কুৃমিল্লায় তৃতীয় লিঙ্গরা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ডিএনসি ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা ও ভাংচুর : মাদক উদ্ধার ও মামলা

প্রকাশিত: ৩:০০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০২৪

 

এটিএম মাজহারুল ইসলাম,
ক্রাইম রিপোর্টার, কুমিল্লা।

কুমিল্লায় মাদক চোরাচালান চাঁদাবাজিসহ গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পরছে তৃতীয় লিঙ্গের একটি অংশ।
মঙ্গলবার (২এপ্রিল) দুপুরে জেলার ঝাগুরজুলি এলাকায় কতিপয় হিজড়াদের নিয়ন্ত্রিত একটি মাদকের স্পষ্টে টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কুমিল্লা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসান বলেন, সদর উপজেলার ঝাগুড়জুলি মহাসড়কের পাশে চক্ষু হাসপাতাল সংলগ্ন একটি বাড়িতে বাইরে সিসি বসিয়ে মাদক বেচাকেনার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল চৌধুরীর নেতৃত্বে ডিএনসি কুমিল্লা সহ জেলা পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে মাদক বিরোধী বিশেষ টাস্কফোর্স অভিযানকালে আভিযানিক দলের সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা করে মাদক উক্ত স্পটটি পরিচালনাকারী তৃতীয় লিঙ্গের বেশ কয়েকজন। অভিযানে বাড়িটির একটি কক্ষ থেকে দুই কেজি গাঁজা ও নগদ ৬৬হাজার ৬শত টাকা উদ্ধার সহ এক যুবককে আটক করতেই তৃতীয় লিঙ্গের বেশ কয়েকজন অতর্কিত হামলা করে যুবককে ছিনিয়ে নেয়। এসময় তারা এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ সহ মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সামনেই পুলিশ ও ডিএনসির ভ্যানে ভাংচুর চালায়। গাড়ির কাচ ভাংচুর করা সহ পুলিশ ও ডিএনসির সদস্যদের ওপরও হামলা করে তারা। এতে এক পুলিশ সদস্য (গাড়ি চালক) ও ডিএনসি সদস্যদের একজন সামান্য আহত হয়েছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের কয়েকটি টিম ও অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। মুল মাদক কারবারি একজন তৃতীয় লিঙ্গের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও উল্লিখিত মাদক ও মাদক বিক্রির টাকা উদ্ধার ও জব্দ করা হয়েছে।
এবিষয়ে ডিএনসি কুমিল্লা বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একজনকে পলাতক আসামি করে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চৌধুরী ইমরুল হাসান আরো বলেন, যেই হোক না কেন অবৈধ মাদকের বিষয়ে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।
এদিকে সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় এলাকাবাসী সহ আশপাশের বিভিন্ন জনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, পর্যটন এলাকা পরিবহন, বিয়ে বাড়ি, বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, চোরাচালান ও অস্ত্র বেচাকেনার মত গুরুতর অপরাধের সাথে জড়িত তৃতীয় লিঙ্গের একটি অংশ। নগরীর বিভিন্ন মার্কেট, পর্যটন এলাকা কোটবাড়ি বিশ্বরোড, পদুয়ার বাজার, ঝাগুরজুলি, আলেখারচর সহ বিভিন্ন এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডসহ মাদক কারবার করছে তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঝাগুরজুলি এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, “প্রতিবাদ করা তো দুরে থাক কোন কথাই বলা যায় না এদের, সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে সম্মান ও সম্ভ্রমহানী সহ শারিরীক নির্যাতন ও হামলা করে এরা। প্রশাসনও এদের বিষয়ে নিরব। প্রশাসনের নীরবতাকে কাজে লাগিয়ে সীমান্তে চোরাচালান ও মাদক কারবারি হয়ে উঠছে তারা। বাড়িতে ভাড়া নেয়ার পর থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে এ এলাকায়। খোলামেলা মাদক বেচাকেনা করছে তারা।” তৃতীয় লিঙ্গের এসব অপকর্মের এবিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী স্থানীয়দের।

কোতোয়ালি মডেল থানাধীন নাজিরা বাজার (ক্যাটনমেন্ট ফাঁড়ি পুলিশের নবাগত আইসি ইন্সপেক্টর রেজাউল বলেন, “ঝাগুরজুলি এলাকায় জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করে। সেখানে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ম্যাজিস্ট্রেটও উপস্থত ছিলেন। অভিযানিক দলের সদস্যদের ওপর হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক এসআই ইকবাল সহ ফাঁড়ি পুলিশের সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। মাত্র যোগদান করেছি, অভিযোগগুলোর বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”