ইন্টারনেট জুড়ে ভাইরাল ‘খালাসি’ গানটির অর্থ জানেন তো?

প্রকাশিত: ১১:৩৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২৩
‘খালাসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রতি প্রকাশিত ভারতের কোক স্টুডিওর নতুন ট্র্যাক ‘গোতিলো খালাসি’ গানটি বেশ তোলপাড় ফেলে দিয়েছে ইন্টারনেটে। ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্তানের গণ্ডি ছাড়িয়েও বিশ্বব্যাপী বহু দেশের সংগীতপ্রেমীদের মুখে মুখে এই গান। সামাজিক মাধ্যমেও রীতিমতো সুনামি বইছে খালাসি ঘিরে। ইনস্টাগ্রামের রিল থেকে শুরু করে পূজার মণ্ডপ কিংবা পার্টি, ডিস্কোসব জায়গাতেই সুপারহিট এই গান।

তবে অনেকেই গানটির অর্থ খুঁজে বের করতে মোটামুটি হয়রান! 

আসলে গানটি গুজরাটি ভাষায় নির্মিত। খালাসি মূলত এর সাউন্ডট্র্যাক এবং ভিন্নধর্মী উপস্থাপনের জন্যই এতটা জনপ্রিয়তা পায়। তবে গানটি ভাইরাল হওয়ার পর এটি ঘিরে শ্রোতাদের উন্মাদনা বেড়েই চলেছে। খালাসি আসলে কী? কেন এতটা জনপ্রিয়তা পেয়েছে গানটি? এটি কোন ভাষার গান? এই গানের অর্থ কী? এসব প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেক শ্রোতার মনে।

খালাসি’ মূলত জীবনের কথা বলে। এক রোমাঞ্চকর জীবনের কথা বলে, এক দুঃসাহসিক নাবিকের কথা বলে, যে কিনা নিজের এলাকা থেকে বেরিয়ে গভীর সমুদ্রে নতুন কিছু খোঁজার দিকে এগিয়ে চলেছে। গুজরাটের উপকূলে অন্বেষণ করতে বেরিয়েছে। গানটি তার ক্ষীণ, দুঃসাহসিক সমুদ্রযাত্রা, তার আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা এবং তার উদ্যমের কথা বলে।

‘গোতিলো খালাসি’ গানটির রচয়িতা ‘স্ক্যাম ১৯৯২’-এর অচিন্ত ঠক্কর। গানটির মাধ্যমে একক পারকাসিভ অ্যাকোস্টিক গিটারিস্ট ধ্রুব বিশ্বনাথের প্রতিভাও উঠে এসেছে সবার সামনে। সঙ্গে ছিল আরো বেশ কয়েকজন গুজরাটি সহশিল্পী।

গানটির মূল ভোকাল আদিত্য গাধভি। আদিত্য এর আগে গুজরাটি গানের রিয়ালিটি শো জয় করেছেন।

তিনি অস্কার বিজয়ী সুরকার এ আর রহমানের সাথে তার লাইভ শোতে ব্যাকিং ভোকালিস্ট হিসেবে পারফরম করেছেন। এর বাইরে তিনি আইপিএল দল গুজরাট টাইটানসের জন্য ‘আভা দে’ গানটিও গেয়েছেন। আদিত্য ‘ভেন্টিলেটর’, ‘হেল্লারো’সহ আরো অনেক গুজরাটি চলচ্চিত্রের জন্য প্লেব্যাকও করেছেন। তিনি ওস্তাদ শওকত হুসেন খানের কাছ থেকে দুই বছরের সংগীত প্রশিক্ষণও গ্রহণ করেন। 

‘গোতিলো খালাসি’ সম্পর্কে আদিত্য বলেন, “এই অসাধারণ প্রজেক্টের একটি অংশ হতে পারাটা আমার জন্য চিত্তাকর্ষক ছিল। আমরা আমাদের হৃদয় দিয়ে গানটি তৈরি করেছি কারণ গুজরাটে একজন নাবিকের সীমাহীন দুঃসাহসিক কাজই এই গানের মূল গল্প। ‘খালাসি’ আমাকে আমার নতুন দিকগুলো বিকাশের সুযোগ দিয়েছে। এটি জীবনদর্শনের গান। একজন নাবিকের দুঃসাহসিক যাত্রাকে শৈল্পিক দৃষ্টিতে দেখতে শিখিয়েছে গানটি।”

অন্যদিকে গানটির রচয়িতা অচিন্ত ‘স্ক্যাম ১৯৯২: দ্য হার্ষাদ মেহতা স্টোরি’ এবং ‘স্কুপ’-এর মতো জনপ্রিয় ওয়েব শোগুলোর জন্য গান রচনা করেছেন। ভাসান বালার ‘মনিকা ও মাই ডার্লিং’-এর জন্য তাঁর রচিত গানগুলো অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছিল। ‘খালাসি’র পেছনের সৃজনশীল অচিন্ত ঠক্কর গানটি সম্পর্কে একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘খালাসি হলো একটি সংগীত অভিযান, যা আমাদের একজন নাবিকের স্বতঃস্ফূর্ত আত্মার গল্প বলে যার সমুদ্র ভ্রমণ ও বিচরণ আমাদের সেই জগতে ভ্রমণ করায়। এটি রোমাঞ্চকর জীবনের গল্প বলে।’

এদিকে প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ট্রেন্ডিংয়ে থাকা গানটি ঘিরে শ্রোতাদের উন্মাদনাও কম নয়। বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ গানটি ঘিরে নিজেদের কৌশল ও প্রতিভা দেখানোর চেষ্টা করেছেন। তৈরি হচ্ছে অসংখ্য মিম। সম্প্রতি ভাইরাল নাচের ভিডিওর জন্য বিখ্যাত নরওয়েজিয়ান নৃত্য গোষ্ঠী ‘কুইক স্টাইল’ খালাসি’তে তাদের দুর্দান্ত অভিনয় দিয়ে ভক্তদের মুগ্ধ করেছে। বলতে গেলে ‘খালাসি’ জাদু বেশ ভালো করেই বশ করেছে শ্রোতাদের। মুগ্ধতা ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝেও। বর্তমানে ‘খালাসি’ গানটি সমস্ত প্রধান মিউজিক স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরমে উপলব্ধ রয়েছে শ্রোতাদের জন্য।