটন দেওয়ান অফিসার ইনচার্জ বেগমগঞ্জ নোয়াখালী

প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২৫

 

এম জি বাবর(ক্রাইম রিপোর্টার) : নোয়াখালী বেগমগন্জ থানার ওসি এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন, লিটন দেওয়ান অফিসার ইনচার্জ, বেগমগঞ্জ থানা, নোয়াখালী গত ২০২৪ ইং ৩০শে সেপ্টেম্বর নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ অফিসার ইনচার্জ হিসেবে থানায় যোগদান করেন। যোগদানের পর হইতে বেগমগঞ্জ থানা এলাকার আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার, ওয়ারেন্টভুক্ত ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার করে ০৫ আগষ্টের পর ভেঙ্গে পরা আইন শৃংখলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি করে এলাকার আপামর জনসাধারণের আস্থার প্রতীক বনে যান। তার স্বল্প সময়ের পুলিশি তৎপরতায় এরই মধ্যে ৫০০ জনের অধিক ওয়ারেন্টভুক্ত ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার হয়। তিনি যোগদান করার পর হতে যত ক্রাইম হয়েছে- তা হোক পারিবারিক, জমি সংক্রান্ত বা নারী নির্যাতন সংক্রান্ত সকল ক্রাইমের আইনগত সেবা বেগমগঞ্জের সাধারণ জনগন পেয়েছে বা পাওয়ার দ্বার উম্মোচিত হয়েছে। সাধারণ জনগন আর প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে ফারাক তিনি করেননি। তার সহজ সরল সুন্দর ও মার্জিত আচরণ বেগমগঞ্জের মানুষ গ্রহণ করেছে। আলোচনাকালে তিনি বেগমগঞ্জের সকল ধরনের অপরাধীদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারী দিয়ে বলেন-অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। আইনের মুখোমুখি তাকে হতেই হবে। সুতরাং আগে থেকে সাবধান।
গত ১৭/১২/২০২৪ খ্রিঃ সকাল অনুমান ১০.১৫ ঘটিকায় আপনার থানাধীন করিমপুর সাকিনে প্রকাশ্যে রাস্তায় ছুরিকাঘাতে শাহানাজ আক্তার পিংকি (২৮) নামক ০১জন কে হত্যার ঘটনা ঘটে এবং গত ২৩/১২/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত্র অনুমান ০১.০০ ঘটিকায় মীরওয়ারিশপুর সাকিনে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইসমাইল হোসেন (৩২) কে তার স্ত্রী ও সহযোগী আসামীদের কর্তৃক মাথায় আঘাত এবং গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনা ঘটে। ১ম ঘটনায় ভিকটিম শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩০) স্বামী-জাহাঙ্গীর আলম, পিতা-বেলায়েত হোসেন, সাং-পৌর হাজীপুর, ৯নং ওয়ার্ড, চৌমুহনী পৌরসভা, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালীকে তারই চাচাত দেবর এজাহারনামীয় মুল আসামী খালেদ সাইফুল্ল্যাহ (২৮), পিতা-আব্দুল কাইয়ুম লিটন, সাং-পৌর হাজীপুর, ৯নং ওয়ার্ড, চৌমুহনী পৌরসভা, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী পূর্ব বিরোধের জের ধরে ধারালো অস্ত্র দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যা করে। উক্ত আসামী ঘটনার পর পালিয়ে গেলেও থানা পুলিশের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং টেকনিক্যাল দক্ষতায় সুদুর নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানাধীন মৌলভীবাজার এলাকা থেকে খালেদ সাইফুল্ল্যাহকে গ্রেফতারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
