কুমিল্লার আড়াই শ’ বছরের পুরনো পুকুর ভরাটের প্রতিবাদে সোমবার (৫ জুন) কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান। ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৭:৫০ পূর্বাহ্ণ, জুন ৬, ২০২৩ কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লা নগরীতে আড়াই শ’ বছরের পুরনো একটি পুকুর ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে সোমবার (৫ জুন) কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পরিবেশ দিবসের কর্মসূচি চলাকালে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সেখানে হাজির হন পুকুর পাড়ের বাসিন্দা ও স্থানীয় এলাকাবাসী। শত বছরের পুরনো পুকুরটি বাঁচানোর দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, কুমিল্লা নগরীর ১৭নং ওয়ার্ডের দ্বিতীয় মুরাদপুর এলাকায় অবস্থিত ২৫০ বছরের পুরনো ‘হাতি পুকুরটি’ ভরাট করে ফেলছে একটি চক্র। স্থানীয়রা এটিকে রাজার পুকুর হিসেবেই চিনেন। প্রায় ২৫০ বছর পূর্বে রাজা বীর মাণিক্য বাহাদুর এই পুকুরটি খনন করেন। নগরীর পূর্বাঞ্চলের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ দৈনন্দিন কার্যক্রমে এই পুকুরটি ব্যবহার করেন। কিন্তু কালক্রমে এই হাতি পুকুরটি ভরাটের জন্য একটি চক্র মরিয়া হয়ে উঠে। বর্তমানে রাতের আঁধারে ওই চক্রটি পুকুরের উত্তরপূর্ব কোনের অনেক অংশ ভরাট করে ফেলেছে। পুকুরের দক্ষিণ পূর্ব কোনের বেশ কিছু অংশও ভরাট করা শুরু করেছে স্থানীয় কয়েকজন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মানববন্ধনে উপস্থিত এলাকাবাসী দাবি করেন, ঐতিহ্যবাহী এই পুকুরটি ভরাট বন্ধ করে নগরীর ৫০ হাজার মানুষের পানির অভাব পূরণে সহায়তা এবং হাতি পুকুরের ঐতিহ্য ফিরিয়ে দিতে হবে। তারা বলছেন, আশপাশে কোথাও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে এই পুকুর থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানো হয়। পুকুরটি ভরাট হয়ে গেলে নগরবাসীর বিপদ বাড়বে। উদাহরণ টেনে তারা বলেন, কয়েকদিন পূর্বে তেলিকোনা এলাকায় আগুন লেগেছিলো। নেভানোর জন্য আশপাশের কোনো পুকুর নেই। পরে হাতি পুকুর থেকে পানি নিয়ে সেই আগুন নেভানো হয়। এই পুকুরটি না থাকলে সেদিন পুরো গ্রাম পুড়ে যেতো। মানববন্ধনে উপস্থিত পুকুর পাড়ের বাসিন্দা রুমি বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আশপাশের মানুষ এই পুকুরের পানি দিয়ে ভাত রান্না করে। দৈনন্দিন কাজ করে। এখন পানি নাই। কি যে ভোগান্তিতে আছি আমরাই জানি। তিনি বলেন, আমরা পুকুর চাই। পরিবেশ দিবসে আমরা পরিবেশের মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকার চাই। পুকুর ভরাট চাই না। পুকুরের পাড়ের আরেক বাসিন্দা আঞ্জুমা বেগম বলেন, কৌশলে ঐতিহ্যবাহী এই পুকুরটি একটি অংশ ভরাট করে ফেলা হয়েছে। বাকি অংশের পানি ময়লা-আবর্জনায় ভরা। ময়লা পানিতে আমাদের ছেলে মেয়েগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ধীরে ধীরে পুকুরটি পানিশূন্য করে ফেলা হচ্ছে। আমাদের কান্না কেউ শুনে না। আমরা নিরুপায় হয়ে ডিসি অফিসে (জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে) ঢুকে পড়ছি। তাই সবাইকে অনুরোধ করছি যেন আমাদের দিকে একটু তাকায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম সাংবাদিকদের বলেন, পুকুর ভরাট বন্ধের দাবিতে ওই এলাকার মানুষজন একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। আমরা বিষয়টি দেখবো। SHARES অপরাধ/দূর্নীতি বিষয়: