ফেনীর পরশুরামে ভারত থেকে গরু না আসলে লাভের আশা খামারিদের ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৮:১২ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০২৪ শিবব্রত (বিশেষ প্রতিনিধি) ———————————————————– আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা কে সামনে রেখে পরশুরাম উপজেলায় কোরবানির জন্য খামারে ষাঁড়, মহিষ, ছাগল, ওভেড়া পালন ও প্রাকৃতিক উপায়ে কাঁচা ঘাস, খড়, বিভিন্ন প্রকারের ভুষি, ডালের গুঁড়া, ভাত, খৈল ও কিছু ভিটামিন খাইয়ে মোটাতাজা করছেন গো-খামারিরা। বাড়তি লাভের আশায় খামারের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে পশুর বাড়তি যত্ন আর লালন পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারি ও গৃহস্থ পরিবার। পরশুরামে ১০,০০০ গবাদি পশুর মধ্যে গরুর, সংখ্যা রয়েছে ৫ হাজার ছাগল, ৩ হাজার মহিষ ১০০০ হাজার ভেড়া১০০০ কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। উপজেলায় ছোট বড় খামারি মিলে রয়েছে ৪৫৬টি । পরশুরামে কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা ৮ হাজার ।স্হানীয় কোরবানি মিটিয়ে পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন হাটের চাহিদা পুরণ করে থাকে এখানকার গবাদি পশু দিয়ে। এ বছর পরশুরাম উপজেলায় প্রায় ১০ কোটি টাকার মোটাতাজা করা পশু ক্রয়-বিক্রয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে পরশুরাম উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। এদিকে বেড়েই চলছে গো-খাদ্যের দাম। খামারিদের এখন প্রতিদিনই গো-খাদ্যে খরচ বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ। ভারত থেকে গরু আসলে ন্যায্য মূল্যে গরু বিক্রি করতে না পারলে খামারিরা ফলস্বরূপ লোকসান গুনতে হবে অনেক, যার কারনে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। খামারিরা গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি তুলে ধরে বলেন, ৩৭ কেজি ওজনের এক বস্তা গমের ভুষির বর্তমান বাজার মূল্য ২ হাজার ২০০ টাকা, যা গত বছর ছিল ১ হাজার৮০০ টাকা। ৭৪ কেজির এক বস্তা খৈল এখন ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা, গত বছর ছিল ২ হাজার ৮০০ টাকা। ৫০ কেজির ধানের কুঁড়ার দাম ১০০০ টাকা, গত বছর ছিল ৭০০ টাকা। বেড়েছে শুকনো খড়ের দাম ও।। এছাড়া খেসারি ও ছোলার ভুসির দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ থেকে ২৯ টাকা। গত কয়েক বছরে ৭ থেকে ৮ দফা গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। খামার শ্রমিকদের দুই বছর আগে বেতন ছিল ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এখন ১৫ থেকে ২৯ হাজারের নিচে কোনো শ্রমিক কাজ করতে চায় না। পশু পালনে খরচ বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ খামার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। পাশাপাশি ব্যাংক ও এনজিওর ঋণের অতিরিক্ত সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে খামারিরা খুব একটা লাভের মুখ দেখছেন না। পরশুরাম উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হরি কমল জানান, উপজেলার প্রতিটি খামার পরির্দশন করে খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ ওষুধপত্র দিচ্ছি। এবার এই উপজেলায় প্রায় ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার মোটাতাজা করা পশু ক্রয় বিক্রয় হবে বলে আমরা আশা করছি। তিনি আরও বলেন, উপজেলায় ১০ টি স্থায়ী ও ১৫ টি অস্থায়ী পশুর হাটের মাধ্যমে এসব গবাদি পশু বিক্রি করা হবে। এছাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে পশুর ছবি আপলোড করে অনলাইনে ও বিক্রি করা হবে বলে তিনি জানান। এদিকে গত কয়েক বছর কোরবানির সময় ভারত থেকে গরু আসার কারনে পরশুরামে স্হানীয় খামারিদের লোকসান গুনতে হয়েছে বলে জানান খামারিরা।খামারি ফয়েজ উল্লাহ বলেন ,আমরা খামারিরা সারা বছর ধরে কোরবানির সময় ন্যায্য মুল্যে পশু বিক্রির আশায় পশুদের প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে লালন পালন করে থাকি । এতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে আমাদের অনেক খরচ হয় পাশাপাশি আছে চিকিৎসা খরচ। কিন্তু যদি ভারত থেকে গরু আসে তাহলে আমাদের লাভতো দুরের কথা বিক্রি ও হয়না। এব্যাপারে পরশুরাম থানার অফিসার ইনচার্জ শাহাদাত হোসেন খান বলেন, ভারতীয় গরু সরাসরি এদেশে নিষিদ্ধ। ভারতীয় গরু যাতে এদেশে আসতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশের কড়া নজরদারি রয়েছে। স্হানীয় গরু ব্যবসায়ীরা বলেন, সীমান্তে যদি এব্যাপারে কড়া নজরদারি এবং টহল দেয়া হয় তাহলে ভারতীয় গরু আসা রোধ হতে পারে। যারা সীমান্তে কর্মরত আছেন তারা যদি এব্যপারে আন্তরিক হন তাহলেই আমরা আসন্ন কোরবানির ঈদে লোকসান থেকে রক্ষা পাবো বলে আশা করেন ওইসব স্হানীয় পশু ব্যবসায়ীরা। SHARES মতামত বিষয়: