পাসপোর্ট অফিসের কোটিপতি নিরাপত্তাকর্মী শাহাদাত গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২৪

 

আবু নোহান শ্যামলঃ( সি:

ক্রাইম রিপোর্টার)
রাজধানীর কাফরুলে তিন কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি, মিরপুরে ফ্ল্যাট, নারাণয়নগঞ্জে কয়েক বিঘা জমি, নাটোরের সিংড়ায়ে অর্ধকোটি টাকা মূল্যের জমি ও বাগানবাড়ি! শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এসবের মালিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তাকর্মী শাহাদাত হোসেন।
তিনি নাটোরের সিংড়া উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের কাদিরগাছা এলাকার বাসিন্দা। চাকরি করছিলেন পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে। তার মেয়েও চাকরি করছেন ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) অধীনে বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় যে ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের একজন শাহাদাত হোসেন। বরাবরই পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।
সুত জানায়, ৬ থেকে ৭ বছর আগেও সম্পত্তি বলতে তার তেমন কিছু ছিল না । শূন্য থেকে এখন অন্তত ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা মূলের সম্পত্তির মালিক তিনি। যার সবকিছুই তিনি গড়েছেন প্রশ্নপত্র ফাঁস করে।
সিংড়ার স্থানীয় লোকজন জানান, পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন শাহাদাত হোসেন। বছরে দুই- একবার গ্রামে আসেন। তারপরও গ্রামের বাড়িতে ৩ বিঘার ওপর একটি ফলের বাগান ছাড়াও বিলে কৃষি জমি কিনেছেন ৫ বিঘা।
শাহাদতের গ্রামের জমিজমা দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন তারই খালাতো ভাই হানিফ আলী। তিনি বলেন, পৈত্তিক সূত্রে শাহাদাত তেমন কোনো সম্পদের মালিক ছিলেন না। কিন্তু গত কয়েক বছরে তিনি এসব সম্পদের মালিক হয়েছেন।
শাহাদত হোসেনের চাচাত ভাই হাফিজুর রহমান জানান, সিংড়ার সাবেক সচিব মখলেছুর রহমানের মাধ্যমে চাকরি পান শাহাদাত। চাকরি জীবনে শাহাদত প্রথমে কুমিল্লা পাসপোর্ট অফিসে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে যোগদান করেছিলেন। এরপর রাজশাহী থেকে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে আছেন।
হঠাৎ করেই শাহাদাতের চলাফেরায় পরিবর্তন, গ্রামে জমিজমা কেনা দেখে এলাকার মানুষ অবাক। সামান্য একজন নিরাপত্তাকর্মী কীভাবে এত সম্পদের মালিক হলেন এ প্রশ্ন ছিল সবার মুখে মুখে বলে জানান, তাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন। এখন তারা জানেন, প্রশ্ন ফাঁসের মাদ্ধমে তিনি এত অর্থের মালিক হয়েছেন।
সূত্র বলছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসে শাহাদাতকে সহায়তা করতেন পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মামনুর রশিদ। তিনিও বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূল হোতা সৈয়দ আবেদ আলী, খলিলুর রহমান ও সাজেদুল ইসলামের সঙ্গে শাহাদাতের পরিচয় হয় পাসপোর্ট অফিসে চাকরির সুবাদে। শাহাদাত গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত এলাকার মানুষজন তাকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে জানতেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর শাহাদাতের আসল পরিচয় সামনে আসে। সে আসলে একজন নিরাপত্তা কর্মী।