অবাধ্য সন্তান মা-বাবার জন্য পরীক্ষা ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ১১:৩২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৮, ২০২৩ প্রতীকী ছবি নিজস্ব প্রতিবেদক সন্তান আল্লাহর অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। যার সন্তান হয় না সে জানে পৃথিবীর সব কিছুর চেয়েও একটি সন্তান বেশি মূল্যবান। আল্লাহ তাআলা মানুষকে এই নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন এভাবে : ‘আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছা তা-ই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন অথবা দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা করে দেন বন্ধ্যা; তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।’ (সুরা : শুরা : ৪৯-৫০) মা-বাবার কাছ থেকে স্নেহ-মমতাসহ সন্তানের অন্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে। সন্তানের লালন-পালন, পরিপুষ্টি, সংরক্ষণ, পরিবৃদ্ধি, সর্বোপরি আদর্শ মানুষ হিসেবে তার জীবন গঠন করার দায়িত্ব মা-বাবার। উপার্জন, শাসন, নিয়ন্ত্রণ ও বহিরাঙ্গনের শ্রমসাধ্য দায়িত্ব পিতাকে পালন করতে হয়। অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম, শিশুর লালন-পালন ও প্রাথমিক শিক্ষার মতো মৌলিক ও ধৈর্যসাধ্য কাজগুলো সাধারণত মায়ের ওপর বর্তায়। শিশু নির্দোষ প্রকৃতি নিয়ে পৃথিবীতে আসে। তাকে দৈহিক ও মানসিক প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলে উপযুক্ত নাগরিক করার দায়িত্বও মা-বাবার। মহানবী (সা.) বলেছেন, প্রতিটি শিশুই ফিতরাতের (ইসলাম) ওপর জন্মগ্রহণ করে। তারপর তার মা-বাবা তাকে ইহুদি, খ্রিস্টান অথবা অগ্নিপূজক বানায়। (বুখারি, হাদিস : ১৩৮৫, মুসলিম, হাদিস : ২৬৫৮) কাজেই সঠিক শিক্ষা-দীক্ষায় সন্তান প্রতিপালন করলে তা দুনিয়া ও আখিরাতে অযুত কল্যাণের উৎস। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য। স্থায়ী সৎকর্ম তোমার রবের কাছে পুরস্কারপ্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং আশান্বিত হওয়ার জন্যও সর্বোৎকৃষ্ট।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৪৬) আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মা-বাবার ওপর সন্তানের উত্তম শিক্ষাদান আবশ্যক করে দিয়েছেন। আর যে বিষয় অবশ্য পালনীয় তাতে কারো ইচ্ছা-অনিচ্ছার এখতিয়ার থাকে না। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে রক্ষা করো সেই আগুন থেকে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। তাতে নিয়োজিত আছে কঠোর স্বভাব, কঠিন হৃদয় ফেরেশতারা। যারা আল্লাহর কোনো হুকুমে তাঁর অবাধ্যতা করে না এবং সেটাই করে যার নির্দেশ তাদের দেওয়া হয়।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৬) ইমাম গাজালি (রহ.) বলেছেন, ‘সন্তান মাতা-পিতার কাছে আমানত। সন্তানের অন্তর একেবারে স্বচ্ছ। তাতে যেকোনো কিছু বপন করা যাবে। সন্তানকে ভালো কাজে অভ্যস্ত করলে মাতা-পিতা ইহকাল ও পরোকালে সুখী হবে। সন্তান মন্দ কাজে অভ্যস্ত হলে মাতা-পিতা পশুর মতো অবহেলিত হবে।’ (ইহইয়াউল উলুমুদ দিন, পৃষ্ঠা : ৭২/৩) মাতা-পিতার প্রথম কর্তব্য, সন্তানকে মহান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য শেখানো। মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করা মা-বাবার প্রধান দায়িত্ব। লোকমান (আ.) নিজ সন্তানকে আল্লহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘লোকমান নিজ পুত্রকে উপদেশ দিয়ে বলল, হে আমার পুত্র, তুমি আল্লাহর সঙ্গে শিরক বা অংশীদার স্থাপন কোরো না, কারণ শিরক বা অংশীদার স্থাপন অনেক বড় পাপ।