শনিবার (০৩জুন)দুপুর ১২টায় দেশে আড়াই হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিংঃ বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি)।

প্রকাশিত: ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ, জুন ৪, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি : প্রচণ্ড গরমে বাড়তি চাহিদার মধ্যে, গ্যাস ও কয়লা সংকটের কারণে, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন কমে গেছে। ফলে, বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১২টায় দেশে আড়াই হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়েছে। যদিও, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় চাহিদা ছিলো তুলনামূলকভাবে কম।

বিপিডিবি’র প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ঘাটতি ছিলো ২ হাজার ৩৫৩ মেগাওয়াট। এর কারণ, বিপিডিবির সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিলো ১১ হাজার ৬৪৭ মেগাওয়াট।

বিপিডিবি’র একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, “সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ ঘাটতি বাড়ে। তখন গড়ে চাহিদা দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। আর, এই গরমে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করতে পারে।”

তিনি এই সংকটের জন্য গ্যাস ও কয়লা সরবরাহের ঘাটতি এবং জেনারেশন ইউনিট-এ পানির স্তর কমে যাওয়াকে দায়ী করেন। বলেন, “এসব কারণে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। এছাড়া, রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য কারণে আরো ২ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেশন ইউনিট বন্ধ রয়েছে।”

ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই অথরিটি (ডেসকো)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আমীর আলী বলেন, তার এলাকায় ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটের চাহিদা পূরণের জন্য দিনের সর্বোচ্চ সময়ে ২০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।

ডেসকো এলাকার ভোক্তাদের অভিযোগ, দিনভর তারা বার বার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। রামপুরা এলাকায় বসবাসকারী এক ডেসকো গ্রাহক জানান, “আমাদের এলাকায় ভোর থেকে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে।”

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, তার এলাকায় দিনে প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত ঘাটতি রয়েছে। তিনি বলেছেন, “ডিপিডিসি এলাকায় ১ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের ৪০০ মেগাওয়াটের লোডশেডিং করতে হয়।”

রাজধানীর বাইরের ভোক্তাদের অভিযোগ, তাদের চরম লোডশেডিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে।

মাসুদুল হক সম্প্রতি ময়মনসিংহে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী লোকেরা দিনে ৩ থেকে ৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। অন্যান্য গ্রামীণ এলাকা থেকেও একই ধরনের অভিযোগ আসছে।

এদিকে, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) জানিয়েছে, ঢাকাসহ সারাদেশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে আরো কয়েক দিন। শনিবার (৩ জুন) বিএমডি নিয়মিত পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, বাংলাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

এদিকে রাজশাহী, দিনাজপুর, নীলফামারী, যশোরসহ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, চুয়াডাঙ্গায় ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বাকি অংশ এবং ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।