প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে আহত

প্রকাশিত: ৮:২৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২৩

লক্ষ্মীপুরে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কলেজে যাওয়ার পথে সুবর্ণা মুনতাহা রিজমি নামের এক ছাত্রীকে কুপিয়ে ও ইট মেরে আহত করা হয়েছে। দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের ছাত্র তানজীদ আহমেদ রিহান তার বখাটে বন্ধুদের নিয়ে এ ঘটনা ঘটান।

আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ রোডের সামাদ স্কুল দিঘী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত রিহান দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালুহাজী সড়কের প্রবাসী শামীমের ছেলে।

তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের পোশাক পরে প্রতারণার মাধ্যমে ক্লাস করতেন বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

আহত রিজমী লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ও সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের তালহাটি গ্রামের প্রবাসী মুরাদ হোসেনের মেয়ে।

কলেজছাত্রী রিজমি ও তার মা সুমি ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, সাত মাস ধরে কলেজে আসা-যাওয়ার পথে রিজমিকে রিহান উত্ত্যক্ত করতেন। এর মধ্যে রিহান তাকে প্রেমের প্রস্তাবও দেন।

কিন্তু রিজমি তার প্রস্তাবে রাজি হননি। এক পর্যায়ে রিজমি তার পরিবারকে ঘটনাটি জানান। এ নিয়ে রিহানকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য পরিবারের কাছেও বিচার দেন রিজমির মা। তখন রিহানের মা জানান, রিহান আর কখনো রিজমিকে উত্ত্যক্ত করবেন না।

কিন্তু এর পরও রিহান তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করতেন।

রিজমির মামা রাসেল ভূঁইয়া বলেন, ‘ঘটনার সময় ক্লাসের উদ্দেশে রিজমি বাড়ি থেকে কলেজে রওনা হয়। গাড়ি থেকে নেমে সামাদ স্কুল মোড় থেকে সে হেঁটেই কলেজ যাচ্ছিল। পথিমধ্যে পেছন থেকে রিহান ইট মারে রিজমির মাথায়।

এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথার সামনের অংশেও আঘাত করে। তখন তার সঙ্গে আরো ১০-১২ জন ছিল।’

রিজমির মা সুমি ভূঁইয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘রিহান ও তার বন্ধুরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। কে বা কারা আমার মেয়েকে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে এনে ফেলে রেখে গেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক সরকারি কলেজের দুজন ছাত্রী জানান, রিহান তাদের সঙ্গেই ক্লাস করতেন। দালাল বাজার কলেজ থেকে ট্রান্সফার হয়ে সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছেন বলে রিহান সবাইকে জানিয়েছেন। রিহান আর রিজমিকে একই সঙ্গে দেখা যেত। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না তা নিশ্চিত নন তারা।

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুবুল করিম বলেন, ‘ছেলেটি আমাদের কলেজে ক্লাস করত কি না তা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। ক্লাসের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ঘটনাটি কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটেছে। পরে ঘটনাটি জেনেছি। রিহান আমাদের ছাত্র না। রিজমিকে দেখতে হাসপাতালে আমাদের কয়েকজন শিক্ষককে পাঠিয়েছি।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।