বহুরুপী নারী প্রতারকের এর তুলকালাম কান্ড।

প্রকাশিত: ৪:৩৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩

 

বিশেষ প্রতিনিধি:-
এক চাঞ্চল্যকর নারী প্রতারকের সন্ধান মিলেছে।কখনো ডিবি, কখনো পুলিশের ওসি, আবার কখনো সাংবাদিক, কখনো ছাত্রলীগের নেত্রী, কখনো আবার এডভোকেট পরিচয় দিয়ে থাকেন এই নারী।
মহিলা ওসি পরিচয়ধারী নওশীন রহমান লিজা প্রকাশ (লিমা আক্তার) তার কাছে রয়েছে অনেক ধরণের আইডি কার্ড।
ডিউটিরত প্রশাসনের টিমকে ওসি পরিচয় দিয়ে করে থাকেন তাতক্ষনিক অপকর্ম। ঘটিয়ে থাকেন নানান অপরাধ।
এমনই এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকালে। ঘটনাটি জানাজানি হলে সাংবাদিকরা তথ্য নেওয়া শুরু করে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জনাব, গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন,গত ১৫ আগষ্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নারায়ণগঞ্জ আগমন উপলক্ষে বাহিরে ডিউটিরত অভিযানিক কোন টিম কাজ করছে না। এমনকি ঢাকা থেকে কোন টিম কাজ করার বিষয়টি আমার নলেজে নাই।

অতএব, যারা ছিল তারা সম্পুর্নরুপে ভুয়া এবং অবৈধ।
গ্যারেজে ট্রাক মালিক রিয়াজের কাছ থেকে নগদ ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ও গলায় ৮ আনি ওজনের স্বর্নের চেইন গ্যারেজে থাকা গাড়ির স্টাফ ড্রাইভারদের কাছ থেকে ৪৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই ডিবি পরিচয়ধারী মহিলাটি।

ডিবির মহিলা ওসি পরিচয়ধারী নওশীন রহমান লিজা প্রকাশ (লিমা আক্তার) এর পকেটে থাকা 330 997 6151 নাম্বারের বাংলাদেশ পুলিশের একটি কার্ড দেখায়।

ড্রাইভার স্টাফদেরকে তার কার্ডে নারায়ণগঞ্জ ডিবি অফিসার ইনচার্জ স্পষ্ট লিখা ছিলো এমনটাই প্রমাণ দেখায় সবাইকে অতপর বলেন, আপনাদের বুঝতে আর কোন সমস্যা আছে? পাবলিক কিছুটা থমকে দাড়ায়।

তার পড়নে সর্বক্ষন নারায়ণগঞ্জ ডিবির কালারের কোর্ট পড়া ছিলো এবং মুখে বাংলাদেশ পুলিশের মাক্স লাগানো ছিলো।
সাধারণ ড্রাইভার হেলপাররা হিতাহিত জ্ঞানের অভাবে বিষয়টি আচঁ করতে পারেনি যে এরা ভুয়া ডিবি। অতপর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সাংবাদিকরা তদন্ত শুরু করেন। নওশীন রহমান লিজা প্রকাশ লিমা আক্তার এর ছবি দেখে তার প্রতারণার বিষয়গুলো একে একে সামনে আসতে থাকে। এই ব্লাকমেইলার মেয়েটি বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে থাকে তার কিছু অংশ তথ্য প্রমাণ সহ তুলে ধরা হলো।

মানবজমিন পত্রিকার দশমিনা থানা প্রতিনিধি তিনি জানান গত ১০ জুলাই দশমিনা এলাকায় বাংলাদেশ পুলিশের মাক্স পরিহিত গায়ে ডিবির জেকেট পরা এই মেয়েটি একটি ছেলের কাছে চাদা দাবী করে চাদার টাকা না দেওয়ায় নাকে মুখে ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে বিষয়টি এলাকাবাসী দেখতে পায়। তাতক্ষনিক এলাকাবাসী তাকে আটক করে এবং বিভিন্ন গনমাধ্যমকর্মীরা হাজির হয়ে যায় এলাকাবাসী বক্তব্য দিতে থাকেন যে, বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দোকানপাটে যেয়ে চাদাঁ দাবী করে থাকেন চাদাঁর টাকা না পাওয়া পর্যন্ত অশ্লীল আচরণ করতে থাকেন। সেদিন উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা জানিয়েছেন একজন মহিলা জনরোষের শিকার হচ্ছে দেখে মানবিকভাবে প্রশাসনকে খবর দিলে দশমিনা থানা পুলিশের এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাফিসা নাজ নীরা বিষয়টি জানতে পারে, অতপর তাকে ডেকে নেন তার কাছে ঐ এলাকার গন্যমাণ্য ব্যক্তিগন এই মহিলা (লিজা)র নানান অপকর্মের বিচার দিতে থাকেন তার কাছে। তিনি নগদ জরিমানাসহ ভুল স্বীকার করায় পরবর্তী কোন দিন অত্র উপজেলায় তাকে পাওয়া গেলে বা দেখা গেলে নগদ ৫০ হাজার টাকা ও শাস্তি হবে বলিয়া ঘোষনা দেন।
অতপর এলাকাবাসী মেনে নিলে এ বারের জন্য মুক্তি চেয়ে ঢাকায় চলে যায়।

