গ্রাহকের সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা দুই এনজিও! অল্প সঞ্চয়ে বেশি ঋণ ও কম টাকায় বেশি লাভের প্রলোভন।

প্রকাশিত: ৮:০২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩০, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাত্র ৬১ হাজার টাকা বিনিয়োগে প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা করে লাভ মিলবে, কিংবা জাতীয় পরিচপত্রের ফটোকপি, রঙিন চার কপি ছবি দিয়ে সঞ্চয় জমা করলে এক সপ্তাহে মিলবে ৫০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ। এমন প্রলোভন দেখিয়ে রংপুরের পীরগাছা ও তারাগঞ্জ উপজেলার ৯ শতাধিক গ্রাহকের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে মাল্টিন্যাশনাল ক্রেডিট এমএলএম কোম্পানি ‘এমটিএফই’ ও ‘অগ্রণী ই-কর্মাস লিমিটেড’ নামের দুই বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। নিঃস্ব গ্রাহকরা প্রতারকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।                                                              জানা যায়, গরু-ছাগল, শখের মোটরসাইকেল বিক্রি করে, জমি বন্ধক কিংবা ব্যাংক ঋণ নিয়ে এমটিএফইতে বিনিয়োগ করেছিলেন পীরগাছার চার শতাধিক নারী-পুরুষ। এখন সুদ-আসল কোনোটাই ফেরত না পেয়ে নিঃস্ব তারা। এর  নেপথ্যে ইন্ধন যুগিয়েছে ‘প্রগতি’ নামের একটি গ্রামীণ সমিতি।                                                      স্থানীয়রা জানান, গ্রামের মানুষ এমটিএফই সম্পর্কে কিছুই জানত না। প্রগতি সমিতির কর্মীরা তাদের প্রলোভন দিয়ে একেকজনের কাছ থেকে সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা, ঊর্ধ্বে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকাও নিয়েছেন। বর্তমানে অফিসে তালা ঝুলিয়ে তারাও পলাতক।

পীরগাছার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের নেক মামুদ এলাকার হোসনে আরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এমটিএফইতে ৬১ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ভ্যানচালক সুরুজ জামান ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেন। এখন সুদ-আসল কোনোটাই না পাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এভাবেই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন আনোয়ারুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, রতন মিয়া, স্বপন মিয়া, শেফালী বেগমসহ পীরগাছার বিভিন্ন এলাকার চার শতাধিক নারী-পুরুষ। তারা জানান, ডলারের প্রলোভন দেখিয়ে প্রগতি সমিতির আমিনুল ইসলাম, সুজা মিয়া, হজরত আলী, সিরাজুলসহ কয়েকজন ফুসলিয়ে ইন্টারনেটে (অনলাইনে) টাকা বিনিয়োগ করিয়েছেন।

এমটিএফইতে লক্ষাধিক টাকা জমা করে প্রতারণার শিকার এক স্কুলশিক্ষক বলেন, কোনো কাজ না করে ঘরে বসেই প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করা যাবে অ্যাপের মাধ্যমে। অ্যাকাউন্ট খোলার পর থেকে শুরু হবে টাকা পাওয়া। এমন লোভনীয় কথার ফাঁদে ফেলে ৩ কোটি টাকা নিয়ে তারা উধাও।