মোবাইল পর্ণোগ্রাফি সামাজিক অবক্ষয় শঙ্কাজনক।

প্রকাশিত: ১:১৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩

শিবব্রত (বিশেষ প্রতিনিধি)
************************************

যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মোবাইল ফোন এখন আর শুধু কথা বলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। চীনের সুবাদে ইন্টারনেট,চ্যাটিং,অডিও, ভিডিওসহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ মোবাইল সেটের মূল্য সকলের সাধ্যের মধ্যেই আছে। আকাশ সংস্কৃতি, ইন্টারনেট মোবাইল ভিডিও র মতো প্রযুক্তি এখন সবার জন্য অবারিত। নিত্য নতুন বহুরুপী সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ মোবাইল সেট তরুনদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
মোবাইল সেট নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাতামাতি লক্ষ্য করা যায় বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে।কখনো প্রয়োজনে কখনো সময়ের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে অভিভাবকরা বাধ্য হয়েই অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের হাতে তুলে দিচ্ছেন মোবাইল নামক যন্ত্র্। কিন্তু কখনও কি অভিভাবকরা চিন্তা করে দেখেছেন, মোবাইলের পার্শ্ব কিছু অপব্যবহারের কারনে তার সন্তান বিপথগামী হয়ে পড়েছে!
সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদের দিকে একটু নজর দিলেই বুঝা যায় মোবাইল মানুষের নৈতিকতা কে কিভাবে ধ্বংস করেছে।খুন, ধর্ষণ , ইভটিজিংসহ যে সকল ঘটনা অহরহ ঘটে চলেছে তার পিছনে মোবাইলের একটা ভূমিকা বরাবরই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। লেখাপড়া ফাঁকি দিয়ে ফেসবুকে চ্যাটিং করে কিংবা মোবাইলে রাত ভর কথা বলে কেউ কেউ রাত পার করে দিচ্ছে।কথা বলার টাকা যোগাতে বিভিন্ন সময় তারা অবৈধ পথে পা বাড়াচ্ছে। হারিয়ে ফেলেছে নৈতিক চরিত্র ও চিন্তার মান।তবে সব থেকে শঙ্কাজনক হচ্ছে মোবাইল পর্ণোগ্রাফি। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ জড়িয়ে পড়েছে মোবাইল পর্ণোগ্রাফি বা ব্লু ফিল্ম আসক্তিতে। ইন্টারনেটের সুবাদে এবং বিভিন্ন মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টার থেকে গান লোড করার নামে শিক্ষার্থীরা সুলভেই তাদের মোবাইল মেমোরিতে নগ্ন ভিডিও ক্লিপস লোড করে নিচ্ছে।এসব নগ্ন ভিডিও অনেকেই মিলে দেখছে এবং শেয়ারিং করে এক হাত থেকে অন্য হাত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সবার হাতে হাতে। শুধু তাই নয় ক্লাসের পিছনের বেঞ্চে বসে শিক্ষকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মোবাইলের অপব্যবহারের কথা ও শুনা যাচ্ছে। ভাবনার বিষয় হচ্ছে-এ আসক্তি শুধু ছেলেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, মেয়েদের ও একটা বড় অংশ ব্লূ ফিল্ম আসক্তিতে জড়িয়ে পড়েছে।এর ফলে খুব অল্প বয়সেই ছেলে মেয়েদের মাঝে যৌন আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।যার কারণে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ,যৌন হয়রানি, ইভটিজিং, আত্মহত্যা, অপহরণসহ অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছে অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা। আধুনিকতার নামে এই উগ্র আধুনিকতার কবলে পড়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দিন দিন অতি দ্রুত ধংসের দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে এই ধংসের হাত থেকে বাঁচাতে তাদের নৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা সব থেকে অতি জরুরী। পাশাপাশি সন্তানদের মোবাইল সেট কিনে দেওয়ার সময় অভিভাবকদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।যাতে করে মোবাইলের অপব্যবহার না হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে করে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠা মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টার গুলো থেকে মোবাইল পর্ণোগ্রাফি ছড়িয়ে পড়তে না পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ সংশ্লিষ্ট দের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পড়ুয়াদের মোবাইল ব্যবহারের ব্যপারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম প্রযোগ করা এবং এই ব্যাপারে ভেবে দেখা জরুরি হয়ে পড়েছে। মহাজোট সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কে এগিয়ে নিতে হলে সব থেকে এগিয়ে আসতে হবে তরুণ প্রজন্মকে। কিন্তু সেই ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার করে কেউ যেন বিপথগামী বা বিপদগ্রস্ত না হয় সেই বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের আরো দায়িত্বশীল ভুমিকা রাখা এবং আশু পদক্ষেপ নেয়া একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন দেশের অধিকাংশ মানুষ।