কুমিল্লার লালমাই এ প্রবাসীর স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে উধাও

প্রকাশিত: ১:৫০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪

এটিএম মাজহারুল ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা জেলা।

কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় পেরুল দক্ষিন ইউনিয়ন পরিষদ এর দোশারী চোঁ গ্রামের সৌদিআরব প্রবাসীর স্ত্রী কামরুন্নাহার দুই সন্তান নিয়ে পরকীয়ার টানে প্রেমিকের সঙ্গে উধাও হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিগত বৃহস্পতিবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রি: আনুমানিক সকাল ১০ টায় এ ঘটনা ঘটে।
পারিবারিক সূত্রে উল্লেখিত ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩খ্রি: (বৃহস্পতিবার) পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে জ্ঞাত হওয়ার পর খোঁজ খবর নিয়ে তাদের সন্ধান না পাওয়ার কারণে কামরুন্নাহারের স্বামীর বড় ভাই খন্দকার হুমায়ুন কবির ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রি: (সোমবার) লালমাই থানায় এবং ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪খ্রি: (সোমবার) কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৯ বছর আগে চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকার মোস্তফা কামালের মেয়ে কামরুন্নাহার (৩১) সঙ্গে পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের দোশারী চোঁ গ্রামের আবুল খায়ের খন্দকারের ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী খন্দকার রেজাউল করিম (৩৫) বিয়ে হয়। তাদের ঘরে একটি ছেলে ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ১ম সন্তান আবু ওবায়দা আরাফাত (৬), এবং দ্বিতীয় সন্তান ওয়াছিফা আক্তার (৩)।
সৌদিআরব প্রবাসী খন্দকার রেজাউল করিম এক বছর আগে সৌদিআরব যাওয়ার পর প্রতিবেশী মো: সাহাবউদ্দিন (২৫) সঙ্গে কামরুন্নাহারের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিভিন্ন সময়ে মুঠোফোন ইমো ও মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী কামরুন্নাহারকে উত্যক্ত করতেন বিষয়টি নিশ্চিতভাবে জানতে পেরে তাৎক্ষণিক সাহাবউদ্দিনকে সর্তক করে দেয়া হয়েছে, সাহাবউদ্দিন এই ব্যাপারে আর কখনো উত্যক্ত করবেন না বলে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে ওয়াদা করেছিলেন।
পরবর্তীতে ১৪ডিসেম্বর ২০২৩খ্রি: (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টায় তার দুই সন্তান সহ প্রয়োজনীয় কাপড়, ৪ভরি স্বর্ণঅলংকার নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি।
এ বিষয়ে জানতে সাহাবউদ্দিনের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে। পরিবারের লোকজন জানায় সাহাবউদ্দিন কয়েকদিন ধরে বাড়িতে নেই।
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা লালমাই (এসআই) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি সাহাবউদ্দিন পরিবার তাদের ছেলে ও ওই নারীকে উদ্ধার করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে সময় চেয়েছি, কিন্তু অনেক সময পেরিয়ে যাওযার পরও এস আই শাখাওয়াত ভিকটিম উদ্ধারের কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তাই এতে সমাধান না পেয়ে অভিযোগের বাদী খন্দকার হুমায়ন কবির, তার ভাতিজা ও ভাতিজি উদ্ধারের জন্য গত ২০-০২-২৪ ইং,তারিখে কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ১৪৩/২৪। মামলার পর উক্ত মামলার আসামি শাহাবুদ্দিন বিভিন্নভাবে লোকজন দিয়ে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে একই গ্রামের সর্দার পরিচিত এবং অত্র এলাকার নেতা, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মোঃ শরিফুল ইসলাম আদলতের মামলার কথা জেনেও আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে ভিকটিমকে হাজির করে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এর একদিন পরেই ভিকটিম সর্দার পরিচিত শরিফুল ইসলাম মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে থানা পুলিশকে এমনকি অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বারকে না জানিয়ে তার নিজের দায়িত্বে ভিকটিমকে বাচ্ছাসহ নিয়ে এসে রাতের বেলা বাদীকে জোরপূর্বক হাজির করে রফাদপার চেষ্টা করাকালে লালমাই থানা পুলিশ এবং কিছু সাংবাদিক খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ঐ কথিত নেতা (শরিফ) এর সহায়তায় অপহরণকৃত দুই বাচ্ছাকে আটকিয়ে রেখে দিয়ে ভিকটিমকে আবারও পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। তখন এস.আই শাখাওয়াত সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে নেতা শরিফ এর সাথে গোপনে কথা বলে এখান থেকে চলে আসে। পরক্ষনে সাংবাদিকগন এস.আই শাখাওয়াতকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, নেতা শরিফকে বলেছি আগামীকাল এর মধ্যে ভিকটিমকে হাজির করে থানার নিয়ে আসার জন্য। কিন্ত তারও দুইদিন পার হওয়ার তার বিরুদ্ধে এস.আই শাখাওয়াত কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করলে তারা মুঠোফোন বলেন, শরিফের কাজ হচ্ছে এলাকার লোকজনের ক্ষতি করে টাকা কামানো। ঐদিন সে যেকাজ করেছে সেটা সে সম্পুর্ন আইন অমান্য করেছে। শাহাবুদ্দিন সামাজিকভাবে নিকৃষ্ট একটা কাজ করেছে, তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দরকার এবং যারা এ অন্যায়ের সহযোগিতা করেছে তাদেরও বিচার হওয়া প্রয়োজন। আমার কোন সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমি করবো।