গত পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিম মোঃ ইসমাইল হোসেন (৩৪), পিতা-মোঃ ছায়েদুল হক, সাং-মিরওয়ারিশপুর (ছিদ্দিক চৌকিদার বাড়ী), ১নং ওয়ার্ড, ৯নং মীরওয়ারিশপুর ইউপি, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালীকে তার স্ত্রী ও সহযোগী আসামীরা তার মাথায় আঘাত এবং গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে মর্মে জানা যায়। এ মামলার ঘটনায়ও থানা পুলিশের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং টেকনিক্যাল দক্ষতায় এজাহারনামীয় মুল আসামী লিমা আক্তার (২২), পিতা-ইসমাইল হোসেন, সাং-আলোকপাড়া (সওদাগর বাড়ী), ৪নং ওয়ার্ড, তদন্তেপ্রাপ্ত সন্ধিগ্ধ আসামী ২। মোঃ মাইন উদ্দিন (৩২), পিতা-মফিজ উল্যা, মাতা-সাজিয়া খাতুন, সাং-পাপুয়া, ৩নং ওয়ার্ড, উভয় সোনাইমুড়ী পৌরসভা, থানা-সোনাইমুড়ী, জেলা-নোয়াখালীকে গ্রেফতারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
গত ২৭/১২/২০২৪খ্রিঃ তারিখ ১৪.৪৫ ঘটিকার সময় বেগমগঞ্জ থানাধীন ৪নং আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের সুজায়েতপুর গ্রামের পূর্ব সুজায়েতপুর বাইতুল আমান জামে মসজিদের সামনে রাস্তার উপর ভিকটিম মোঃ কবির হোসেন (৩৩), পিতা-মৃত নুর নবী, মাতা-বেগম প্রঃ আনোয়ারা বেগম, সাং-সুজায়েতপুর (হাজী বাড়ী), ৪নং আলাইয়ারপুর ইউপি, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালীকে অজ্ঞাতনামা আসামীরা জবাই করে ও পায়ের রগ কেটে এবং গুলি করে খুন করে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বেগম প্রঃ আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে এজাহার নামীয় ০৬ জন ও অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে বেগমগঞ্জ মডেল থানার মামলা নং-৩২, তারিখ-২৭/১২/২০২৪খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। বেগমগঞ্জ থানার একটি আভিযানিক দল মামলার মূল রহস্য উদঘাটনপূর্বক অভিযান পরিচালনা করে মামলা রুজুর ০৮ ঘণ্টার মধ্যে নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এজাহার নামীয় আসামী সহিদ প্রঃ কালাম ও শাহ আলম এবং তদন্তে প্রাপ্ত আসামী কাউসার ও মোঃ রাকিব হাসানকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আসামীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর একটি আভিযানিক দল তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলা রুজুর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও এজাহার নামীয় ১নং আসামী মোঃ সাহাব উদ্দিন এবং হত্যাকান্ডে জড়িত সন্ধিগ্ধ আসামী জহিরুল ইসলাম, আল ইসলাম হোসেন রায়হান ও মোঃ মহিউদ্দিনদেরকে গ্রেফতারপূর্বক পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী সাহাব উদ্দিন ও আল ইসলাম হোসেন রায়হান বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
তার সুনিপুন দিক নির্দেশনা ও চৌকষ অভিযানে গত ০৫/১১/২০২৪ইং বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে ০৯টি ম্যাগাজিন ও ৫টি বিদেশী পিস্তলসহ মোট ১৭টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ২৭৭ রাউন্ড পিস্তলের গুলি এবং ১২ কেজি গাঁজা উদ্ধার, ০২টি পিকআপ জব্দসহ ০৫ জন আসামীকে আটক করে, যা নোয়াখালীর ইতিহাসে কোন আইন শৃংখলা বাহিনী ইতোপূর্বে সক্ষম হয়নি। উক্ত সফলতার জন্য তিনি নভেম্বর/২০২৪ মাসে নোয়াখালী জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ নির্বাসিত হন। ইতোপূর্বে তিনি ২০১৩-১৪ সালে দারফুর, সুদান এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহন করে সাহসিকতার জন্য জাতিসংঘ শান্তি পদক লাভ করেন। তার এ মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী।