ড্রাইভার হেলপার ঘুম গাড়ি আটক করে চাদাঁ দাবী যুবলীগ নেতার

প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০২৪

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ৪ এপ্রিল রাত এগারো ঘটিকায় জহির স্টীল কোনাপাড়া, ডেমরা, ঢাকা, থেকে ঢাকা মেট্রো ট-২০-৯৯৮০ গাড়িটি ১৩৯৯০ কেজি ৮ মিলি রড( মুনতাহা স্টিল নামীয়) বোঝাই করে ড্রাইভার সাইফুল ইসলাম ও রিয়াদুল চাদপুর ফরিদগঞ্জ আইলের রাস্তা পাটোওয়ারী ট্রেডার্সের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে পিছনের ডান পাশের বাহিরের চাকা নষ্ট হয়ে যায়। স্পেয়ার চাকা লাগিয়ে নষ্ট চাকাটি ড্রাইভার সাইফুল দোকানে বিক্রি করে দেয়।

অতপর: ফরিদগঞ্জ পাটোওয়ারী ট্রেডার্সে এসে রাস্তায় বিলম্ব হওয়ার কারণ দর্শায়। শামিম পাটোওয়ারী বলেন গাড়ি স্কেল করবে, ড্রাইভার সাইফুল তাহার কথা মত রাজি হইয়া হরিনা ফেরীঘাট সংলগ্ন বিআইডব্লিউটিএর স্কেলে গাড়ি ওজন করে।

ওজনে ৩৪০ কেজি কম হওয়ায় ড্রাইভার হেলপারকে আটক করেন পাটোওয়ারী ট্রেডার্স এর মালিকেরা।ড্রাইভার সাইফুল ও রিয়াদুল বারবার বলতে থাকেন আমরা চুরি করি নাই, আমরা চোর না। একটা চাকার ওজন সাধারণত ৬০ কেজি হয়ে থাকে, ৭০থেকে ৮০ লিটার তেল খরচ হয়েছে, এবং এক স্কেল থেকে অন্য স্কেলে কিছু কম বেশি হয়।

এসব কথা তারা না শুনিয়া তাদেরকে হুমকি ধমকি দিতে থাকে, একপর্যায়ে বিষয়টি গাড়ির মালিক আলামিনকে ফোন করে জানায়, আলামিন উত্তরে জানায় তোমরা থাক আমি আসতেছি, ৫ তারিখ রাত ৯ ঘটিকার পর থেকে ড্রাইভার হেলপারের মোবাইল বন্ধ এখন পর্যন্ত কোন সন্ধান পাওয়া যায় নি।

তারপর পাটোওয়ারী ট্রেডার্স এর মালিকের নাম্বার সংগ্রহ করে সাজু এন্টারপ্রাইজ এর দালাল সফিকের কাছ থেকে মুটোফোনে কথা হয়।

গাড়ির মালিক আলামিন জানায়, আমি আতিকুল্লাহ পাটোওয়ারীকে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাই এবং আমার ড্রাইভার হেলপারের সন্ধান চাই।
তারা জানান ড্রাইভার হেলপার গাড়ি রেখে পালিয়েছে, এবং গাড়িতে থাকা রড ২৯৫২ কেজি ৩০০ গ্রাম রড কম রয়েছে।

আমি হতবিহ্বল হয়ে পড়ি, ড্রাইভার হেলপারের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা চালাইতে থাকি।
এরই মধ্যে শামিম পাটোওয়ারী ও আতিকুল্লাহ পাটোওয়ারী ৩১১০ কেজি রডের দাম পরিশোধ করে গাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। এদিকে আরেক দালাল হোসেন মিয়া ফোন কলে বলেন, ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে মিমাংসা করে আসেন, নতুবা আপনার গাড়িসহ আপনাকে ইটভাটার চুল্লিতে পুড়িয়ে মারবো এই বলিয়া প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।

একপর্যায়ে ড্রাইভার হেলপারের কোথাও কোন সন্ধান না পাইয়া, ৮ এপ্রিল পাটোয়ারী ট্রেডার্সে এসে উপস্থিত হই। তাদের কাছে বর্তমান পরিস্থিতি কাকুতি মিনতি করে জানাই, তাহারা কোন কথা না শুনিয়া আমাকে টাকা না দিলে হুমকি ধমকি দিয়ে বিদায় করে দেয়।

