ঢাকার মিরপুরের পল্লবীতে পাপ্পুর নিয়ন্ত্রনে জমজমাট মাদক ব্যাবসা

প্রকাশিত: ১১:৫৪ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিনিধি :

রাজধানীর পল্লবী থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হারে মাদক ব্যবসা বেড়ে গেছে। এই মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রশাসনে কর্মকর্তা , দলীয় নেতাকর্মীরা ও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এই মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মারামারি ও খুনের ঘটনাও ঘটে । মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পুলিশের সহযোগিতায় পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পাপ্পু ওরফে কুত্তা পাপ্পু তার নিয়ন্ত্রণে এক ডজন মাদক ব্যবসায়ী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কাছ থেকে মাসোহারা হিসাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পাপ্পু।

পাপ্পুকে সহযোগিতা করছে পল্লবী থানার বিট ইনচার্জ উপ পরিদর্শক (এসআই) আতিকুল ইসলাম। তার বিনিময়ে পাপ্পুর কাছ থেকে মাসে এক লাখ টাকা করে নেয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগে জানা গেছে । পাপ্পুর পরিবারে সদস্য বোন বুল্লি, ভাগ্নে বিকি ও আত্মীয় আব্দুল করিম এরা সবাই ওই এলাকায় মাদক ব্যবসা করছে। ইতিমধ্যে পাপ্পুর বোন বুল্লি হেরোইন সহ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে । বর্তমানে কারাগারে আছে । মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পাপ্পুর নিয়ন্ত্রণে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে সনি আক্তার, বিজলী ও তার স্বামী কাল্লু, আফসার, নাদিম , সামীর ও মুরাদ সহ আরো অনেকেই। তাদের সবার বিরুদ্ধে পল্লবী থানা সহ রাজধানী বিভিন্ন থানায় মাদক মামলা সহ অন্যান্য মামলা রয়েছে। এইসব মাদক ব্যবসায়ীরা ছোট ছোট শিশুদেরকে ব্যবহার করে তাদের মাদক ব্যবসা জমজমাট ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। ওইসব মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পাপ্পু ওরফে কুত্তা পাপ্পু । স্থানীয় ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন জানান, তার কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই কি করে এত টাকার মালিক হলেন, সবার কাছে জানতে পারি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে রাতারাতি অর্ধশতাধিক কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তাই এখন এলাকার কাউকে পাত্তা দেয় না সব সময় পুলিশের সহযোগিতায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ।

এদিকে একই এলাকার পৃথিবী আক্তার নামে এক অভিযোগ করে বলেন, গত ৩১ মে শুক্রবার বিকেলের দিকে পাপ্পু তাকে ডেকে নিয়ে যায়। পৃথিবী কে বলে তুমি মাদক ব্যবসা কর এবং প্রতি সপ্তাহে আমাকে ২০ হাজার টাকা করে দিব,এবং আমার সঙ্গে মাঝে মাঝে আবাসিক হোটেলে থাকবি। পাপ্পুর এইসব প্রস্তাবে রাজি না হয়ে পৃথিবী বাসায় চলে আসে। তারপরও পাপ্পুর লোকজন দিয়ে একের পর এক ওইসব প্রস্তাব দিতে থাকে। তখন পৃথিবী পাপ্পুকে বলে আমি তোর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব। ভুক্তভোগী পৃথিবী আরো বলেন, গত সাতই জুন রাতে পল্লবী থানার ৫ নাম্বার বিট ইনচার্জ এস আই আতিকুল ইসলামের সহযোগিতায় মাদক ব্যবসায়ী পাপ্পুর নেতৃত্বে ২০-২৫ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ে বাসায় হামলা করে। হামলা করে বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর ও সাত ভরি স্বর্ণালংকার নগদ ৩ লাখ টাকা সহ অন্যান্য মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, আতিকুল ইসলাম সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে দাঁড়িয়ে থাকেন। আমরা যদি প্রশাসনের লোকজনের কাছে সহযোগিতা না পাই তাহলে কি মাদক ব্যবসায়ীরাই তাদের সহযোগিতা পাবে । পৃথিবী আরো অভিযোগ করে বলেন, এ হামলার ঘটনা পরিপ্রেক্ষিতে আমি পল্লবী থানার মামলা করতে গেলে আমার মামলা নেয়নি পুলিশ, এমনকি এস আই আতিকুল ইসলাম আমাকে হুমকি দেয় তুই যদি মামলা করতে আবার আসোস তোকে হেরোইন দিয়ে চালান করে দেব কাশিমপুরে ।

কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য পুরোপুরি পুলিশ বাহিনী দুর্নাম হচ্ছে। এ ব্যাপারে পল্লবী থানার ৫ নাম্বার বিটের ইনচার্জ এস আই আতিকুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি পাপ্পু কে চিনি কিন্তু পৃথিবী কে চিনি না। পৃথিবীর বাসায় ভাঙচুর হওয়ার ঘটনা আমি কিছু জানি না। আপনারা সরোজমিনে এসে তদন্ত করুন যা পাবেন তাই লিখবেন । পৃথিবী বলেন, যতদিন পাপ্পু প্রশাসনের মাধ্যমে গ্রেপ্তার না হবে ততদিন মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় মাদক মুক্ত হবে না। এলাকাবাসীর দাবি বিশিষ্ট মাদক ব্যবসায়ী ও নিয়ন্ত্রণকারী পাপ্পু ওরফ কুত্তা পাপ্পুকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি মহোদয়ের কাছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমার আকুল আবেদন ।