রূপগঞ্জের ক্যাসিনোকান্ডের সাজাপ্রাপ্ত সেলিম প্রধান এবার ভোটপ্রার্থী

প্রকাশিত: ৮:২৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২৪

মোঃআবু কাওছার মিঠু

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন সেলিম প্রধান। আজ ২০ শে এপ্রিল একটি কনভেনশন হলে,  দুপুরে সংবাদ কর্মীদের সামনে উনাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন।

ক্যাসিনো–কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সেলিম প্রধান। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় চার বছর সাজাও খেটেছেন। আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন। অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সাজাপ্রাপ্ত সেলিম প্রধান এবার উপজেলা নির্বাচন করছেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।

এরই মধ্যে আলোচিত এই ব্যক্তির গণসংযোগের কিছু ভিডিও চিত্র সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এ নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উৎসুক্য তৈরি হয়েছে।
তবে উপজেলা পরিষদ আইন বলছে, কোনো নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার এবং থাকবার যোগ্য হবেন না।
এ বিষয়ে সেলিম প্রধান বলেন, দুদকের মামলায় আপিল ও সাজা স্থগিত করতে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। তাই নির্বাচন করতে তাঁর আইনগত কোনো বাধা নেই।
ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাইল্যান্ডগামী বিমান থেকে নামিয়ে এনে সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর তাঁর বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে দেশি–বিদেশি মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলেছিল, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো বা অনলাইন জুয়ার মূল হোতা। তিনি প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেলিম প্রধান বাংলাদেশে প্রথম অনলাইন ক্যাসিনো চালু করেন। তিনি গুলশান ও বনানীতে পি ২৪ এবং টি ২১ অনলাইন নামে অনলাইনে ভিডিও গেম খেলার প্ল্যাটফর্ম চালু করেন। পরে ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সেগুলোকে অনলাইন ক্যাসিনোয় রূপান্তর করেন। ওই অনলাইন ক্যাসিনোর প্রধান কেন্দ্র ছিল ফিলিপাইনে।
সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ছাড়াও ঢাকার গুলশান থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা হয়। বিচারাধীন এসব মামলায় জামিনে রয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল দুদকের করা মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত। তাতে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের দুই ধারায় সেলিম প্রধানকে চার বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। ইতিমধ্যে তাঁর সাজাভোগ শেষ হওয়ায় এবং বাকি মামলায় জামিন পাওয়ায় গত বছরের অক্টোবরে মুক্তি পান তিনি। সাজার বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে যে আপিল করেছেন, সেটা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে বলেছেন, কোনো ব্যক্তির দুই বছরের বেশি দণ্ড ও সাজা হলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সাজা স্থগিত থাকলেও নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না; যদি সাজা উপযুক্ত আদালতে বাতিল না হয়।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অতীতে সাজাপ্রাপ্ত হলেও আপিল করে নির্বাচন করতে পারতেন। কিন্তু হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী এখন মনে হয় না সেলিম প্রধান নির্বাচন করতে পারবেন। খালেদা জিয়াও এ কারণে নির্বাচন করতে পারেননি। সূত্র : প্রথম আলো