গুনাহের কারণে মানুষ যে ছয় শাস্তির মুখোমুখী হয় ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৫:০৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ নিজস্ব প্রতিবেদক আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ অমান্য করাই গুনাহ বা পাপ। ছোট হোক বা বড়, গুনাহকে হালকা ভাবা উচিত নয়। কারণ ছোট গুনাহ ধীরে ধীরে বড় গুনাহের দিকে নিয়ে যায় এবং গুনাহ করতে করতে একটা সময় গুনাহকারী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। গুনাহের বহুবিধ ক্ষতি আছে। আলোচ্য প্রবন্ধে মৌলিক কিছু ক্ষতি নিয়ে আলোচনা করা হলো— ১. রিজিক থেকে বঞ্চিত হয় রিজিক আল্লাহপ্রদত্ত অনেক বড় নিয়ামত। আর মানুষ নিয়ামত থেকে তখনই বঞ্চিত হয়, যখন অকৃতজ্ঞ হয়ে সৃষ্টিকর্তার নাফরমানিতে লিপ্ত হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের (নিয়ামত) বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৭) নবী কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই মানুষ তার গুনাহের কারণে রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০২২) ২. ইলম থেকে বঞ্চিত হওয়া ইলম আল্লাহপ্রদত্ত নূর, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি তার জন্য এক আলোর ব্যবস্থা করেছি, যা নিয়ে সে মানুষের মধ্যে চলে।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১২২) আর গুনাহ ওই নূর বা আলোকে নিভিয়ে দেয়, এ জন্য গুনাহের কারণে মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পায়। অনেক কিছু শিখেও ভুলে যায়। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, অবশ্যই আমি মনে করি, মানুষ তার শিক্ষা করা ইলম ভুলে যায় তার কৃত গুনাহর কারণে। (জামিউ বয়ানিল ইলম : ১/১৯৬) ৩. অন্তরে কালো দাগ পড়ে যায় গুনাহের দরুণ মানুষের অন্তরে মরিচা ধরে যায়। হৃদয়ে কালো দাগ পড়ে যায়। ফলে তা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। তখন ভালো কথা আর ভালো লাগে না, চাইলেই ভালো কাজে মন বসানো যায় না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন কোন মুমিন গুনাহ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে তারপর সে যখন তাওবা করে এবং গুনাহ থেকে বিরত থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, তখন তার অন্তর পরিষ্কার হয়ে যায়। আর যখন মুমিন আবারও গুনাহ করে তখন অন্তরের কালো দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে অন্তরে আল্লাহর কোরআনে বর্ণিত ‘রাইন’ তথা মরিচা প্রভাব বিস্তার করে।’ ( মিশকাত, হাদিস : ২২৮১) ৪. কর্ম সম্পাদন কঠিন হয়ে যায় যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর অনুগত হয়ে চলে, আল্লাহ তাআলা তাদের সময়ে বরকত দান করেন। ফলে খুব সহজেই, খুব কম সময়েই তারা নিজ নিজ কাজ সম্পন্ন করতে পারে। আর যারা সৃষ্টিকর্তার নাফরমানিতে লিপ্ত থাকে তাদের মধ্যে অলসতা জেঁকে বসে আর তাদের জন্য কর্মসম্পাদন কঠিন হয়ে পড়ে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার যাবতীয় কাজ সহজ করে দেন।’ (সুরা তালাক, আয়াত : ৪) ৫. গুনাহ ছাড়া কঠিন হয়ে যায় গুনাহের প্রথম পর্যায়ে আমরা ভাবি, আজ না হয় গুনাহটা করেই ফেলি। তারপর তা ছেড়ে দিয়ে তাওবা করে ফেলব। কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরি উল্টো। কারণ একটি গুনাহ অন্য গুনাহের জন্ম দেয়। একটি গুনাহের কারণে আরেকটি গুনাহ সংঘটিত হয়। ফলে গুনাহ ছেড়ে রবের দিকে ফিরে আসা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য যথাসম্ভব নিজেকে গুনাহ থেকে বিরত রাখা। গুনাহ সংঘটিত হয়ে গেলে কালক্ষেপণ না করে তাওবা করে নেয়া। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গুনাহ পরিত্যাগ করো।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১২০) ৬. পরকালে শাস্তির মুখোমুখি হওয়া গুনাহের কারণে দুনিয়াতে যেভাবে নানা রকম সংকট আর সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, তেমনি পরকালেও আল্লাহ তাআলার শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা প্রকাশ্য ও গোপন পাপ বর্জন করো, যারা পাপ করে, অচিরেই তাদের পাপের সমুচিত শাস্তি দেওয়া হবে।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১২০) তাই, সময় থাকতেই গুনাহ ছেড়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসি। মহান আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। SHARES ইসলাম বিষয়: ছয় শাস্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ অমান্য করাই গুনাহ বা পাপ। ছোট হোক বা বড়, গুনাহকে হালকা ভাবা উচিত নয়। কারণ ছোট গুনাহ ধীরে ধীরে বড় গুনাহের দিকে নিয়ে যায় এবং গুনাহ করতে করতে একটা সময় গুনাহকারী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। গুনাহের বহুবিধ ক্ষতি আছে।
