আাগামী দিন সোমবার থেকে সাধারণ মানুষ ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পাবেন।

প্রকাশিত: ৬:৪৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি : শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি নয়, এবার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পেতে যাচ্ছে সাধারণ মানুষও। উদ্বোধনের পর নতুন এই পথ গণপরিবহন খুব একটা ব্যবহার না করায় এগিয়ে এসেছে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি। দ্রুতগতির এই উড়ালসড়কে নিয়মিত বাস চালু করতে যাচ্ছে সংস্থাটি।

পরীক্ষামূলকভাবে শুরুতে ৮টি দ্বিতল বাস চলাচল করবে উত্তরা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত। কিলোমিটার প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২ টাকা ৪৫ পয়সা। সে হিসাবে ফার্মগেট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার ৩৫ টাকা, আর জসীমউদ্দীন পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার পথ ৪০ টাকায় যেতে পারবেন নগরবাসী।

ঘনবসতির মেগাসিটি রাজধানীবাসীর জন্য নতুন এক দিগন্তের উন্মোচন হয় গত ২ সেপ্টেম্বর। খুলে দেয়া হয় বহুল কাঙ্ক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ১১.৫ কিলোমিটার পথ অর্থাৎ বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ। 
 
নতুন এই যাত্রাপথ নিয়ে সাধারণ মানুষ আশায় বুক বেঁধে থাকলেও উদ্বোধনের পর দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। সকাল কিংবা বিকেলের দিকে নিচের সড়ক যানবাহনে ঠাসা থাকলেও সম্পূর্ণ ফাঁকা দেখা যায় দ্রুতগতির উড়ালসড়ক এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আবার যেসব যানবাহন নতুন এই পথ ব্যবহার করে সেসবের মধ্যে গণপরিবহনের সংখ্যা প্রায় শূন্য। এ যেন শুধু ব্যক্তিগত গাড়ির চলার পথ।
 
এমন প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষকে দ্রুতগতির এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুফল দিতে এগিয়ে এসেছে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি। সোমবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সংস্থাটির আটটি দ্বিতল বাস চলাচল করবে নতুন এই রুটে। নতুন এই খবরে আশার সঞ্চার ঘটেছে রাজধানীবাসীর মনে। 

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বিআরটিসির বাস চলবে অনেকটা ‘শাটল’ সার্ভিসের মতো। অর্থাৎ শুধু উড়ালসড়ককে কেন্দ্র করে। ফার্মগেটের খেজুর বাগানের কাছ থেকে বাসগুলো ছাড়বে। এরপর উড়ালসড়ক দিয়ে উত্তরা জসীমউদ্‌দীন রোড হয়ে খেজুর বাগান এলাকায় ফিরে আসবে। এভাবে সকাল ৭টা থেকে সারা দিন চলবে বাসগুলো। রাত পর্যন্ত যতক্ষণ যাত্রী পাওয়া যাবে, ততক্ষণ চলবে।
 
এই পথে ভাড়াও নির্ধারণ করা হয়েছে সহনীয়। খেজুর বাগান থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটারের ভাড়া ৩৫ টাকা। আর জসীমউদ্দীন পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা। কিলোমিটার প্রতি ভাড়া দাঁড়াচ্ছে ২ টাকা ৪৫ পয়সা। ই-টিকিটিং ব্যবস্থা থাকায় বেশি ভাড়া নেয়ার সুযোগ থাকবে না।
 
যাত্রী চাহিদার ভিত্তিতে পরবর্তী বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানোর কথা জানিয়েছে বিআরটিসি। এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর বিআরটিসি চেয়ারম্যান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে প্রাথমিকভাবে ৭৯টির মতো বাস পরিচালনার কথা বলেছিলেন। তবে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সংস্থাটি।
 
গত ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যদিয়ে যানজটের নগরীতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। আগামী জুনের মধ্যে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তখন এর পুরো সুফল পাবে নগরবাসী।                   

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কাওলা) থেকে শুরু করে মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার হয়ে কুতুবখালী গিয়ে শেষ হবে। ২০২৪ সালের জুনে কাজ শেষ করার লক্ষ্য প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের।
 
উড়াল সড়কটি তৈরি হচ্ছে সরকারের সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধানে। মূল উড়াল সড়ক ১৯.৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে ওঠা-নামার জন্য ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র‌্যাম্প (সংযোগ সড়ক) রয়েছে।  র‌্যাম্পসহ উড়ালসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬.৭৩ কিলোমিটার।