কুমিল্লার চান্দিনায় নৌকা প্রতীকের ৬ নেতা-কর্মী আহত; নৌকা ও স্বতন্ত্রের গাড়ি বহরে পৃথক হামলায় ৪ গাড়ি ভাঙচুর।

প্রকাশিত: ৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩

 

কাজী রাশেদ, কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চান্দিনায় ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু সমর্থকরা নৌকা প্রতীকের ৬ নেতা-কর্মীকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। তাদের মধ্যে আশঙ্কা জনক অবস্থায় ৩জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অপরদিকে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর গাড়ি বহরে হামলায় তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর গাড়ি বহরের ৩টি গাড়ি ভাংচুর করার হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মুনতাকিম আশরাফ টিটু। এছাড়া নৌকা প্রতীকের প্রচারণার একটি গাড়ি ভাংচুর করে ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌঁনে ৬টায় উপজেলার গল্লাই কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় নৌকা সমর্থকের উপর হামলা এবং সাড়ে ৬টায় পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড ছায়কোট এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৭টায় নবাবপুর ইউনিয়নের আটচাইল গ্রামে নৌকার প্রার্থীর গাড়ি বহরে ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা হামলা করে একটি গাড়ি ভাংচুর করে।

আহতরা হলেন- উপজেলার গল্লাই গ্রামের কাউসার আলম (৩০) তিনি গল্লাই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক, একই গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে মো. বাশার (৩৭), চেরাগ আলীর ছেলে হযরত আলী (৪৪), কংগাই গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে মনির হোসেন (৪৫), ভাগুরাপাড়া গ্রামের মৃত আদম আলীর ছেলে কোরবান আলী (৬২), গল্লাই গ্রামের আলী আক্কাস এর ছেলে স্বপন (৩৫)। তারা সকলেই নৌকা প্রতীক প্রার্থী অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি’র সমর্থক। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত হযরত আলী, মনির হোসেন ও কোরবান আলীকে কুমেক ও ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

আহত কাউসার আলম জানান- আমাদের এলাকায় একটি উঠান বৈঠক ছিল আমরা গল্লাই কমপ্লেক্স সংলগ্ন একটি দোকানে বসে সকলে কথা বলছিলাম। হঠাৎ ঈগল প্রতীকের নেতা-কর্মীরা এসে আমাদেরকে এলোপাথারী কুপাতে থাকে।

নৌকা প্রতীকের নবাবপুর ইউনিয়নের সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মামুন জানান, নৌকা প্রতীক প্রার্থী অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের সাথে নৌকার প্রচারণা করতে আমরা মাইক্রোবাস যোগে রানীচড়া থেকে নবাবপুর যাওয়ার পথে আটচাইল গ্রামে ঈগল সমর্থিত নেতা-কর্মীরা ঈগল প্রতীকের মিছিল নিয়ে আমাদের গাড়িতে অতর্কিত হামলা করে। এতে আমাদের ভাড়া করা মাইক্রোবাসটি ভেঙ্গে ফেলে।

নৌকা প্রতীক প্রার্থীর নির্বাচনী সমন্বয়ক ও সাবেক পৌর মেয়র মো. মফিজুল ইসলাম জানান, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে আসছে ঈগল প্রতীক প্রার্থীর সমর্থকরা। আজ স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটুর নির্দেশে আমাদের নেতা-কর্মীদের এমন জঘন্য ভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়। হাসপাতালে ৬জন আনলেও এলাকায় কমবেশি আরও ৮-১০জন আহত প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। আমরা এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানাই।

এদিকে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চান্দিনা পৌরসভার ছায়কোট এলাকায় ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটুর গাড়ি বহরে অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ ৮জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

তিনি জানান- আমি নেতা-কর্মী নিয়ে গণসংযোগ শেষে ফেরার পথে নৌকা সমর্থিত নেতা-কর্মীরা আমার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। তারা আমাদের ৩টি গাড়ি ভাংচুর করে এবং আমাদের তিন নেতা-কর্মী আহত করে।

তারা হলো- গল্লাই গ্রামের মো. জুয়েল এর ছেলে মো. মনির (২০), একই গ্রামের আবুল কাশেম এর ছেলে কামাল হোসেন (৩৭), নূর ইসলাম এর ছেলে মো. রিয়াদুল (২৪)। এ হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু।

চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ জানান, দুইটি পৃথক ঘটনার শুনার পরপরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এক পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অপর পক্ষের লিখিত অভিযোগ এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।