আলোচ্য প্রবন্ধে মৌলিক কিছু ক্ষতি নিয়ে আলোচনা করা হলো— ১. রিজিক থেকে বঞ্চিত হয় রিজিক আল্লাহপ্রদত্ত অনেক বড় নিয়ামত। আর মানুষ নিয়ামত থেকে তখনই বঞ্চিত হয়, যখন অকৃতজ্ঞ হয়ে সৃষ্টিকর্তার নাফরমানিতে লিপ্ত হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের (নিয়ামত) বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৭) নবী কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই মানুষ তার গুনাহের কারণে রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।
’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০২২) ২. ইলম থেকে বঞ্চিত হওয়া ইলম আল্লাহপ্রদত্ত নূর, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি তার জন্য এক আলোর ব্যবস্থা করেছি, যা নিয়ে সে মানুষের মধ্যে চলে।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১২২) আর গুনাহ ওই নূর বা আলোকে নিভিয়ে দেয়, এ জন্য গুনাহের কারণে মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পায়। অনেক কিছু শিখেও ভুলে যায়। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, অবশ্যই আমি মনে করি, মানুষ তার শিক্ষা করা ইলম ভুলে যায় তার কৃত গুনাহর কারণে।
(জামিউ বয়ানিল ইলম : ১/১৯৬) ৩. অন্তরে কালো দাগ পড়ে যায় গুনাহের দরুণ মানুষের অন্তরে মরিচা ধরে যায়। হৃদয়ে কালো দাগ পড়ে যায়। ফলে তা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। তখন ভালো কথা আর ভালো লাগে না, চাইলেই ভালো কাজে মন বসানো যায় না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন কোন মুমিন গুনাহ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে তারপর সে যখন তাওবা করে এবং গুনাহ থেকে বিরত থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, তখন তার অন্তর পরিষ্কার হয়ে যায়।
আর যখন মুমিন আবারও গুনাহ করে তখন অন্তরের কালো দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে অন্তরে আল্লাহর কোরআনে বর্ণিত ‘রাইন’ তথা মরিচা প্রভাব বিস্তার করে।’ ( মিশকাত, হাদিস : ২২৮১) ৪. কর্ম সম্পাদন কঠিন হয়ে যায় যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর অনুগত হয়ে চলে, আল্লাহ তাআলা তাদের সময়ে বরকত দান করেন। ফলে খুব সহজেই, খুব কম সময়েই তারা নিজ নিজ কাজ সম্পন্ন করতে পারে। আর যারা সৃষ্টিকর্তার নাফরমানিতে লিপ্ত থাকে তাদের মধ্যে অলসতা জেঁকে বসে আর তাদের জন্য কর্মসম্পাদন কঠিন হয়ে পড়ে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার যাবতীয় কাজ সহজ করে দেন।’ (সুরা তালাক, আয়াত : ৪) ৫. গুনাহ ছাড়া কঠিন হয়ে যায় গুনাহের প্রথম পর্যায়ে আমরা ভাবি, আজ না হয় গুনাহটা করেই ফেলি। তারপর তা ছেড়ে দিয়ে তাওবা করে ফেলব। কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরি উল্টো। কারণ একটি গুনাহ অন্য গুনাহের জন্ম দেয়। একটি গুনাহের কারণে আরেকটি গুনাহ সংঘটিত হয়। ফলে গুনাহ ছেড়ে রবের দিকে ফিরে আসা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য যথাসম্ভব নিজেকে গুনাহ থেকে বিরত রাখা। গুনাহ সংঘটিত হয়ে গেলে কালক্ষেপণ না করে তাওবা করে নেয়া। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গুনাহ পরিত্যাগ করো।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১২০) ৬. পরকালে শাস্তির মুখোমুখি হওয়া গুনাহের কারণে দুনিয়াতে যেভাবে নানা রকম সংকট আর সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, তেমনি পরকালেও আল্লাহ তাআলার শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা প্রকাশ্য ও গোপন পাপ বর্জন করো, যারা পাপ করে, অচিরেই তাদের পাপের সমুচিত শাস্তি দেওয়া হবে।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১২০) তাই, সময় থাকতেই গুনাহ ছেড়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসি। মহান আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।