জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইনে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের নিয়ন্ত্রণ ধারা সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবঃ ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। 

প্রকাশিত: ৫:১৬ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার : বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৯ নং ধারায় যে বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট নয়। বরং পরিধির ব্যাপকতার কারণে বাল্যবিবাহ নিয়ন্ত্রণ করার চেয়ে প্রশ্রয় দেওয়ার মতো। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইনের এই ধারা সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

রাজধানীর একটি হোটেলে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের আয়োজনে ‘শিশুর প্রতি সহিংসতা নিরসনে প্রচারাভিযান’ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাল্যবিবাহের ছোবলে পড়ে নারীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাল্যবিয়ের কারণ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। একটি গবেষণায় এসেছে, অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে ১৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার কারণে ২৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ বাল্যবিয়ে হয়। এ ছাড়া, কম বয়সে বিয়ে দিলে যৌতুকের পরিমাণ কম দিতে হয় বলে মনে করেন বাবা-মা। আমি মনে করি, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও ধর্মীয় নেতাদের বেশি করে সম্পৃক্ত করা জরুরি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বাল্যবিবাহের কারণে অন্যান্য আর্থসামাজিক প্রতিবন্ধকতা যেমন—মাতৃমৃত্যু, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মেয়েদের ঝরে পড়া ইত্যাদি দেখা যায়। সে জন্য বাংলাদেশ সরকার মেয়ে শিশুদের বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া রোধ করার জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি চালু করেছে, এর ফলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়ের সংখ্যা ছেলেদের চেয়ে ১০ ভাগ বেড়েছে।’ বাল্যবিবাহ রোধে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতাদের সচেতন করা বেশি জরুরি বলে তিনিও মত দেন।

অনুষ্ঠানে ওয়ার্ল্ড ভিশন পরিচালিত লিসেনিং টু ব্রাইডস (কনের কথা শুনি) শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনা করা হয়। এতে আরও বক্তব্য দেন—ওয়ার্ল্ড ভিশনের ন্যাশনাল ডিরেক্টর সুরেশ বারলেট, সিনিয়র ডিরেক্টর অপারেশনস চন্দন গোমেজ এবং উপপরিচালক নিশাত সুলতানা।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৯ ধারায় বিশেষ বিধানে বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতা-মাতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে, বিয়ে সম্পাদিত হলে সেটি এই আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে না।’