ফেনীর পরশুরামে জালিয়াতি করে কোটি টাকার জমি দখলের অভিযোগ।

প্রকাশিত: ৪:২০ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০২৩

শিবব্রত(বিশেষ প্রতিনিধি)
***************************************

পরশুরাম বাজার এলাকায় কোটি টাকা মূল্যের একটি পুকুর দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রভাবশালী একটি মহল দখলদারকে সহায়তা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এলাকার সচেতন মহল পুকুরটি দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, এই পুকুরের প্রকৃত মালিক ছিলেন পরশুরাম উপজেলার বাউরপাথর গ্রামের জমিদার ও দানবীর ভক্ত মজূমদার। এই এলাকায় তার প্রায় দুইশত একর জমি রয়েছে। ফলে তার জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও ছিল বিস্তর।আদালতে একাধিক মামলা ও চলমান ছিল। ভক্ত মজুমদার ছাড়া তার পরিবারের অন্য সদস্যরা ছিলেন ভারতের নাগরিক, তাই তারা ভারতে থাকতেন। ১৯৯১ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি মামলা সংক্রান্ত কাজে ফেনী আদালতে যাওয়ার সময় হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে যান ।তিনি কোথায় আছেন বা বেঁচে আছেন কিনা আজ পর্যন্ত জানা যায়নি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ বিভিন্ন সংস্থা ও খোঁজ করে বের করতে পারেনি। তবে একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ হয়তো ওই ভক্ত মজূমদার কে অপহরণ করে হত্যা করছে ।।ওই সময়ে ভারতে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছেন তিনি(ভক্ত মজূমদার) ভারতেও যাননি।ফলে তার সব সম্পত্তি সরকার কর্তৃক শত্রু সম্পত্তি ঘোষণা করা হলেও অধিকাংশ জমিই অনেকেই জবরদখল সহ ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে দিব্যি মালিকানা জাহির করে আসছে। অনেকে ভুয়া কাগজপত্র তথাঅবৈধ
দলিল মুলে অবৈধ ভাবে ওইসব জমি খারিজ শেষে নিয়মিত খাজনা ও পরিশোধ করে আসছেন।
এদিকে ভক্ত মজূমদারের মালিকানাধীন পরশুরাম বাজারে অবস্থিত পুকুরটির মালিকানা পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরশুরাম বাজারের কিছু স্হানীয় ব্যবসায়ী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, ব্যবসায়ী মনির চৌধুরী,সাহাব উদ্দিন, হাজী কবির হোসেন.এবং ১নং মির্জানগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অনুমিয়া গংএই পুকুরটির মালিকানা পেতে মালিক পক্ষ (ভক্ত মজূমদার)থেকে সাব-কবলায় জমি ক্রয় করেছেন মর্মে ভুয়া দলিল দেখিয়ে যার যার সীমানা অনুযায়ী অবৈধ ভাবে দখল করে রেখেছেন।
অন্য এক সুত্র জানায়, পুকুরটি সরকার কর্তৃক অনেক আগেই খাস ঘোষণা করা হয়েছে। ভক্ত মজূমদারের ভাইয়ের এক ছেলে কুমিল্লাতে থাকেন।তাকে মালিক দেখিয়ে টাকার বিনিময়ে তার থেকে সাব-কবলা নিয়ে ওই দলিল মূলে একটি মহল পুকুরটির মালিকানা দাবী করে আসছে।এই ব্যাপারে আদালতে মামলা ও চলমান রয়েছে। যারা পুকুরটির মালিকানা দাবী করছেন তারা আদালতের নির্দেশে অনুযায়ী কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি বিধায় আদালতে মামলাটি খারিজ হয়ে গেলে ওই মালিক দাবিদার মহল আবার উচ্চ আদালতে আপিল করছে। এই ব্যাপারে দখলদারদের কাছে জানতে চাইলে,তারা এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুকুরটি দীর্ঘদিন পরিচর্যার অভাবে প্রায় ভরাট হয়ে গেছে।যারা পুকুরটির মালিকানা দাবি করছেন তারা তাদের অংশে পাকা ও টিনের ঘর তুলে দখল বজায় রেখেছেন।
এব্যপারে পরশুরাম ভুমি অফিস সুত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে ভক্ত মজুমদারের জমি গুলো নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। আবার অনেক জমির মালিকানা নিয়ে আদলতে মামলা ও রয়েছে।যদি কেউ উপযুক্ত প্রমানাদি দিতে পারে তাহলে অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে ।
এদিকে রাস্তার পাশে যে অংশটি আছে তাতে স্তূপ করে দীর্ঘদিন রাখা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। মুল রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে সারি সারি টমটম, সিএনজি ও অটোরিকশা।এতে সাধারণ পথচারীদের পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।
অন্যদিকে স্হানীয়রা এখানে একটি সিএনজি স্টেশন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।তারা জানান,যেহেতু পুকুরটি সরকার কর্তৃক খাস ঘোষণা করা হয়েছে এবং পুকুরটিও প্রায় ভরাট হয়ে গেছে তাই এখানে একটি সিএনজি স্টেশন করলে বিশেষ করে কালীবাজার,সাহেব নগর ,বটতলী, কালিকাপুর এবং জঙ্গলঘোনার যাত্রীদের জন্য সুবিধা হবে ফলে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডের অভাবে টমটম, সিএনজি সহ অন্যান্য যানবাহন গুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে রেখে যানজটের সৃষ্টি হবে না,ফলে সাধারণ পথচারীদের ও দূর্ভোগ কমবে বলে ও মনে করেন তারা।