নামাজরত অবস্থায় নারীকে ছুরিকাঘাতে খুন, সাবেক স্বামী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ৮:১১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার : নিজ বাড়ির বসতঘরে এশার নামাজ পড়ছিলেন লাইজু আক্তার (২২)। দোয়া শেষে জায়নামাজে বসে ছিলেন তিনি। সেখানেই তার সাবেক স্বামী আয়নাল হক (২৮) তাকে ছুরিকাঘাতে ক্ষতবিক্ষত করেন। লাইজুর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখতে পায় জায়নামাজে ছটফট করছেন লাইজু।

প্রতিবেশীদের উপস্থিতিতেই রক্তাক্ত চাকু হাতে ঘর থেকে বের হয়ে যান আয়নাল হক। গুরুতর অবস্থায় লাইজুকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে রাতে তার মৃত্যু হয়।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাড়িয়া উপজেলার আছিম পাটুলী ইউনিয়নের আছিম উত্তর টানপাড়া গ্রামে। ঘটনার  পর ঘাতক স্বামী আয়নাল হককে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালায়।

আজ শুক্রবার সকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আছিম এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত আয়নাল হক পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। এরপর তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু তার বাড়ির পাশ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আজ সকালে লাইজুর বাবা আফাজ উদ্দিন বাদী হয়ে আয়নাল হককে আসামি করে ফুলবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আছিম পাটুলী ইউনিয়নের বাঁশদি গ্রামের মোবারক আলী ছেলে আয়নাল হকের সাথে একই ইউনিয়নের আছিম উত্তর টানপাড়া গ্রামের আফাজ উদ্দিনের মেয়ে লাইজু আক্তারের সাথে দুই বছর আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হয়। এক বছর সংসার করার পর তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর থেকে লাইজু আক্তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন। মাঝে মধ্যে লাইজু ও আয়নাল হকের মধ্যে কথাবার্তা হতো। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে লাইজুর ঘরে আগে থেকেই লুকিয়ে অবস্থান করছিলেন আয়নাল।

লাইজু এশার নামাজ পড়ে দোয়া শেষ করার পর তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে তিনি পালিয়ে যান। গুরুতর অবস্থায় লাইজুকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে রাতেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘এশার নামাজ পড়ে জায়নামাজে বসে দোয়া করছিল আমার মেয়ে। সেখানেই ওকে চাকু দিয়ে পেটে, বুকে, বাম পাজরে, দুই পায়ের উরুতে উপর্যুপরি আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করে হত্যা করে। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারী ঘাতকের ফাঁসি চাই।’

ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মো. শাহীনুজ্জামান খান বলেন, ‘নামাজরত অবস্থায় লাইজু নামে এক নারীকে একাধিক ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তাকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসারতবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার সাবেক স্বামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি তাকে নিয়ে তার বাড়ির পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।’