৯ এপ্রিল বিকালে ফরিদগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর আনোয়ার ফোন করে জানায়, আপনার গাড়ি থানায় আছে আপনারা থানায় এসে যোগাযোগ করেন।
সাব ইন্সপেক্টর আনোয়ার উভয় পক্ষ কে মিমাংসার প্রস্তাব দিলে যুবলীগ পরিচয়ধারী কিছু বখাটে এসে হুমকি ধমকি দিয়ে বলেন, ৩ লক্ষ টাকার ৩ পয়সা কম দিলে আমরা গাড়ি বিক্রি করে দিবো।

এহেন পরিস্থিতিতে তাদের দাবীকৃত ৩ লক্ষ টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকা নগদ দিতে চাপ দিতে থাকেন।
গাড়ীর মালিক আলামিন জানায়, আমার ড্রাইভার হেলপারকে মারধর করে বিদায় করে দিয়েছে, আমি এখনো তাদের কোন সন্ধাবন পাইনি, ৫ তারিখ রাতে শামিম পাটোওয়ারী যখন নিজ মুখে স্বীকার করছিলেন, হরিনাঘাট স্কেলে ওজন মেপে ৩৪০ কেজি রড কম হয়েছে এখন আমি কি করব অপর প্রান্ত থেকে বলা হয় ড্রাইভার হেলপারকে বেধে রাখেন ওদের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা দাবী করেন, ওরা দিতে বাধ্য।
অপর প্রান্তের অজ্ঞাত লোকের কথামত তারা টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে।

সরকারী স্কেলে নিজেরা ওজন করেছে, ৩৪০ কেজি কম হয়েছে আমাকে জানানোর পরদিন সকাল থেকে নানান টালবাহানা করে যাচ্ছে।
একপর্যায়ে থানা পুলিশের কাছে তাদের মিথ্যা প্রমানাদি দিয়ে আমাকে হয়রানী করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আমি এর সঠিক তদন্ত করে দালাল সিন্ডিকেরের বিচার চাই।
ট্রান্সপোর্ট এর মালিক ও দালালরা বিভিন্ন সময় রডের বান্ডিল কম দিয়ে বেশি লিখে দেয়, এবং বলে বেশি দিয়েছি কম লিখেছি।

এই কাজটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত এমন প্রশ্নের জবাবে বিশিষ্ট কলামিস্ট আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিছু অসাধু সিন্ডিকেট গাড়ীর মালিককে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা দাবী করার ঘটনা ইতিপুর্বেও ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, মহা সড়কে রড চুরি হওয়ার ঘটনার সাথে ড্রাইভার হেলপাররা জড়িত থাকার প্রমান মিলেছে অপরাধীরাও আইনের আওতায় এসেছে।
আর এসব রড ব্যবসার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দূর্ণীতি হয়ে থাকে, সরকারের রাজস্ব ফাকি দিয়ে এসব সিন্ডিকেট রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে।
উদর পিন্ডি ভুদুর ঘাড়ে চাপিয়ে যারা চাদাঁবাজী করে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবী সচেতন মহলের।

মুঠোফোনে দালাল, হোসেন মিয়া, ও সফিককে একাধিক কল করলে তারা কল রিসিভ করে নি।
শামিম পাটোওয়ারী বলেন, অল্লাহি আমি যুবলীগ করি কখনো মিথ্যা বলি না, এগুলা আমার কাচাঁ টাকা দিয়ে যেতে হবে।

আমরা ট্রান্সপোর্টের নির্দেশনায় সব করেছি, আমরা তাদের কাছে নগদ টাকা আগে পরিশোধ করে পরে রড পাই। আমরা তাদেরকে টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি এখন আমাদের রড কম আমরা কি করবো। আমাদের টাকা আদায়ের স্বার্থে এই কাজ করেছি।

ফরিদগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর (উপপরিদর্শক) আনোয়ার হোসেন বলেন, এমন একটি অভিযোগ আমার হাতে এসেছে, সঠিক তদন্ত করে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।