এই মেয়েটির বাবা মা সোজাসাপটা ভাষায় জানিয়ে দেন, তাদের সাথে তাদের মেয়ে নওশীন রহমান (প্রকাশ) লিমা আক্তারের তেমন কথাবার্তা হয়না। এবং তাদের মেয়ে তাদের অবাধ্য হয়ে গেছে, কারো কথা শুনেনা তার স্বামী সৌদী প্রবাসী বর্তমানে বাহিরে আছেন, স্বামী চলে যাওয়ার পর মা বাবার কাছে বলে এসেছেন যে, এনএসআই তথা ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্টস এ পরিক্ষা দিয়ে উত্তির্ণ হয়েছেন এখন সে চাকুরী করছেন। প্রশাসনের বিভিন্ন লোকদের সাথে ছবি তুলে বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বার্থ আদায় করেন।
ভুয়া কার্ড বানিয়ে সাংবাদিকের পরিচয় ও দিয়ে থাকেন বিভিন্ন জায়গায় তার কাছে বিভিন্ন নামে বে-নামের কার্ড রয়েছে যার কোন অস্তিত্ব নাই এবং কয়েকটি ভুয়া কার্ড দেখায় বলে জানান মানবজমিন প্রতিনিধি এবং দশমিনা প্রতিদিনের এডিটর সাফায়েত হোসেন।
গত ৩১ জুলাই কালবেলার প্রতিনিধি নাইম এর কাছ থেকে ২৫ শত টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রমান পাওয়া যায় টাকা ফেরত চাইলে ইজ্জত হানীর মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়েছেন বলে জানান।
বিভিন্ন কল-কারখানায় যেয়ে ভুয়া পরিচয় দিয়ে হুমকি ধমকি দিয়ে টাকা নিয়ে থাকে এই লিজা নামের প্রতারক মেয়েটি।

প্রশাসনে চাকুরীরত বিভিন্ন অফিসারদের নাম ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। তার সাথে একটি টিম রয়েছে যাদের আসল নামের জায়গায় বিভিন্ন অফিসারদের নাম ব্যবহার করে থাকেন। অথচ, এই নামে যারা আছেন তারা এই মেয়েটিকে চিনেই না বলে জানান।

প্রতারণার নৈপুন্য অভিনয় করে মানুষের টাকা পয়ঁসা মালামাল লুটপাট করেছেন বলে প্রমাণ মিলতে থাকে। ঢাকা নারায়ণগঞ্জ সহ বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজির প্রমান রয়েছে কারিকারি।

স্মার্ট যুবকদের টার্গেট করে নাম্বার সংগ্রহ করে এবং পরিচয়ের প্রথমেই অবিবিবাহিত বলে থাকে সে, প্রেমের নাটক করে ব্লাক মেইলের অভিযোগ রয়েছে কারিকরি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারী কর্মকর্তা তিনি বলেন, ব্লাক মেইলের সুযোগ নিয়েছে বারবার, সফল হতে পারেনি একবারও। তার স্বামী থাকেন প্রবাসে এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে নানান অপরাধের জন্ম দিচ্ছে সমাজে।
জন পরিচিত লোকদের সাথে খাতির জমিয়ে গাড়িতে উঠে সেলফি পাশে দাড়িয়ে সেলফি তুলে ফাসানোর চেষ্টাও করে সে।
কারো কারো অফিসে বসে ছবি তুলে তার অফিস বলে থাকেন মানুষের কাছে অতপর ভুক্তভোগী মানুষ অফিসের ঠিকানায় যোগাযোগ করে হতাশ হয়ে পড়েন, তাকে ডাকলে বা খোজঁলে সন্ধান মিলানো যায় না। ক্রাইম পেট্রোল এর শাখা অফিসে বসে ছবি তুলে মানুষের কাছে বলে থাকেন সে এই অফিসে কাজ করেন। এসব করে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতানোর অভিযোগ আসতে থাকে একের পর এক। ক্রাইম পেট্রোল. নিউজের এডিটর জনাব, মিজানুর রহমান সাহেবের নিকট বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসলে তিনি জানান যে আমার প্রতিনিধি না, রিপোর্টার ও না।তাকে আবার বাদ দেওয়ার বা রাখার কি আছে?
তবে এই মহিলার এসমস্থ কান্ডে আইনি প্রতিকার চেয়ে কোর্টে প্রতারণার মামলার প্রস্তুতি চলছে। তার প্রতারণার হাত থেকে বাচতে প্রতিকারের লক্ষে সতর্ক করার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। বেশি ফোন দিলে ব্লাক লিস্টও করে দেন। এবং বিভিন্ন ভাবে ব্লাকমেইল করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছেন।
রুপগঞ্জে কর্নগোপ এলাকায় কিশোরের গ্যারেজে লুটপাটের বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
আসামীদের আইনের আওতায় আনা হবে।