শীর্ষ পর্যায়েও প্রথম বিভাগের সেই হাবিবুর রহমান সোহান। ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩ হাবিবুর রহমান সোহান। সংগৃহীত ছবি নিজস্ব প্রতিনিধি প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের টি-টোয়েন্টিতে সেটি হাবিবুর রহমান সোহানের প্রথম ম্যাচ। ২০২২ সালে হওয়া সেই টুর্নামেন্টের অভিষেক ম্যাচেই ৫২ বলে ১১৩ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন হাবিবুর। সিরাজগঞ্জের ২৪ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার যে বলকে ইচ্ছেমতো পেটাতে পারেন, তার ধারণা পাওয়া গিয়েছিল সেই ম্যাচে। ওই টুর্নামেন্টে আরো একটি সেঞ্চুরি ছিল হাবিবুরের। সেবার ঢাকা লিগে পূ্র্বাচল স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলতে এসেই সাতশোর ওপর রান করেন হাবিবুর। তবে পাদপ্রদীপের আলো তখনো তাঁকে পুরোপুরি খুঁজে পায়নি। না পাওয়ার কারণটা অনুমেয়। এসব টুর্নামেন্টের খোঁজ কয়জন রাখেন, সেটা নিশ্চয়ই আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এবার তাঁর আর সেই আক্ষেপ থাকার কথা নয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) আজ রেকর্ডগড়া এক সেঞ্চুরি করেছেন হাবিবুর। মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে উত্তরাঞ্চলের হয়ে ৬১ বলে ১১৭ রানের ইনিংস খেলেছেন ২৪ বছর বয়সী ব্যাটার। রেকর্ড অবশ্য হয়েছে ৪৯ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ হওয়ার পরই। মাশরাফি বিন মর্তুজাকে পেছনে ফেলে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক বনে যান হাবিবুর।২০১৬ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৫০ বলে শতক করেছিলেন মাশরাফি। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ছাড়িয়ে যাওয়ার খবরটা হাবিবুর জানতে পারেন আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পর, ‘যখন মাঠে ছিলাম বুঝতে পারিনি। ড্রেসিরুমে যাওয়ার পর সবাই বলাবলি করছিল, এটা লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরি। তখন বিষয়টা বুঝতে পারলাম। তারপর খেলা শেষ হওয়ার পর যখন মোবাইল হাতে নিলাম, তখন দেখলাম এরমধ্যে এটা নিয়ে অনেক নিউজ হয়েছে। তখন আরো নিশ্চিত হলাম।’লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে হাবিবুরের রেকর্ডগড়া দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দিন প্রথমটির সঙ্গেও একটু পরিচয় হওয়া দরকার। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এ বছরের এপ্রিলে গাজী গ্রুপের হয়ে এমনই এক সেঞ্চুরির করেছিলেন। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৬৬ বলে ১৪ চার ও ছয় ছক্কায় ১০১ রান করেছিলেন হাবিবুর। খ্যাতির সঙ্গে অবশ্য হাবিবুরের পরিচয় গত বছর থেকে। রাজশাহীতে হওয়া একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে সিকান্দার রাজা, থিসেরা পেরেরা, আফিফ হোসেনদের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের ছাপিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন ডানহাতি ব্যাটার। ৮ ম্যাচে হাবিবুর করেন ৩৬৯ রান। ডাক পড়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল)। খুলনা টাইগার্সের হয়ে তিন ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাট কথা না বললেও শেষটিতে নিজেকে চেনান হাবিবুর। তাঁর ৯ বলে অপরাজিত ৩০ রান ম্যাচজয়ী ইনিংসে রূপ পেয়েছিল। বিধ্বংসী ব্যাটিংই হাবিবুরকে আলাদা করে পরিচিত করে তুলেছে সবার কাছে। এমন মারমুখী ব্যাটিংয়ের রহস্য হাবিবুরের মুখে শোনা যাক, ‘আমি যখন খেপ ক্রিকেট খেলতাম, তখন থেকে সব সময় মারার চেষ্টা করতাম। কারণ আমি যাদের সঙ্গে খেলতাম, তারা আমার কাছে বেশি রান চাইত। এ জন্য আমার ওপর একটু চাপ থাকত যে আমাকে ভালো খেলতে হবে। আর ভালো খেলতে হলে বেশি মেরে খেলতে হবে, চার-ছক্কা মারতে হবে (হাসি)। ওখান থেকে মেরে খেলার অভ্যাসটা তৈরি হয়েছে।’ তবে ছোটোখাটো গঠনের হাবিবুরকে দেখে যে কারো মনে হতে বাধ্য, ‘এই ছেলে কীভাবে এতো বড় বড় ছক্কা মারতে পারে।’ সেই রহস্যও ভেদ করলেন তিনি, ‘টেপ টেনিসে তো ছয় মারতে হলে অনেক জোরে ব্যাট সুইং করতে হয়। মূলত ওখান থেকেই আমার ব্যাট সুইংয়ের সঙ্গে হিটিং স্কিলের উন্নতি করেছে। আর যেটা করি, আমার চিন্তা থাকে প্রত্যেকটা বল মাঝ ব্যাটে খেলার। মাঝ ব্যাটের সঙ্গে যদি ব্যাট সুইং ভালো থাকে, সেটা বড় ছক্কা হয়। আমার মনে হয় না যে ছক্কা মারতে হলে অনেক বড় শরীর লাগে। এটা স্কিলেরও ব্যাপার।’ এই ২০২০-২১ সালেও টেপ টেনিস টুর্নামেন্ট আর করপোরেট ক্রিকেট লিগ খেলেছেন হাবিবুর। গত দুই বছরে সেই হাবিবুরের জীবনের রং অনেক বদলেছে। এখন হাবিবুর স্বপ্ন বুনেন শীর্ষ পর্যায়েও নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। SHARES খেলাধুলা বিষয়: হাবিবুর রহমান
