ফেনীর “পরশুরাম রিসোর্স সেন্টার” ইন্সট্রাকটর অফিসে উপস্থিত না হয়েও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর।

প্রকাশিত: ১১:২০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২৩

**************************************
শিবব্রত চক্রবর্ত্তী (বিশেষ প্রতিনিধি)
*************************************

ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাকটর মাহাবুব ।তিনি থাকেন কুমিল্লায়। তার জন্য উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের অফিসে থাকার জন্য আবাসিক ব্যবস্থার বরাদ্ধ থাকলে ও তিনি সেখানে থাকেন না। তিনি অফিসে ঠিক মত উপস্থিত থাকেন না অথচ প্রতি মাসের বেতন ভাতা ঠিকই উত্তোলন করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত তিন সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন রিসোর্স সেন্টারে বিভিন্ন সময়ে গিয়ে দেখা গেছে অফিসে তালাবদ্ধ। এব্যাপারে ইন্সট্রাকটর মাহাবুবের মোবাইল ফোনে ফোন করে তিনি কোথায় আছেন জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন এই ব্যাপারে তথ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নেয়া হয়েছে কিনা?এটাতো অফিসের কোন গুরুত্বপূর্ণ রের্কড দেখার বিষয় নয় যে অনুমতি নিতে হবে ।এই জবাবের প্রেক্ষিতে.ইন্সট্রাকটর মাহাবুব বলেন তিনি কোথায় আছেন এটা বলতে বাধ্য নন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ওই অফিস সুত্র জানায়, শুনেছি পরশুরাম উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাকটর মাহাবুব ঠিকমত অফিস করেন না। তাকে বারবার সতর্ক করা হয়েছে। তার পরও তিনি অফিসে আসেন না আমরা কি করব বলুন। বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায় ইন্সট্রাকটর মাহাবুব অফিসে দিনের পর দিন হাজির না হয়ে একদিন এসে হাজিরা খাতায় সব স্বাক্ষর একবারে করে ফেলেন ।এই জিজ্ঞাসার জবাবে ওই সুত্র বলে এটা উনিই ( পরশুরাম উপজেলা রিসোর্স ইন্সট্রাকটর ) ভাল বলতে পারবেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা রিসোর্স ইন্সট্রাকটর মাহাবুব দীর্ঘদিন ধরে এভাবে অফিস না করে দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকেন। মাসে একবার এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। এভাবে গোঁজামিল দিয়ে তিনি অফিস করেন আর বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ইন্সট্রাকটর মাহাবুবের জন্য একটি মোটর সাইকেল বরাদ্দ আছে।তিনি ওই মোটরসাইকেল টি কুমিল্লায় নিয়ে তার ছেলেকে দিয়েছেন। এব্যাপারে জানতে চাইলে ইন্সট্রাকটর মাহাবুব জানান,এই মোটরসাইকেল টি চুরি হয়ে গেলে তার দায় কে নিবে? কিন্তু এটা তো আপনার এখানে অফিস কাজের জন্য দেয়া হয়েছে এবং এই অফিসে আপনার জন্য সুরক্ষিত আবাসিক ব্যবস্হা আছে, তাহলে চুরি হবে কেন,এই প্রশ্নের ও জবাব দিতে তিনি বাধ্য নন বলে জানান।
এ ব্যাপারে সদ্যবিদায়ী পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শমসাদ বেগম বলেন,আমি পরশুরাম থেকে চলে এসেছি , তারপর ও বলছি পরশুরাম রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাকটর মাহাবুব অফিসে ঠিকমত থাকেন না। তাকে আমার অফিসে ডেকে বার বার সতর্ক করেছিলাম। তিনি জানান যখন ই অফিসে খোঁজ নিতাম তখনই অফিস সহায়ক মনির হোসেন নামে একজন কে পাওয়া যেত। ইন্সট্রাকটর কোথায় জানতে চাইলে ওই মনির হোসেন বলতেন ইন্সট্রাকটর স্যার স্কুল ভিজিটে গেছেন। নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন,আসলে ওই ইন্সট্রাকটর মাহাবুব অফিসেই আসতেন না।

অন্য এক অনুসন্ধানে জানা যায়, ইন্সট্রাকটর পরশুরামে আসার আগে রামগড়ে ছিলেন। রামগড প্রেসক্লাব সুত্র জানায় ইন্সট্রাকটর মাহাবুব একজন.করাপ্টেড লোক। রামগড়ে ও তিনি বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়জন প্রাথমিক শিক্ষক জানান,তিনি অফিস তো করেনইনা হঠাৎ করে কোন দিন পরশুরামে এসে তিনি যে স্কুল ভিজিটে যাবেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন করে বলেন গাড়ী পাঠিয়ে তাকে নিয়ে যেতে। ভিজিট শেষে তাকে দুপুরের খাবার খাইয়ে তার দাবীকৃত টাকা দিয়ে আবার গাড়ী করে তাকে পরশুরামে পৌঁছে দিতে হয় । তারা জানায়, বর্তমান শিক্ষক সমিতির কিছু পদবী ধারী শিক্ষক ইন্সট্রাকটর মাহবুব কে তার দূর্নীতিতে সহায়তা করছে বলে ও জানায় ওইসব শিক্ষকরা।