জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন।

প্রকাশিত: ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি : রবিবার (২৭ আগস্ট) যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী। তার ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এসব অনুষ্ঠানে কবির জীবন ও কর্মকে স্মরণ করা হয়।

বিদ্রোহী কবি হিসেবে খ্যাত কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলা সাহিত্যের একজন পথপ্রদর্শক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রবিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলা ভবন প্রাঙ্গণে অপরাজেয় বাংলায় জড়ো হন। সেখান থেকে তারা শোভাযাত্রা সহকারে কবির কবর জিয়ারত, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করেন। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের পক্ষ থেকে কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে, দলটির একটি প্রতিনিধি দল বিদ্রোহী কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট ধানমন্ডিতে বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন রেডিও স্টেশন এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জাতীয় কবির জীবন ও কর্মের স্মরণে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে।

কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে তার বিপ্লবী সাহিত্যকর্মের জন্য ব্যাপকভাবে সম্মানিত। কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২১ বছরের সাহিত্যিক জীবনে কবি নজরুল ২ হাজার ৬০০টি গান, ৬০০টি কবিতা, ৩টি বই এবং ৪৩টি প্রবন্ধ সৃষ্টি করেছেন।

স্বাধীনতা, মানবতা, প্রেম ও বিপ্লব নজরুলের অসাধারণ সাহিত্যে বার বার এসেছে। তিনি মৌলবাদ ও সব ধরনের বর্ণ, লিঙ্গ ও ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ছিলেন।

বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমন্ত্রণে নজরুলের পরিবার বাংলাদেশে চলে আসেন এবং ১৯৭২ সালে ঢাকায় স্থায়ী হন। একই বছর বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘জাতীয় কবি’ খেতাবে ভূষিত করেন। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে তার অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডিলিট এবং ১৯৭৬ সালে একুশে পদক লাভ করেন।

১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট বিদ্রোহী কবি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।