মহানবী (সা.) কেমন বিছানায় ঘুমাতেন

প্রকাশিত: ৮:৫১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক : মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স:)-এর বিছানা সম্পর্কে আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহ.) লেখেন, মহানবী (সা.) কখনো ভালো বিছানায় শুতেন, কখনো চামড়ার বিছানায় শুতেন, কখনো চাটাইয়ে এবং কখনো শুধু মাটিতে শুতেন। তিনি কখনো খাটে শুতেন, কখনো কালো কম্বল বিছিয়ে শুতেন। আব্বাদ বিন তামিম (রহ.) তাঁর চাচা থেকে বর্ণনা করেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে মসজিদে চিত হয়ে পায়ের ওপর পা রেখে শুয়ে থাকতে দেখেছি। তাঁর বিছানাটি চামড়ার ছিল।

তাতে খেজুরগাছের আঁশ ভরা ছিল। তাঁর কাছে একটি পশমের কম্বল ছিল। সেটা দুই ভাঁজ করে বিছানো হতো। একবার চার ভাঁজ করে বিছানো হলে তিনি নিষেধ করে বলেন, আগের মতো দুই ভাঁজ করেই বিছিয়ে দাও।
কেননা আজ রাতে এই ব্যবস্থা আমাকে (তাহাজ্জুদ) নামাজ থেকে বিরত রেখেছে।’রাসুলুল্লাহ (সা.) বিছানায় শুয়েছেন এবং লেপ গায়ে দিয়েছেন। তাঁর খেজুরগাছের ছালবোঝাই চামড়ার বালিশ ছিল। নবীজি (সা.) একটি বালিশে হেলান দিতেন আবার কখনো মুখমণ্ডলের নিচে হাত রেখে দিতেন।

আয়েশা  (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যে বালিশে হেলান দিতেন সেটা চামড়ার ছিল। যার ভেতরে খেজুরগাছের ছাল ছিল।আয়েশা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.)-এর শয্যার বিছানা চামড়ার হতো। যার মধ্যে খেজুরগাছের ছাল ভরা থাকত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, একবার আমি নবীজি (সা.)-এর সেবায় উপস্থিত হলাম।

তিনি চাটাইয়ের ওপর শুয়ে আরাম করছিলেন। দেহ মোবারকে চাটাইয়ের দাগ ফুটে উঠল। আমি তা দেখে কাঁদতে লাগলাম। নবীজি (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, কাঁদছ কেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, রোম ও পারস্যের সম্রাটরা মখমল-রেশমের বিছানায় শুয়ে আরাম করে। আর আপনি এই চাটাইয়ে ঘুমান! রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, এটা কান্নার কোনো কারণ হলো? তাদের জন্য কেবল দুনিয়াতেই ভোগ-বিলাসের উপকরণ রাখা হয়েছে। আর আল্লাহ আমাদের পরকালে এর চেয়ে অনেক বেশি নেয়ামত দান করবেন।

 

আয়েশা (রা.) বলেন, আমাদের এক আনসারি নারী এলো। সে নবীজি (সা.)-এর বিছানায় একটি আবা (আলখেল্লা) বিছানো দেখল। ঘরে গিয়ে সেই নারী রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য একটি বিছানা বানিয়ে আনল, যা পশমে ভরা ছিল। অতঃপর তা আমার কাছে পাঠানো হলো। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার ঘরে প্রবেশ করার পর সেটি দেখলেন। তিনি জানতে চাইলেন এটা কী? আমি ঘটনা বর্ণনা করলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, এটা ফিরিয়ে দাও। আয়েশা (রা.) বলেন, বিছানাটা এতই চমৎকার ছিল যে তা ফিরিয়ে দিতে মন চাচ্ছিল না। কিন্তু রাসুল (সা.) তাকিদ দিয়ে বললেন, আল্লাহর শপথ! আমি যদি চাই আল্লাহ সোনা-রুপার পাহাড় আমার জন্য চলমান করে দেবেন। তিনি এ কথা বলার পর আমি সেটা ফিরিয়ে দিলাম। হাফসা (রা.) বলেন, তিনি খেজুরগাছের ফালে বানানো চৌকিকে আরাম করতেন। এমনকি তাঁর দেহ মোবারকে দাগ পড়ে যেত।

তথ্যসূত্র : জাদুল মাআদ, পৃষ্ঠা ৯৯; খাসায়েলে মোস্তফা, পৃষ্ঠা ৪২