প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের টি-টোয়েন্টিতে সেটি হাবিবুর রহমান সোহানের প্রথম ম্যাচ। ২০২২ সালে হওয়া সেই টুর্নামেন্টের অভিষেক ম্যাচেই ৫২ বলে ১১৩ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন হাবিবুর। সিরাজগঞ্জের ২৪ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার যে বলকে ইচ্ছেমতো পেটাতে পারেন, তার ধারণা পাওয়া গিয়েছিল সেই ম্যাচে। ওই টুর্নামেন্টে আরো একটি সেঞ্চুরি ছিল হাবিবুরের।
সেবার ঢাকা লিগে পূ্র্বাচল স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলতে এসেই সাতশোর ওপর রান করেন হাবিবুর। তবে পাদপ্রদীপের আলো তখনো তাঁকে পুরোপুরি খুঁজে পায়নি। না পাওয়ার কারণটা অনুমেয়। এসব টুর্নামেন্টের খোঁজ কয়জন রাখেন, সেটা নিশ্চয়ই আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এবার তাঁর আর সেই আক্ষেপ থাকার কথা নয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) আজ রেকর্ডগড়া এক সেঞ্চুরি করেছেন হাবিবুর। মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে উত্তরাঞ্চলের হয়ে ৬১ বলে ১১৭ রানের ইনিংস খেলেছেন ২৪ বছর বয়সী ব্যাটার। রেকর্ড অবশ্য হয়েছে ৪৯ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ হওয়ার পরই।
মাশরাফি বিন মর্তুজাকে পেছনে ফেলে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক বনে যান হাবিবুর।২০১৬ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৫০ বলে শতক করেছিলেন মাশরাফি। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ছাড়িয়ে যাওয়ার খবরটা হাবিবুর জানতে পারেন আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পর, ‘যখন মাঠে ছিলাম বুঝতে পারিনি। ড্রেসিরুমে যাওয়ার পর সবাই বলাবলি করছিল, এটা লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরি। তখন বিষয়টা বুঝতে পারলাম।
তারপর খেলা শেষ হওয়ার পর যখন মোবাইল হাতে নিলাম, তখন দেখলাম এরমধ্যে এটা নিয়ে অনেক নিউজ হয়েছে। তখন আরো নিশ্চিত হলাম।’লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে হাবিবুরের রেকর্ডগড়া দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দিন প্রথমটির সঙ্গেও একটু পরিচয় হওয়া দরকার। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এ বছরের এপ্রিলে গাজী গ্রুপের হয়ে এমনই এক সেঞ্চুরির করেছিলেন। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৬৬ বলে ১৪ চার ও ছয় ছক্কায় ১০১ রান করেছিলেন হাবিবুর। খ্যাতির সঙ্গে অবশ্য হাবিবুরের পরিচয় গত বছর থেকে। রাজশাহীতে হওয়া একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে সিকান্দার রাজা, থিসেরা পেরেরা, আফিফ হোসেনদের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের ছাপিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন ডানহাতি ব্যাটার। ৮ ম্যাচে হাবিবুর করেন ৩৬৯ রান। ডাক পড়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল)। খুলনা টাইগার্সের হয়ে তিন ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাট কথা না বললেও শেষটিতে নিজেকে চেনান হাবিবুর। তাঁর ৯ বলে অপরাজিত ৩০ রান ম্যাচজয়ী ইনিংসে রূপ পেয়েছিল। বিধ্বংসী ব্যাটিংই হাবিবুরকে আলাদা করে পরিচিত করে তুলেছে সবার কাছে। এমন মারমুখী ব্যাটিংয়ের রহস্য হাবিবুরের মুখে শোনা যাক, ‘আমি যখন খেপ ক্রিকেট খেলতাম, তখন থেকে সব সময় মারার চেষ্টা করতাম। কারণ আমি যাদের সঙ্গে খেলতাম, তারা আমার কাছে বেশি রান চাইত। এ জন্য আমার ওপর একটু চাপ থাকত যে আমাকে ভালো খেলতে হবে। আর ভালো খেলতে হলে বেশি মেরে খেলতে হবে, চার-ছক্কা মারতে হবে (হাসি)। ওখান থেকে মেরে খেলার অভ্যাসটা তৈরি হয়েছে।’ তবে ছোটোখাটো গঠনের হাবিবুরকে দেখে যে কারো মনে হতে বাধ্য, ‘এই ছেলে কীভাবে এতো বড় বড় ছক্কা মারতে পারে।’ সেই রহস্যও ভেদ করলেন তিনি, ‘টেপ টেনিসে তো ছয় মারতে হলে অনেক জোরে ব্যাট সুইং করতে হয়। মূলত ওখান থেকেই আমার ব্যাট সুইংয়ের সঙ্গে হিটিং স্কিলের উন্নতি করেছে। আর যেটা করি, আমার চিন্তা থাকে প্রত্যেকটা বল মাঝ ব্যাটে খেলার। মাঝ ব্যাটের সঙ্গে যদি ব্যাট সুইং ভালো থাকে, সেটা বড় ছক্কা হয়। আমার মনে হয় না যে ছক্কা মারতে হলে অনেক বড় শরীর লাগে। এটা স্কিলেরও ব্যাপার।’ এই ২০২০-২১ সালেও টেপ টেনিস টুর্নামেন্ট আর করপোরেট ক্রিকেট লিগ খেলেছেন হাবিবুর। গত দুই বছরে সেই হাবিবুরের জীবনের রং অনেক বদলেছে। এখন হাবিবুর স্বপ্ন বুনেন শীর্ষ পর্যায়েও নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।