রাজনীতিতেও সফল বিচরণ যেসব ভিনদেশি তারকার

প্রকাশিত: ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২৪
শোয়ার্জনেগারের অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ হিসেবে অভিষেক ঘটে ২০০৩ সালে।

নিজস্ব প্রতিনিধি

অভিনয় জগৎ থেকে রাজনীতির মাঠে পা রাখা তারকার সংখ্যা নেহায়েত কম নয় পৃথিবীজুড়ে। পৃথিবীর বহু দেশে এ অনুশীলন হয়ে আসছে অনেক কাল আগে থেকেই। কেবল অভিনয়ে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন তাঁরা, বিষয়টি এমন নয়। বরং রাজনীতির মাঠে নেমেও সফলতার চাবি ঘুরিয়েছেন।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, এমন কয়েকজন তারকার ব্যাপারে যাঁরা অভিনয় দিয়ে টেলিভিশন পর্দায় নিজেদের পরিচিতি গড়ে তুললেও পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে থিতু হয়েছেন, পেয়েছেন সফলতাও। 

আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার
আশি-নব্বইয়ের দশকে বড় হয়েছেন যাঁরা তাঁদের কাছে বেশ পরিচিত মুখ আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার। একজন বডি বিল্ডার থেকে অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। দ্য টার্মিনেটর, কোনান দ্য বারবারিয়ান এবং টোটাল রিকলের মতো ক্লাসিক অ্যাকশন এবং সাই-ফাই চলচ্চিত্রের তারকা হিসেবে ভীষণ জনপ্রিয় এ তারকা।

যাঁরা সে সময়কালের তাঁরা তো জানেনই যে শোয়ার্জনেগারের অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ হিসেবে অভিষেক ঘটে ২০০৩ সালে। ক্যালিফোর্নিয়ার তৎকালীন গভর্নর গ্রে ডেভিসকে সরাতে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে একটি বিশেষ প্রত্যাহার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। 

শোয়ার্জনেগার  সে বছর ভীষণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন ভোটের মাঠেই। প্রায় ৪৮.৬ ভাগ ভোট পেয়ে সে বছর গভর্নর হিসেবে নির্বাচিত হন।

রাজনীতিতেও তিনি যে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন এর প্রমাণ পাওয়া যায় ২০০৬ সালে তাঁর পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা দিয়ে। ২০১১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। 

রোনাল্ড রিগান

রোনাল্ড
১৯৬৬ সালে ঝলমলে অভিনয় জগৎ থেকে রোনাল্ড রিগানের অভিষেক ঘটে রাজনীতিতে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নির্বাচিত হওয়ার পর

১৯৩৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘লাভ ইজ অন দ্য এয়ার’ চলচ্চিত্র যাঁরা দেখেছেন তাঁদের নিশ্চয়ই মনে আছে অ্যান্ডি ম্যাককেইনের কথাও। এ চরিত্রে অভিনয় করেন রোনাল্ড রিগান। ১৯৩০ সালের শেষের দিকে, রিগান ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে আসেন এবং রুপালি পর্দার ঝলমলে জগতে তাঁর প্রবেশ ঘটে।

 লাভ ইজ অন দ্য এয়ার, ডার্ক ভিক্টরি এবং নুট রকনে, অল আমেরিকানের মতো ছবিতে অভিনয় করেন। তবে ১৯৪২ সালে তাঁর অভিনীত ‘কিংস রো’ মুক্তির পর রাতারাতি তারকা বনে যান যেন এ অভিনেতা। এরপর একাধিক চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। 

ঝলমলে অভিনয় জগৎ থেকে এ অভিনতার অভিষেক ঘটে রাজনীতিতে ১৯৬৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নির্বাচিত হওয়ার পর। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি, ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতি মনোনয়নের জন্য প্রচারণা চালান। তবে সে বছর রিপাবলিকান প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাইমারিতে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জেরাল্ড ফোর্ডের কাছে হেরে যান তিনি। তবে থেমে থাকেননি তিনি, তারপর ১৯৮০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৎকালীন ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের বিপরীতে অনেক ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। সফলভাবে রোনাল্ড রিগান দুটি পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮৯ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

সিনথিয়া নিক্সন 
আমেরিকান কমেডি, ড্রামা সিরিজ ‘সেক্স এবং দ্য সিটি’তে মিরান্ডা হবসের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য বেশ পরিচিতি পেয়েছিলেন অভিনেত্রী সিনথিয়া নিক্সন। ২০১৮ সালে, জনপ্রিয় সে ড্রামা শো শেষ হওয়ার ১৪ বছর পরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সে সময় নিক্সন ডেমোক্রেটিক পদপ্রার্থী অ্যান্ড্রু কুওমোর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিউ ইয়র্কের গভর্নরের জন্য তাঁর প্রচারণা চালিয়েছিলেন। তিনি মূলত আয় বৈষম্য, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তাঁর প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে সেবার তিনি ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে কুওমোর কাছে হেরেছিলেন।

নিক্সন
আমেরিকান কমেডি, ড্রামা সিরিজ ‘সেক্স এবং দ্য সিটি’তে মিরান্ডা হবসের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য বেশ পরিচিতি পেয়েছিলেন অভিনেত্রী সিনথিয়া নিক্সন

তবে এ অভিনেত্রী আমেরিকার ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্টের সদস্য। কেবল তা-ই নয়, তিনি উকিল হিসেবে পাবলিক এডুকেশনের পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন।

কিরণ খের
বলিউড চলচ্চিত্রে কিরণ খের তাঁর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে শক্তিশালী স্থান করে নিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে এ অভিনেত্রীর রাজনীতিতে অভিষেক ঘটে। অবশ্য রাজনৈতিক কর্মজীবন শুরু করেছিলেন অলাভজনক সংস্থাগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকার মাধ্যমে। যেমন ‘লাদলি’কন্যাশিশু হত্যার বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান এবং ‘রোকো ক্যান্সার’ক্যান্সার সচেতনতার প্রচারাভিযান। এ অভিনেত্রীর রাজনীতিতে প্রবেশ এবং চণ্ডিগড় থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ২০১৪ সালে। সে বছর তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিতও হয়েছিলেন।

কিরণ
২০১৪ সালে এ অভিনেত্রীর রাজনীতিতে অভিষেক ঘটে কিরণ খেরের

হেমা মালিনী
বলিউডের সব সময়ের ড্রিম গার্ল হেমা মালিনী। এ অভিনেত্রী অভিনয় এ যেমন সফলতার চিহ্ন রেখেছেন তেমনি রাজনীতিতেও। এ  অভিনেত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৪ সালে বিজেপিতে যোগ দেন এবং বিজেপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে, তিনি মথুরার জয়ন্ত চৌধুরীকে পরাজিত করার পরে লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজনীতিতে এখনো সক্রিয় অবস্থান রয়েছে তাঁর।

হেমা
বলিউডের ড্রিম গার্ল হেমা মালিনী অভিনয়ে যেমন সফলতার চিহ্ন রেখেছেন তেমনি রাজনীতিতেও