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৩) মা-বাবা যদি সন্তানকে বাল্যকাল থেকেই উত্তম শিক্ষা-দীক্ষা না দেন, পরে পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পর তার থেকে গোনাহ প্রকাশ হতে থাকে তাহলে মা-বাবার অবহেলাও যেহেতু তার গোনাহে লিপ্ত হওয়ার একটা কারণ, তাই তার ওই গোনাহগার সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে মাতা-পিতাও গোনাহগাররূপে গণ্য হবেন। মা-বাবা যদি দুনিয়া থেকে চলে যান আর সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য এবং গোনাহে লিপ্ত থাকে তাহলেও মা-বাবা যদি দায়িত্বে অবহেলা করে থাকেন, তাদের দায়িত্বে অবহেলা করার কারণে এর কিছু দায়ভার তাদের ওপরও বর্তাবে। যেসব মা-বাবার সন্তান বখে যায়, তাঁরা আল্লাহর মহাপরীক্ষায় পড়ে আছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘জেনে রেখো, তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। (এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে) তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে মহাপুরস্কার আছে।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ২৮) আলোচ্য আয়াতে সম্পদ ও সন্তান পরীক্ষার বস্তু হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর কারণ হলো, সন্তান ও সম্পদ মানুষকে খিয়ানত করতে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অবাধ্য হতে বাধ্য করে। সে জন্য সে দুটিকে ফিতনা (পরীক্ষা) বলা হয়েছে। অর্থাৎ এর দ্বারা মানুষের পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে যে তাদের ভালোবাসায় আমানত ও আনুগত্যের হক পূর্ণরূপে আদায় করে কি না? যদি সে তা পূর্ণরূপে আদায় করে, তাহলে সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, অন্যথা সে অনুত্তীর্ণ ও অসফল বলে গণ্য হয়। এ অবস্থায় এই সম্পদ ও সন্তান তাঁর জন্য আল্লাহর শাস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সন্তান আদর্শ মানুষ হলে মা-বাবা দুনিয়া ও আখিরাতে এর সুফল পাবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আদম সন্তান যখন মৃত্যুবরণ করে তার সব আমলের সমাপ্তি ঘটে, কেবল তিনটি আমল ছাড়া। সেগুলো হচ্ছে : এক. সদকায়ে জারিয়া বা চলমান দান। দুই. এমন জ্ঞান, যা থেকে লোকেরা উপকৃত হতে থাকে এবং তিন. নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করতে থাকে। (মুসলিম, হাদিস : ১৬৩১) এর বিপরীতে মানুষ সন্তান-সন্ততিকে গড়ে তোলার এই আমানতের খিয়ানত করলে কাল কিয়ামতে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। সন্তান বিপথগামী হলে তাদের দ্বারা মা-বাবা শত্রুর শত্রুতার চেয়েও বেশি কষ্ট পেতে পারে। কোনো কোনো সন্তানের মধ্যে লুকিয়ে আছে শত্রুর ছায়া। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের স্ত্রী-স্বামী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের শত্রু; অতএব তাদের সম্পর্কে তোমরা সতর্ক থেকো…।’ (সুরা : তাগাবুন, আয়াত : ১৪) বিপথে যাওয়া সন্তান মা-বাবার মর্যাদা ও সম্পদ নিমেষেই ধূলিসাৎ করে দিতে পারে। এর পথ ধরে মূল সেই সন্তান যোগ্য উত্তরাধিকার বিবেচিত হয় না এবং আত্মীয়তার বলয় থেকে বেরিয়ে যায়। নুহ (আ.)-এর আমলে ঐতিহাসিক মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে সে যুগের বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের মধ্যে চূড়ান্ত মীমাংসা হয়ে যায়। সে সময় নুহ (আ.)-এর পুত্র অবিশ্বাসীদের সঙ্গ ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানায়। তাই সে পিতার ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক পারিবারিক বলয় থেকে বেরিয়ে যায়। আল্লাহ বলেন, ‘হে নুহ, সে তো তোমার পরিবারভুক্ত নয়। সে অবশ্যই অসৎকর্মপরায়ণ…।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৪৬) এমন বখে যাওয়া সন্তানকে কঠোর অনুশাসনের আওতায় আনার বিকল্প নেই। SHARES ইসলাম বিষয়: অবাধ্য সন্তান
