সরকারি বাড়ি দখল ” সাবেক রাজউক চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা।

প্রকাশিত: ৩:৫২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪

” সরকারি বাড়ি দখল ”
সাবেক রাজউক চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মোঃ সোহল রানা (নিউজ এডিটর) :
রাজধানীর গুলশান ২ এ মিথ্যা রেকর্ডপত্র তৈরি করে সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি বিক্রি, হস্তান্তর ও নামজারির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে রাজউকের সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। মঙ্গলবার দুদক উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাত কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন খাদেম, আরেক সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এম আজিজুল হক, সাবেক সদস্য (এস্টেট) এম নুরুল হক, সাবেক পরিচালক আবদুর রহমান ভূঁঞা, সাবেক উপপরিচালক (এস্টেট) আজহারুল ইসলাম, রাজউকের সহকারী পরিচালক (নিরীক্ষা ও বাজেট) শাহ মো. সদরুল আলম ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক হাবিব উল্লাহ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সহকারী সচিব আবদুস সোবহান, সাবেক শাখা সহকারী মাহবুবুল হক এবং কক্সবাজারের রামুর বাসিন্দা মীর মোহাম্মদ হাসান ও তাঁর ভাই মীর মো. নূরুল আফছার।

২০২২ সালের ১ নভেম্বর এ-সংক্রান্ত রিটের শুনানিতে ১০ দিনের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান এবং সালাম মুর্শেদীকে হলফনামা আকারে নথি দাখিল করতে বলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির ‘খ’ তালিকাভুক্ত বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলের অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, দুদক চেয়ারম্যান, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও সালাম মুর্শেদীকে রুলের জবাব দিতে বলেছিলেন আদালত। এরপর দুদক অভিযোগটি আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করে মঙ্গলবার মামলা করে।
এছাড়াও রাজউকে ভবন ছাড়পত্র ও ভবন ভাঙার নোটিশ নিয়েও চলে ঘুষ বাণিজ্য এমন তথ্যের প্রাথমিক সত্যতাও পেয়েছে দুদক অনুসন্ধানী টিম।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। এসময় রাজউকের ইমারত পরিদর্শক ইমরান হোসেন ও অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথসহ কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক।

সোমবার ২৯ জানুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিলকিস আক্তারের নেতৃত্বে একটি টিম এই অভিযান পরিচালনা করেন। টিমের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম এবং এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর।
এ বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিলকিস আক্তার বলেন, রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নকশা বহির্ভূত বিভিন্ন ভবন নির্মাণে ঘুষ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অনিয়মের অভিযোগে এই অভিযান পরিচালনা করি। এ সময় অভিযোগের বিষয়ে অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। প্রাপ্ত তথ্য, রেকর্ডপত্র ও গৃহীত বক্তব্য পর্যালোচনা করে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

দুদকের অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, অভিযান পরিচালনাকালে রাজউকের প্রশাসন বিভাগের পরিচালকের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আরও কিছু রেকর্ডপত্র তলব করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিয়মবহির্ভূত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করে একটি সিন্ডিকেটের সদস্যরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ কারণে ঢাকার কিছু এলাকা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এছাড়া নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে ভবনের ছাড়পত্র ও নকশা পাইয়ে দিয়েও তারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। নকশা পাইয়ে দিতে, ঘুষ লেনদেন ও কাগজপত্র জালিয়াতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাজউক জোন ৬/১ এর প্রধান ইমারত পরিদর্শক ইমরান হোসেন। এছাড়া একই সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথের কয়েকজন কর্মচারীর ওই অভিযোগ রয়েছে।
তথ্য উপাথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হলেই অনুসন্ধানী টিম কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেন জমা দেবে। (পর্ব ০১)
চলবে…..