আমলাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া না পাওয়া নিয়ে সচিবালয়ে নানা গুঞ্জন।

প্রকাশিত: ৭:২৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার : চলতি বছরেই অন্তত দশ জন সচিব অবসরে যাচ্ছে। এদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া না পাওয়া নিয়ে নানারকম গুঞ্জন চলছে। অনেকেই শেষ সরকারের শেষ মুহূর্তে এসে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের জন্য দৌড় ঝাঁপ করছেন। এদের মধ্যে একজন সফলও হয়েছেন। সংসদ সচিবলের সিনিয়র সচিব আব্দুস সালামকে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়ছে। অন্যরাও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার জন্য দৌড় ঝাঁপ করছেন।

এই নির্বাচনের আগে এ ধরনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আর এ নিয়ে যারা এখনো পর্যন্ত সচিব হতে পারেননি, একাদশ ত্রয়োদশ এবং পনেরোতম ব্যাচের কর্মকর্তারা হতাশা প্রকাশ করছেন।

চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের বিরুদ্ধে সচিবালয়ের সিনিয়র আমলাদের মধ্যে এক ধরনের আওয়াজ উঠেছে। তারা মনে করছে যে, নির্বাচনের আগে এ ধরনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া ঠিক নয়। অন্যদিকে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করার লক্ষ্যে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের পথ থেকে সরকারের সরে আসা উচিত বলে মনে করছেন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা।

এখন এই বছর যাদের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে এবং যারা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রত্যাশা করছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। তার চুক্তিভিত্তিক চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৩ অক্টোবর। ১৩ অক্টোবর তাই তিনি চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন এমন গুঞ্জন সচিবালয়ে রয়েছে। তবে নির্বাচনের আগে মন্ত্রীপরিষদ সচিবের মত গুরুত্বপূর্ণ একজন সচিবকে চুক্তিতে নিয়োগ দেয়া যাবে কিনা এই প্রশ্নটি উঠেছে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু: আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৯ অক্টোবর। তিনিও চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার জন্য দৌড় ঝাঁপ করছেন। কৃষিবিদ এই আমলা রাজনৈতিক পাড়ায় চেষ্টা তদবির করছেন যেন তিনি অন্তত ১ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে থাকেন।

ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আবু বকর ছিদ্দীক এর চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ অক্টোবর। তিনিও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সম্ভাবনা খুবই কম বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। ইআরডি সচিব শরিফা খানের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৪ নভেম্বর। তিনিও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার জন্য চেষ্টা তদবির করছেন। তবে তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শেষ পর্যন্ত পাবেন কিনা এই নিয়ে অনেকের সংশয় রয়েছে।

শ্রম কর্মসংস্থান সচিব মোঃ এহছানে এলাহীর চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর। তিনিও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য চেষ্টা করছেন। তবে তারও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করার প্রাপ্তির ব্যাপারে কোনো সবুজ সংকেত এখন পর্যন্ত মেলেনি।

মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ কামাল হোসেন ২৯ নভেম্বর অবসরে যাবেন। তিনিও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে আগ্রহী বলে বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে এবং এই জন্য তিনি চেষ্টা করছেন। ৩১ ডিসেম্বর অর্থাৎ নির্বাচনের আগে আগে  চাকরির মেয়াদ শেষ হবে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে এমন গুঞ্জন রয়েছে। তবে নির্বাচনের তফসিলের পরে এই ধরনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হবে কিনা তা নিয়েও নানারকম আলাপ আলোচনা আছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম এবং ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মোঃ ফয়জুল ইসলামের চাকরির মেয়াদও শেষ হবে ৩১ ডিসেম্বর। তিনিও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার জন্য প্রত্যাশী।                                                              নির্বাচনের আগে এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ফলে আমলাদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া হবে না নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হবে তা নিয়েও সরকার কিছুটা দ্বিধায় রয়েছে।