শিক্ষার্থী, আইনজীবী, সাংবাদিক থেকে শুরু করে সহকর্মীকেও পিটিয়েছেন হারুন ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৩:৪৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩ নিজস্ব প্রতিনিধি বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, আইনজীবী, সাংবাদিক থেকে শুরু করে সহকর্মীকেও পিটিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে সমালোচনা হলেও শাস্তি হয়নি তাঁর। ফলে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। সর্বশেষ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে থানায় নিয়ে বেদম মারধরের ঘটনায় অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন-অর-রশীদ সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। গতকাল সোমবার তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়েছে, এডিসি হারুন-অর-রশীদকে ‘জনস্বার্থে সরকারি কর্ম হতে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন, তাই তাঁকে আজ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।’ ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৩১তম বিসিএসের এই পুলিশ কর্মকর্তা একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। বিশেষ করে ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি হওয়ার পর থেকেই অনেকটা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। গণমাধ্যমে এই নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি আমলে নেননি। যদিও হারুন বিভিন্ন সময়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অথবা নিজের কাজের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।সর্বশেষ গত শনিবার রাতে থানা পুলিশ নিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদকে নির্মম মারধর করেন তিনি। এ ঘটনা তদন্তে পুলিশের তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ করেছে ছাত্রলীগসহ কয়েকটি ছাত্রসংগঠন। আগে থেকেই বেপরোয়া এডিসি হারুন ডিএমপি রমনা জোনের আওতায় রয়েছে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, হাইকোর্ট, জাতীয় প্রেস ক্লাবের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এসব জায়গায় বিভিন্ন সময় মিছিল, মানববন্ধন হয়। সেসব কর্মসূচিতে এডিসি হারুন যাওয়া মানেই একটি পেটানোর ঘটনার জন্ম। গত বছরের সেপ্টেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শাহবাগে একটি সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের পিটিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি।এর আগে নিজ সহকর্মীকেও চড় মেরে সমালোচিত হয়েছিলেন এডিসি হারুন। নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান মালিক, বিক্রেতা ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের দিকে রাবার বুলেট ছুড়তে এক কনস্টেবলকে নির্দেশ দেন তিনি। বুলেট শেষ বলায় তাঁকে চড় মারেন তিনি। ঘটনাটির একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের দিন হারুন দানবের মতো আচরণ করছিলেন। গত বছরের ৪ মার্চ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা ক্লাবের সামনে একটি মিছিলে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও সাদা পোশাকের লোক হঠাৎ লাঠিপেটা করে। একই বছরের ২৮ ফেরুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে রাজনৈতিক সমাবেশে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে বিচার চেয়ে শাহবাগে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও অন্যান্য বাম সংগঠন আয়োজিত মশাল মিছিলে লাঠিপেটা করে পুলিশ। সেখানেও হারুন মারমুখী ভূমিকায় ছিলেন। গত বছরের মাঝামাঝি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলনে পুলিশের লাঠিপেটার ছবি তুলতে গিয়ে হারুনের অসদাচরণের শিকার হন কয়েকজন সাংবাদিক। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের পিটিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন এডিসি হারুন। আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের সময় সাংবাদিকদের লাঠিপেটা এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালও করেন তিনি। ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন ডিএমপির কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। SHARES অপরাধ/দূর্নীতি বিষয়: #হারুন
বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, আইনজীবী, সাংবাদিক থেকে শুরু করে সহকর্মীকেও পিটিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে সমালোচনা হলেও শাস্তি হয়নি তাঁর। ফলে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। সর্বশেষ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে থানায় নিয়ে বেদম মারধরের ঘটনায় অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন-অর-রশীদ সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়েছে, এডিসি হারুন-অর-রশীদকে ‘জনস্বার্থে সরকারি কর্ম হতে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন, তাই তাঁকে আজ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।’ ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৩১তম বিসিএসের এই পুলিশ কর্মকর্তা একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। বিশেষ করে ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি হওয়ার পর থেকেই অনেকটা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি।
গণমাধ্যমে এই নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি আমলে নেননি। যদিও হারুন বিভিন্ন সময়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অথবা নিজের কাজের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।সর্বশেষ গত শনিবার রাতে থানা পুলিশ নিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদকে নির্মম মারধর করেন তিনি। এ ঘটনা তদন্তে পুলিশের তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিকে আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ করেছে ছাত্রলীগসহ কয়েকটি ছাত্রসংগঠন। আগে থেকেই বেপরোয়া এডিসি হারুন ডিএমপি রমনা জোনের আওতায় রয়েছে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, হাইকোর্ট, জাতীয় প্রেস ক্লাবের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এসব জায়গায় বিভিন্ন সময় মিছিল, মানববন্ধন হয়।
সেসব কর্মসূচিতে এডিসি হারুন যাওয়া মানেই একটি পেটানোর ঘটনার জন্ম। গত বছরের সেপ্টেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শাহবাগে একটি সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের পিটিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি।এর আগে নিজ সহকর্মীকেও চড় মেরে সমালোচিত হয়েছিলেন এডিসি হারুন। নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান মালিক, বিক্রেতা ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের দিকে রাবার বুলেট ছুড়তে এক কনস্টেবলকে নির্দেশ দেন তিনি। বুলেট শেষ বলায় তাঁকে চড় মারেন তিনি। ঘটনাটির একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষের দিন হারুন দানবের মতো আচরণ করছিলেন। গত বছরের ৪ মার্চ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা ক্লাবের সামনে একটি মিছিলে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও সাদা পোশাকের লোক হঠাৎ লাঠিপেটা করে। একই বছরের ২৮ ফেরুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে রাজনৈতিক সমাবেশে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে বিচার চেয়ে শাহবাগে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও অন্যান্য বাম সংগঠন আয়োজিত মশাল মিছিলে লাঠিপেটা করে পুলিশ। সেখানেও হারুন মারমুখী ভূমিকায় ছিলেন। গত বছরের মাঝামাঝি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে আন্দোলনে পুলিশের লাঠিপেটার ছবি তুলতে গিয়ে হারুনের অসদাচরণের শিকার হন কয়েকজন সাংবাদিক। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের পিটিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন এডিসি হারুন। আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের সময় সাংবাদিকদের লাঠিপেটা এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালও করেন তিনি। ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন ডিএমপির কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।