কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভাধীন যানবাহন সংক্রান্ত বিষয়ে চালক ও সর্বসাধারণদের নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত।

প্রকাশিত: ৯:১৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২৩

মো:রাসেল (সিঃ ক্রাইম রিপোর্টার) :কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভাধীন সিএনজি/ইজি বাইক/কার, মাইক্রো, এ্যাম্বুলেন্স (সরকারি ছাড়া) স্ট্যান্ড ইজারা সংক্রান্ত বিষয়ে যাত্রী, ইজারাদার, ইজারা কর্মচারী, চালক ও সর্বসাধারণদের নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা ১০.৪৫ টার দিকে দেবিদ্বার পৌর মিলনায়তনে এ গণশুনানীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিগার সুলতানা।

পৌর মেয়র মো: সাইফুল ইসলাম শামীমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দেবিদ্বার থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নয়ন মিয়া, দেবিদ্বারের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আকতার হোসেন, পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মশিউর রহমান সুমন,  উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগের আহবায়ক ইকবাল হোসেন রুবেল। এছাড়াও গণশুনানিতে বিভিন্ন স্ট্যান্ডের ইজারাদার, চালক ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বিভিন্ন দাবি ও অভিযোগ নিয়ে   খোলামেলা বক্তব্য রাখেন।

গণশুনানিতে অংশ নেওয়া সাধারণ যাত্রীরা বলেন, রাস্তার মোড়ে মোড়ে জিবি ও টোলের নামে চাঁদা আদায় করা হয় যার ফলে ইনকামের অনেকটাকা চলে যায় এই খাতে। এর সব কিছু পরে সাধারণ যাত্রীদের ঘাড়ে। প্রতি কিলোমিটার সরকারি ভাড়া ২ টাকা ৩৫ পয়সা হলেও চালকরা তার ৪-৫ গুণ বেশি নিচ্ছে। তাঁরা সড়কে চাঁদা দিচ্ছে বলে ভাড়া বাড়ায়। রাত একটু বেশি হলে চান্দিনা-দেবিদ্বার সড়কের ভাড়া ১০গুনও বেড়ে যায়। পান্নারপুলে ৮ গুণ বেড়ে যায়। যাত্রীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বড় বড় বাসগুলো যত্রতত্র থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এসব চালকরা ট্রাফিক পুলিশের কথাও শুনেনা। স্বাধীনতা চত্তরের চার পাশে ২৫/৩৫ সিএনজি সবসময় যানজট সৃষ্টি করে রাখে। সরকারি কলেজ রোড ও দুই পাশের ফুটপাত ভ্রাম্যমান ভ্যান চালকদের  দখলে থাকে। তাঁরা যদি ভ্যানগাড়ি রেখে রাস্তা দখল করে রাখে তাহলে মানুষ চলাচলা করে কিভাবে। এই সমস্যাগুলো পৌর মেয়র চিহ্নিত করে রাস্তা ও ফুটপাত উম্মুক্ত করে দিতে হবে। পৌরসভার লাইসেন্সপ্রাপ্ত সিএনিজ ও ইজি বাইক রেখে অবৈধদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। সকলের মতামতের ভিত্তিতে স্ট্যান্ড ইজারা, যাত্রীর ভাড়া, মালিকের দৈনিক আদায় সব কিছু সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করতে হবে। প্রতিটা স্ট্যান্ডে ভাড়া ও টোলের তালিকা টানিয়ে দিতে হবে। পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করতে গিয়ে যাতে যানজট না লাগে চালকেদের দৃষ্টি রাখতে হবে।

গণশুনানিতে বিভিন্ন পরিবহন চালকরা অভিযোগ করে বলেন, ইজারার নামে পৌর এলাকার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে জিবি আদায় করা হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশের চাঁদা, থানার মাসিক চাঁদা, ইজারাদারদের দৈনিক জিবি সব মিলিয়ে আমরা না অন্যায়ের শিকার হচ্ছি। কোন কোন সময় আমাদেরকে রাস্তাঘাটে মারধর ও নির্যাতন করা হয়। ট্রাফিকের মামলা তো আছেই। আমরা এখন দিশেহরা হয়ে গেছি। গাড়ি চালিয়ে দিনশেষে ঘরে বাজার সদাই করে নিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

এর আগে বক্তব্যে থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নয়ন মিয়া ও ট্রাফিক ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আকতার হোসেন সকল প্রকার চাঁদা ও মাসিক চাঁদা নিষিদ্ধ ঘোষনা করেন। যারা থানার নামে কোন চাঁদা আদায় করতে আসবে তাদেরকে ধরে থানায় খবর দেওয়ার জন্য অনুরোধ তাঁরা।

পৌর মেয়র শামীম বলেন, খুব শীঘ্রই পৌরসভা এলাকায় সিএনজি, অটো, মাইক্রো এবং বাসস্ট্যান্ড নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। ব্যাটারী চালিত আটো-ইজিবাইকের কোনো টোল বা জিবি থাকবে না, বার্ষিক রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পোষাকে এরা চলাচল করবে। প্রত্যেক স্ট্যান্ডে ভাড়া ও টোলের চার্ট স্থাপন করা হবে। ইজারাদাররা অনিয়ম করলে তাদের ইজারা বাতিল করা হবে। সড়কে যানজট কমিয়ে আনতে যা করার দরকার পৌরসভা থেকে তাই করা হবে। জনভোগান্তি যাতে না হয় সেদিকে চালক ও ইজারাদারগণ দৃষ্টি রাখতে হবে। একটি সুন্দর পৌরসভা গঠনে তিনি সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।