ফেনীর পরশুরাম বাজারে তদারকির অভাবে গরুর মাংস বিক্রিতে অনিয়ম ।

প্রকাশিত: ১০:১১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩

শিবব্রত( বিশেষ প্রতিনিধি)
***************************************

পরশুরাম সহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংসের ওজন পরিমাপে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। নেই বাজার সঠিক তদারকির ব্যবস্থা। ফলে বাজারে মাংস বিক্রেতারা তাদের খুশিমত গরুর মাংস বিক্রি করছে।। প্রতিনিয়ত সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই অসাধু মাংস ব্যবসায়ীরা।
এ দিকে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাংসে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে ভেজাল দেয়ার প্রবণতাও। ওজনে কারচুপি, অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জবাই, বাসি মাংস বিক্রিসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে মাংস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এছাড়া বাজারের দাম নির্ধারণে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
জানা যায়, ক্রেতাসাধারণকে মাপে কম দিয়েই ক্ষান্ত থাকছে না এই মাংস ব্যবসায়ীরা। নানাভাবে প্রতারণার অভিযোগ উঠছে পরশুরাম বাজারে মাংস বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। স্হানীয়দের অভিযোগ রয়েছে, পরশুরাম বাজারে প্রশাসনের নজরদারি না থাকার কারনে মাংস বিক্রেতারা ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। মূল্য তালিকা না থাকায় এখন মাংস বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে গরুর মাংস বিক্রি করছে।
মাংস ক্রেতা লাবনী আক্তার বলেন, প্রশাসনের কোনো নজর না থাকায় মাংস ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের জিম্মি করে ইচ্ছেমতো দাম আদায় করে নিচ্ছে । গরুর মাংস প্রতি কেজি ৮শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। অনেক সময় গরুর মাংসের সঙ্গে গর্ভবতী গাভীর মাংস মিশিয়ে ক্রেতাদের ঠকানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে ওজনে কম দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ফ্রিজে রাখা কয়েকদিনের বাসি মাংস মিশিয়ে বিক্রি করারও অভিযোগ রয়েছে। আর কর্তৃপক্ষের সিল-স্বাক্ষরবিহীন মাংস বিক্রি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে বলে ও অভিযোগ করেছে ক্রেতারা।
অনুসন্ধানে জানা যায় , নির্দিষ্ট কসাইখানায় পশু চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকের তত্ত্বাবধানে পশু জবাই করে ছাড়পত্র গ্রহণ করে মাংস বিক্রির বিধান রয়েছে। কিন্তু পরশুরামের মাংস ব্যবসায়ীরা মানছেন না এই নীতি।। তারা তাদের ইচ্ছেমতো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করছেন ।
এদিকে মির্জানগর ইউনিয়নের আহসানুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা গত কাল সকালে পরশুরাম বাজারে গরুর মাংস কিনতে যান। প্রতিটি ব্যবসায়ী মাংসের প্রতি কেজি ৮শ টাকা দরে মূল্য দাবি করেন। তিনি ২ কেজি মাংস ক্রয় করেন।। মাংস মাপার ডিজিটাল পাল্লায় মাংসের ওজন দেখায় ২ কেজি। মাংস মাপার পর মাংসের চর্বি,হাড় ও কলিজা দেওয়ায় তার সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে বাজার থেকে বের হয়ে একটি দোকানে ওই মাংস আবার ওজন করেন। দেখা গেল ২ কেজি মাংসে প্রায় ২৫০গ্রাম কম।
আহসানুল ইসলাম ওই মাংসের দোকানে আবার এসে প্রতিবাদ করলে ও কোন কাজ হয়নি।
কীভাবে মাংস ওজন কম দেয়া হয়, তা সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাল্লার উপর মাংসের বাটির ওজন বাদ না দিয়েই মাংস বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
মাংস ব্যবসায়ীরা এভাবে দীর্ঘদিন ধরে ক্রেতাদের ওজনে কম দেন বলে আশপাশের একাধিক কাঁচা বাজার ও মুদির দোকানিরা জানান। অনেকেই বলেন,ডিজিটাল পাল্লার উপর মাংসের বাটির ওজন বাদ না দিয়েই মাংসের ওজন দেখানো হয় ক্রেতাদের।
এভাবে প্রতিনিয়ত সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু মাংস ব্যবসায়ীরা।
মাংস ওজনে কম দেওয়া বিষয়ে জানতে চাইল মাংস ব্যবসায়ীরা কোন জবাব দিতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে পরশুরাম বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল খালেক কন্টাক্টরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অবিলম্বে বাজার তদারকি করে বিষয়টির সুরাহা করবো ক্রেতারা যাতে প্রতারিত নাহয় সেটা নিশ্চিত সহ দায়ী মাংস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।