পরশুরামে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে স্ট্যাম্প।

প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩

“শিবব্রত”(বিশেষ প্রতিনিধি)

পরশুরাম উপজেলা সহ উপজেলাধীন বিভিন্ন এলাকায় নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের অতিরিক্ত দামে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। যে কোনো দলিল নিবন্ধন, চুক্তিপত্র, নোটারি, হলফনামা, বন্ধক নামা, মালামাল খালাস আদেশ,শুল্ক বন্ড,শেয়ার বরাদ্দ, এফিডেভিটসহ বিভিন্ন কাজে স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হয়। এর বিনিময়ে ডিডভ্যালু বা চুক্তিমূল্যের ওপর নির্ধারিত হারে রাজস্ব আদায় করে থাকে সরকার। পরশুরাম ,বক্সমাহমুদ ও সুবার বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ১০০ টাকার স্ট্যাম্প ১৩০ টাকা, ৫০ টাকার স্ট্যাম্প ৮০ টাকা, ২০ টাকার রেভিনিউ স্ট্যাম্প বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। দাম কেন বেশি জানতে চাইলে বিক্রেতারা জানান, স্ট্যাম্পের ভেন্ডর যাদের নামে লাইসেন্স তারা এই দামে বিক্রি করতে বলেছেন তাই স্ট্যাম্পের দাম বেশি।
পরশুরাম বাজারে উপজেলা রোডে অবস্থিত
সকল কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকানে পোষ্ট অফিস রোড এবং ইসলামী ব্যাংকের নিচে ও পাশের মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে এই স্ট্যাম্প বিক্রি করতে দেখা গেছে যা স্ট্যাম্প ভেন্ডর ছাড়া বিক্রয় করা আইনের পরিপন্থী।বিলোনীয়া স্হল বন্দরের আমদানী কারক মেসার্স পি আর ট্রেডিং এর মালিক আবুল হানিফ জানান, আমাদানি পন্য ছাড়াতে এবং পন্য রপ্তানী করতে প্রতিদিন বিলোনীয়া কাস্টমস্ হাউজের বিভিন্ন কাজে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, রেভিনিউ স্ট্যাম্প পেপারের সাথে দাখিল করতে হয় কিন্তু পরশুরাম পৌরসভা এলাকাধীন স্ট্যাম্পের অনেক বেশি দাম যা ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। কৃষক হাফিজ উদ্দিন জানান বিভিন্ন সময় জমি বন্ধক নামা লিখতে স্ট্যাম্প দরকার হয়।দোকান থেকে থেকে স্ট্যাম্প কিনলে বিক্রেতারা দাম বেশি নেয় । কিন্তু কেন নির্দিষ্ট মূল্য থেকে দাম বেশি নেয় তা তার (হাফিজ উদ্দিনের) জানা নেই বলে জানান।। স্ট্যাম্প ভেন্ডর মোঃ ইউনুছ আলীর সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি এই ব্যাপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।।এদিকে বিভিন্ন স্থানে স্ট্যাম্প বিক্রি করার কোন অনুমোদন আছে কি সেটা জিজ্ঞাসা করলে বিক্রেতারা বলেন এটা আপনাকে বলতে আমরা বাধ্য নই। কিন্তু ১৮৯৯ সালের স্ট্যাম্প আইনে ৭৯টি ধারা এবং ১টি তফসিল রয়েছে। এবং দেশে প্রচালিত ৬৫ রকম দলিল প্রস্তুতের জন্য স্ট্যাম্প কিনতে হয় সাধারন জনগনের। এ ছাড়া স্ট্যাম্প কেনাবেচায় নেই কোনো তদারকি। কে বিক্রি করছে, কত বিক্রি করছে, বাজারে চাহিদা কত- এসব দেখভাল করার কোনো সংস্থাও নেই। ফলে যার যেমন খুশি তেমন করেই স্ট্যাম্প বিক্রি করছে। স্ট্যাম্প বিক্রির কঠোর আইন না থাকায় ফুলে-ফেঁপে উঠছে একটি বিশেষ সুবিধাভোগী গোষ্ঠী। জানা যায়, শুধু রেভিনিউ স্ট্যাম্প নয়, এর সঙ্গে চালান ও পে অর্ডার সংক্রান্ত কাগজপত্র এবং কোর্ট ফি’র দাম ও রাখা হচ্ছে নির্দেশিত মূল্য থেকে অনেক বেশি।। পরশুরামে লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রায় পঞ্চাশ জন ভেন্ডর আছেন। ভেন্ডররা তাদের চাহিদা অনুযায়ী চালান জমা দিয়ে ফেনী ডিসি অফিস থেকে স্ট্যাম্প সংগ্রহ করে থাকেন। সপ্তাহে বুধ ও রোববার দু’দিন টাকা জমা দেওয়া হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে ডিসি অফিসের ট্রেজারি শাখা থেকে স্ট্যাম্প সরবরাহ করা হয়। বিনিময়ে বিক্রেতা থেকে একটা নির্দিষ্ট অংকের কমিশন পান ভেন্ডররা , যা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন পরশুরাম সেটেলম্যান্ট অফিস সংশ্লিষ্ট কয়েক জন কর্মচারী।
এপ্রেক্ষিতে উক্ত ব্যপারটি তদারকি করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ করছেন স্হানীয় জনগন