ভয়াবহ রূপে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। বেসামাল রাজধানী বাসী। ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৪:৫০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২৪ জিল্লুর খান (বিশেষ প্রতিনিধি) ক্রাইম পেট্রোল ইনভেস্টিগেশন। দিন দিন রাজধানী ঢাকা যেন হয়ে উঠছে এডিস মশার অভয়ারণ্য। মশার বংশবিস্তার রোধে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। দুই সিটির ২০ অঞ্চলে ২০ টি টিম তাদারকি করার কথা থাকলেও তাদের ঠিকমতো মাঠে দেখা যাচ্ছে না বলে নগরবাসীর অভিযোগ। ফলে ডেঙ্গু নিথনের দুই সিটির উদ্যোগ সফল হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।খোঁজ নিয়ে জানা যায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক দুই মেয়র দায়িত্ব থাকাকালীন প্রতি বছরে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হয়। বরাদের কোটি কোটি টাকা খরচ করা হলেও মশা নিধনের কোন কাজই হয় নি।বরং বেড়েছে দুর্ভোগ। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নতুন নতুন উদ্যোগ নেয়া হলেও ডেঙ্গু প্রতিরোধের কোন আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন প্রশাসক নিযুক্ত হওয়ার পর দুই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মশক নিধন কার্যক্রম তদারকির জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে দুই সিটির ২০ অঞ্চলে ২০ টি টিম কাজ করছে। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ টিমকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ফলে মশা নিধনের নানা উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। সম্প্রীতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক সভায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মতামত দিয়ে জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাগত তথ্য নয় রোগীর ঠিকানা অনুসন্ধান করেও ব্যবস্থা নিতে হবে। মশক নিধন স্প্রে শুধু নালা নর্দমায় নয় বাড়ির ভেতরেও ছিটানো প্রয়োজন। সিটি কর্পোরেশন গুলোতে এন্টোমোলজি ল্যাব স্থাপন করতে হবে। বিভিন্ন স্থান হতে মশা সংগ্রহ করে প্রজাতি নির্ধারণ করে মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করতে হবে। একই সাথে এলাকাভিত্তিক লার্ভার ঘনত্ব কেমন তা যাচাই বাছাই করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পরিস্থিতি সামলাতে সম্মিলিত উদ্বেগ নিতে হবে দুই সিটি কর্পোরেশনকে। বিশেষ করে ডেঙ্গুর হটস্পট যম চিহ্নিত করে ব্যাপকভাবে অভিযান চালানোর কোন বিকল্প নেই। সভায় আরো জানানো হয়, সারাদেশে এই বছর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬৪ হাজার ৪৭১ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৩১৪ জন। গত বছর এই সময়ে ডেঙ্গুর সংক্রমনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭৬ হাজার ১৬ এবং নৃত্যের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮০ জন।তবে এর মধ্যে তুলনামূলক ঢাকায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। সংশ্লিষ্টদের মতে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও নগরবাসীর মশার অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এর মূল কারণ সিটি কর্পোরেশনের গাফিলতি, কার্যকরী ঔষধ ব্যবহার না করা ও মশার প্রযোজন ক্ষেত্র চিহ্নিত করে ধ্বংস করতে না পারা। জানা যায়, চলতি বছরের ঢাকায় দুই সিটি কর্পোরেশনের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪৭২ টি স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়। যেখানে লার্ভা পাওয়া গেছে ৭ হাজার ১৯৫ টি স্থাপনায়।মশক নিধনে স্প্রে করা হয়েছে ৩৭ হাজার ৫০০৫টি নোভালিউরন ট্যাবলেট প্রয়োগ করা হয়েছে। তবু কেন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে নগরবাসী এর কোন সঠিক জবাব দিতে পারছে না দুই সিটির সংশ্লিষ্ট বিভাগ। নগরবাসীর অভিযোগ, প্রতি বছর নগরীতে এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ হতে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হলেও কাজের কাজ তেমন কিছুই হচ্ছে না। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, দেশব্যাপী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে দীর্ঘ মেয়াদে গবেষণা এবং উন্নয়নের উপর জোর দিতে হবে। বিএসসির প্রশাসক নজরুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছি কিন্তু সবাই সচেতন না হলে আমাদের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এডিস মশার উথসস্থল -গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, খাবারের প্যাকেট, অপ ব্যবহৃত কোমোড উল্লেখ করে তিনি বলেন এসব পরিত্যক্ত দ্রব্যাদিতে পানি জমে এসিডের লার্ভা জন্মায়। ফলে এসব দুর্গা দিতে যাতে পানি জমে না থাকে সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলেই সহজে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যাবে। SHARES স্বাস্থ্য বিষয়: