বয়োবৃদ্ধ মানুষের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি ম্যাজিকের মতো দূর হবে নিয়মিত ৪টি খাবারে।

প্রকাশিত: ৮:২০ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি : শরীরের কাঠামো তৈরি হয় হাড়ের মাধ্যমে। অথচ হাড়ের যত্নের বিষয়ে বেশির ভাগ মানুষ খুবই উদাসীন। সময় যত এগিয়ে যাচ্ছে তাই ততই মানুষের বাড়ছে হাড়ক্ষয়, জয়েন্টে ব্যথা। যা মূলত হয় শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থেকে। এ ঘাটতি পূরণে ওষুধ থাকলেও বেশি পরিমাণে এ-জাতীয় ওষুধ সেবনে কিডনি বিকলসহ শরীরে অন্যান্য রোগ বাসা বাঁধে। তাই আসুন জেনে নিই কোন খাবারে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি ম্যাজিকের মতো দূর হবে।                  ক্যালসিয়াম শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি খনিজ। সুস্থতা নিশ্চিত করতে তাই সবারই শরীরে ক্যালসিয়াম নিশ্চিত করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, যদি শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকে আর সেটি যদি সঠিক সময়ে পূরণ না হয় তবে দীর্ঘকালীন রোগ শরীরে বাসা বাঁধার সুযোগ পায়। যেমন মেরুদণ্ড-পেশির সমস্যা, নখ-ত্বক-দাঁত-চুলের সমস্যা, বিষণ্নতা, ক্লান্তিবোধ ইত্যাদি। ক্যালসিয়ামের অভাবে ভয়ংকর যে রোগটি হয় তা হলো অস্টিওপেনিয়া ও অস্টিওপরোসিস। সোজা ভাষায় যাকে হাড় ক্ষয়রোগ বলা যায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে অকালেই আপনাকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হবে। তাই নিয়মিত ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার ডায়েটে রাখতে পারেন। বিশেষ চার খাবারকে ডায়েটে বেশি প্রাধান্য দিলেই শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দ্রুত দূর করতে পারবেন।

 ১।সিদ্ধ ঢেঁড়স: সবজি হিসেবে অনেকেরই পছন্দ ঢেঁড়স। প্রতি ৫০ গ্রাম ঢেঁড়সে প্রায় ১৭২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। এটি শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে। নিয়মিত খাবারের তালিকায় ঢেঁড়স রাখলে উপকার মিলবে দ্রুতই।
 
২। দুধ ও চিজ: দুধ পান করার অনেক উপকারিতা। তার মধ্যে একটি হলো, এতে থাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম। দুধে আরও থাকে প্রোটিন, ভিটামিন এ, ডি। এক কাপ গরুর দুধে ২৭৬-৩৫২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। এদিকে চিজ থেকে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম দুটিই পাওয়া যায় যেহেতু এটি দুধ দিয়েই তৈরি। এতে ৩৩১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় প্রতি আউন্স চিজে।
 
৩। সিদ্ধ ডিম ও ঘি: গরম ভাতে ঘি মাখিয়ে সিদ্ধ ডিম খেতে পারেন। এতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। ঘিয়ে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি রয়েছে ভিটামিন ডি। আর একটি ডিমের কুসুমে ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২২ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৬৬ মিলিগ্রাম, ৯.৫ মাইক্রোগ্রাম রয়েছে সেলেনিয়াম এবং ১৯ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। তাই ডায়েটে এ খাবারকে প্রাধান্য দিন।
 
৪। সাদা তিল ও বাদাম: মাত্র ১০০ গ্রাম সাদা তিলে রয়েছে ১ হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। তাই ক্যালসিয়ামের শ্রেষ্ঠ উৎস বলা হয় সাদা তিলকে। সাদা তিলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস যা হাড় মজবুত করে এবং অস্টিওপোরোসিসের আশঙ্কা কমায়। জিঙ্ক হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়।
 
বাদামেও থাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম। পুষ্টিবিদরা বলেন, ১০০ গ্রাম বাদামে থাকে প্রায় ২৬৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। তাই নিয়মিত বাদাম খেলে তা শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে। তবে খুব বেশি খাবেন না। প্রতিদিন কয়েকটি কাঠ বাদামই যথেষ্ট।
 
তবে মনে রাখবেন ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেলে চকলেট, কার্বোনেটযুক্ত পানীয় ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দেয়। তাই ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেলে এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করবেন।