সন্তান আল্লাহর অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। যার সন্তান হয় না সে জানে পৃথিবীর সব কিছুর চেয়েও একটি সন্তান বেশি মূল্যবান। আল্লাহ তাআলা মানুষকে এই নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন এভাবে : ‘আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছা তা-ই সৃষ্টি করেন।
তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন অথবা দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা করে দেন বন্ধ্যা; তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।’ (সুরা : শুরা : ৪৯-৫০) মা-বাবার কাছ থেকে স্নেহ-মমতাসহ সন্তানের অন্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে। সন্তানের লালন-পালন, পরিপুষ্টি, সংরক্ষণ, পরিবৃদ্ধি, সর্বোপরি আদর্শ মানুষ হিসেবে তার জীবন গঠন করার দায়িত্ব মা-বাবার। উপার্জন, শাসন, নিয়ন্ত্রণ ও বহিরাঙ্গনের শ্রমসাধ্য দায়িত্ব পিতাকে পালন করতে হয়।
অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম, শিশুর লালন-পালন ও প্রাথমিক শিক্ষার মতো মৌলিক ও ধৈর্যসাধ্য কাজগুলো সাধারণত মায়ের ওপর বর্তায়। শিশু নির্দোষ প্রকৃতি নিয়ে পৃথিবীতে আসে। তাকে দৈহিক ও মানসিক প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলে উপযুক্ত নাগরিক করার দায়িত্বও মা-বাবার। মহানবী (সা.) বলেছেন, প্রতিটি শিশুই ফিতরাতের (ইসলাম) ওপর জন্মগ্রহণ করে।
তারপর তার মা-বাবা তাকে ইহুদি, খ্রিস্টান অথবা অগ্নিপূজক বানায়। (বুখারি, হাদিস : ১৩৮৫, মুসলিম, হাদিস : ২৬৫৮) কাজেই সঠিক শিক্ষা-দীক্ষায় সন্তান প্রতিপালন করলে তা দুনিয়া ও আখিরাতে অযুত কল্যাণের উৎস। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য। স্থায়ী সৎকর্ম তোমার রবের কাছে পুরস্কারপ্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং আশান্বিত হওয়ার জন্যও সর্বোৎকৃষ্ট।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৪৬) আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মা-বাবার ওপর সন্তানের উত্তম শিক্ষাদান আবশ্যক করে দিয়েছেন।
আর যে বিষয় অবশ্য পালনীয় তাতে কারো ইচ্ছা-অনিচ্ছার এখতিয়ার থাকে না। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে রক্ষা করো সেই আগুন থেকে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। তাতে নিয়োজিত আছে কঠোর স্বভাব, কঠিন হৃদয় ফেরেশতারা। যারা আল্লাহর কোনো হুকুমে তাঁর অবাধ্যতা করে না এবং সেটাই করে যার নির্দেশ তাদের দেওয়া হয়।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৬) ইমাম গাজালি (রহ.) বলেছেন, ‘সন্তান মাতা-পিতার কাছে আমানত। সন্তানের অন্তর একেবারে স্বচ্ছ। তাতে যেকোনো কিছু বপন করা যাবে। সন্তানকে ভালো কাজে অভ্যস্ত করলে মাতা-পিতা ইহকাল ও পরোকালে সুখী হবে। সন্তান মন্দ কাজে অভ্যস্ত হলে মাতা-পিতা পশুর মতো অবহেলিত হবে।’ (ইহইয়াউল উলুমুদ দিন, পৃষ্ঠা : ৭২/৩) মাতা-পিতার প্রথম কর্তব্য, সন্তানকে মহান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য শেখানো। মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করা মা-বাবার প্রধান দায়িত্ব। লোকমান (আ.) নিজ সন্তানকে আল্লহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘লোকমান নিজ পুত্রকে উপদেশ দিয়ে বলল, হে আমার পুত্র, তুমি আল্লাহর সঙ্গে শিরক বা অংশীদার স্থাপন কোরো না, কারণ শিরক বা অংশীদার স্থাপন অনেক বড় পাপ।’ (সুরা : লোকমান, আয়াত : ১৩) মা-বাবা যদি সন্তানকে বাল্যকাল থেকেই উত্তম শিক্ষা-দীক্ষা না দেন, পরে পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পর তার থেকে গোনাহ প্রকাশ হতে থাকে তাহলে মা-বাবার অবহেলাও যেহেতু তার গোনাহে লিপ্ত হওয়ার একটা কারণ, তাই তার ওই গোনাহগার সন্তানের সঙ্গে সঙ্গে মাতা-পিতাও গোনাহগাররূপে গণ্য হবেন। মা-বাবা যদি দুনিয়া থেকে চলে যান আর সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য এবং গোনাহে লিপ্ত থাকে তাহলেও মা-বাবা যদি দায়িত্বে অবহেলা করে থাকেন, তাদের দায়িত্বে অবহেলা করার কারণে এর কিছু দায়ভার তাদের ওপরও বর্তাবে। যেসব মা-বাবার সন্তান বখে যায়, তাঁরা আল্লাহর মহাপরীক্ষায় পড়ে আছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘জেনে রেখো, তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। (এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে) তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে মহাপুরস্কার আছে।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ২৮) আলোচ্য আয়াতে সম্পদ ও সন্তান পরীক্ষার বস্তু হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর কারণ হলো, সন্তান ও সম্পদ মানুষকে খিয়ানত করতে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অবাধ্য হতে বাধ্য করে। সে জন্য সে দুটিকে ফিতনা (পরীক্ষা) বলা হয়েছে। অর্থাৎ এর দ্বারা মানুষের পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে যে তাদের ভালোবাসায় আমানত ও আনুগত্যের হক পূর্ণরূপে আদায় করে কি না? যদি সে তা পূর্ণরূপে আদায় করে, তাহলে সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, অন্যথা সে অনুত্তীর্ণ ও অসফল বলে গণ্য হয়। এ অবস্থায় এই সম্পদ ও সন্তান তাঁর জন্য আল্লাহর শাস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সন্তান আদর্শ মানুষ হলে মা-বাবা দুনিয়া ও আখিরাতে এর সুফল পাবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আদম সন্তান যখন মৃত্যুবরণ করে তার সব আমলের সমাপ্তি ঘটে, কেবল তিনটি আমল ছাড়া। সেগুলো হচ্ছে : এক. সদকায়ে জারিয়া বা চলমান দান। দুই. এমন জ্ঞান, যা থেকে লোকেরা উপকৃত হতে থাকে এবং তিন. নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করতে থাকে। (মুসলিম, হাদিস : ১৬৩১) এর বিপরীতে মানুষ সন্তান-সন্ততিকে গড়ে তোলার এই আমানতের খিয়ানত করলে কাল কিয়ামতে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। সন্তান বিপথগামী হলে তাদের দ্বারা মা-বাবা শত্রুর শত্রুতার চেয়েও বেশি কষ্ট পেতে পারে। কোনো কোনো সন্তানের মধ্যে লুকিয়ে আছে শত্রুর ছায়া। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের স্ত্রী-স্বামী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের শত্রু; অতএব তাদের সম্পর্কে তোমরা সতর্ক থেকো…।’ (সুরা : তাগাবুন, আয়াত : ১৪) বিপথে যাওয়া সন্তান মা-বাবার মর্যাদা ও সম্পদ নিমেষেই ধূলিসাৎ করে দিতে পারে। এর পথ ধরে মূল সেই সন্তান যোগ্য উত্তরাধিকার বিবেচিত হয় না এবং আত্মীয়তার বলয় থেকে বেরিয়ে যায়। নুহ (আ.)-এর আমলে ঐতিহাসিক মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে সে যুগের বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের মধ্যে চূড়ান্ত মীমাংসা হয়ে যায়। সে সময় নুহ (আ.)-এর পুত্র অবিশ্বাসীদের সঙ্গ ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানায়। তাই সে পিতার ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক পারিবারিক বলয় থেকে বেরিয়ে যায়। আল্লাহ বলেন, ‘হে নুহ, সে তো তোমার পরিবারভুক্ত নয়। সে অবশ্যই অসৎকর্মপরায়ণ…।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৪৬) এমন বখে যাওয়া সন্তানকে কঠোর অনুশাসনের আওতায় আনার বিকল্প নেই।