ফেনীর পরশুরাম ভুমি অফিসের দূর্নীতি এবং দালালের আখড়া।

প্রকাশিত: ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৩

শিবব্রত চক্রবর্ত্তী
***************************************
(পর্ব——-৩)  ঃ মধ্যস্বত্বভোগী দালালের দৌরাত্ম্যের কারণে পরশুরাম উপজেলা ভুমি অফিস থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না পরশুরামের মানুষ। এই ভুমি অফিসে দালালরা এক ধরনের সিন্ডিকেট তৈরি করে রেখেছে। সেবা প্রত্যাশী নাগরিকরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করার মত কোন প্রকার সুযোগ ই পাচ্ছেন না। ওইসব দালালের সাথে এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা _কর্মচারীদের যোগসাজশ রয়েছে। দুদক কর্তৃক পরিচালিত হট লাইনে ও এধরনের অভিযোগ যাচ্ছে অহরহ, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
পরশুরামের ভুমি অফিসে ঘুষ না দিলে মেলে না ভুমির নামজারির খতিয়ান। ওই অফিসে কেউ জমির নামজারির কাজ সম্পাদন করতে হলে ওই লোককে ব্যয় করতে হয় মোটা অংকের টাকা। সেবা প্রত্যাশী নাগরিকদের জিম্মি করে একটি জমা খারিজ বাবদ হাতিয়ে নেয় ১০ থাকে ১৫ হাজার টাকা। তারপর ওই সেবা প্রত্যাশী নাগরিকদের চলে যথাক্রমে ৫,৬,৯ মাস বা ১বৎসর বা তদূর্ধ্ব সময় ধরে হয়রানি এবং প্রতিদিন ভুমি অফিসের বারান্দায় ধর্ণা দেওয়া।
এক্ষেত্রে উপজেলা বা ইউনিয়ন তহশীল অফিস ও পিছিয়ে নেই। ভুমি নামজারির নিয়মানুযায়ী অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট তহশীল অফিস কর্তৃক নিষ্কন্টক প্রতিবেদন দিতে হয়। সেক্ষেত্রে ওই তহশীল অফিসে ও চলে অবৈধ লেনদেনের আন-অফিসিয়াল চুক্তি।
সেখান থেকে ওই প্রতিবেদন আবার ভুমি অফিসে আসলে সার্ভেয়ার , কানুনগো সহ কিছু কমকর্তাদের প্রতি সাক্ষরের বাবদ আবারো দিতে হয় ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, যা ভুক্তভোগিদের অভিযোগ।তারা আরো জানায়, এই অফিসে সেবা প্রত্যাশীদের জিম্মি করে ইচ্ছে মত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এছাড়াও অফিসে আবেদন কারীদের জমির দলিলে নানা সমস্যা ও ভুল ভ্রান্তি দেখিয়ে অর্থ আদায় করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে সেবা প্রত্যাশীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
পৌরসভা সহ ৩টি ইউনিয়ন নিয়ে পরশুরাম উপজেলা।এই সমগ্র উপজেলার লোক তাদের জমি খারিজ করতে হলে এই ভুমি অফিসে আসতে হয়।দালাল ও কিছু অসৎ কর্মচারীরা এই অফিসে অনিয়ম কে নিয়মে পরিণত করেছে। পূর্বে ও এই ভুমি অফিসে চাকুরীরত কয়েকজন কর্মচারীসহ পিয়ন পর্যন্ত সেবা প্রত্যাশী দের জিম্মি করে ঘুষ সহ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন।তারা নায়েব সিন্ডিকেট সহ গড়ে তুলেছিলেন দালাল সিন্ডিকেট যার ধারাবাহিকতা এখনো চলছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগীরা জানান, সব কাগজপত্র সঠিক করে খারিজের জন্য আবেদন করে সিন্ডিকেটের চাহিদা মত টাকা দিয়ে ও নির্দিষ্ট সময় তো দূরের কথা ৬ মাস ধরে ভুমি অফিসের বারান্দায় ঘুরছি কাজ তো হচ্ছেই না বরং হয়রানির শিকার হচ্ছি।
এদিকে ভুমি নামজারির জন্য আবেদন করতে হলে কি কি কাগজপত্র ও কত টাকা ফিস জমা দিতে হবে এই জাতীয় একটি সিটিজেন চার্টার জনসম্মুখে প্রদর্শন করা বাধ্যতামূলক হলেও তা কোথায় প্রদর্শন করা বা টানানো হয়েছে সেবা প্রত্যাশী রা তা জানেনা বলেও জানায়।
দালালদের মধ্যে দলিল লিখক মজল হক, শাহজাহান,সায়েম,নিজাম, ইলিয়াস ,পরিমল, পরশুরাম পৌর তহশিল অফিসের শহীদ (বতমানে আমজাদ হাট ইউনিয়ন ভুমি অফিসে কর্মরত) সাহেব নগরের মোঃ আলী,সাব- রেজিস্ট্রার অফিসের নকল নবীস সাদ্দাম সহ রাজাপুরের করিম দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত।
এব্যাপারে উপজেলা সহকারী ভুমি কমিশনার মং চিংনু মারমার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান্, আমার কাছে সেবা প্রত্যাশীদের আসতে কোন সমস্যা বা বাধ্যবাধকতা নেই। আমার কাছে এসে সরাসরি অভিযোগ দিলেও আমি যথারীতি ব্যবস্থা নিব।
(আগামী পর্বে প্রকাশিত হবে ভুমি অফিসে জড়িত কর্মকর্তা এবং কর্মচারী দের ব্যাপারে প্রতিবেদন। )