দিনভর নাটকের পর বিশ্বকাপ দল তামিমকে ছাড়াই! ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩ তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। —ফাইল ছবি নিজস্ব প্রতিনিধি দুই পা এগিয়ে আবার এক পা পেছানোর দ্বিধায় দিনজুড়ে ভুগতে থাকলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রশাসকরা। তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপ দলে রাখা হবে কি হবে না, তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় দল ঘোষণা পিছিয়ে দিতে দিতে তাঁরা নানাজনের পরামর্শও শুনছিলেন। এঁদের মধ্যে অন্যতম অভিজ্ঞ এক ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব। যিনি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকে অনুরোধ করে যান, ‘আগুন ধরাবেন না প্লিজ!’ তামিমকে দেশে রেখে আজ বিকেলে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপের ফ্লাইট ধরলে বিতর্কের গভীর এক জ্বালামুখ খুলে যাওয়ার শঙ্কার দিকটিই দেখিয়ে যান ওই সাবেক ক্রিকেটার। অবশ্য যতক্ষণে তিনি সতর্ক করে গেছেন, এর আগেই আগুন ধরতে বাকিও ছিল না। সেটি লাগে আগের দিন মধ্যরাতে। সোমবার রাতে সিডনি থেকে ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় পৌঁছামাত্রই গুলশানে বিসিবি সভাপতির বাসায় ছুটে যান চন্দিকা হাতুরাসিংহে। সেখানে তাঁর সঙ্গী হন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নাজমুলের সঙ্গে আলোচনা সেরে তাঁরা বেরিয়ে যাওয়ার আগেই চাউর হয়ে যায় মূল আলোচ্য। সকাল হতে না হতে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে দুজনের কেউই তামিমকে বিশ্বকাপ দলে রাখার পক্ষে মত দেননি। মত না দেওয়ার কারণ একাধিক। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৪৪ রানের ইনিংস খেলা তামিম ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি ‘পুরো ফিট’ নন। সেই সঙ্গে নির্বাচকদেরও এই ওপেনার জানিয়ে রাখেন, তাঁকে বিশ্বকাপ দলে রাখা হলে তাঁর জমাট বেঁধে থাকা কোমরের অস্বস্তির বাস্তবতা মেনেই যেন নেওয়া হয়। দুইয়ে মিলে ‘একজোট’ কোচ-অধিনায়ক নাজমুলকে জানিয়ে আসেন, তাঁরা বরং তামিমের জায়গায় পুরো ফিট একজন ক্রিকেটার নিয়েই বিশ্ব আসরে যেতে চান। সুবাদে সাকিব-তামিমের পুরনো দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ টেনে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে থাকে খবরের শাখা-উপশাখা। তাতে মূলধারার কিছু গণমাধ্যমও যোগ দেয়। এমনও বলা হতে থাকে যে, তামিমকে রাখা হলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্বই দেবেন না সাকিব। দিনভর গুজবের মধ্যে নিশ্চুপ থাকার কৌশল বেছে নেয় বিসিবি। কর্তাব্যক্তিদের বেশির ভাগই ফোন কেটে দিয়ে যোগাযোগ এড়িয়ে চলছিলেন। এমনিতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিসিবির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট : দ্য টাইগার্স’ বেশির ভাগ সময়ই নিষ্ক্রিয় থাকে। কিন্তু কাল দেখা গেল সেটি ভীষণ সক্রিয়। ক্ষণে ক্ষণে আপডেট আসতে থাকে। একবার জানানো হয়, সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় বিশ্বকাপ জার্সি উন্মোচনের পাশাপাশি ঘোষণা করা হবে দলও। কিন্তু নির্ধারিত সময় ঘনিয়ে আসতে না আসতেই জানানো হয়, দল ঘোষণা বিলম্বিত হবে আরো কিছুটা। সেটি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচের পর। মাঠে সেই ম্যাচ চলছিল ঠিকই, তবে মাঠের বাইরে বরং এর চেয়েও উত্তেজনাপূর্ণ আরেক ম্যাচ চলছে তখন। তামিমকে রাখা না রাখা নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে অবশ্য এর আগেই একরকম পৌঁছে যান নীতিনির্ধারকরা। একসময় দৃশ্যপটে উপস্থিত হন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ডেকে এনে মতামত চাওয়া হয় তাঁরও। আরো অনেকের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে তামিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর-পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অবসর ভেঙে ফেরা এই বাঁহাতি ওপেনার ইংল্যান্ড থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসে নিজেকে তৈরি করছিলেন বিশ্বকাপ খেলার জন্যই। এটিও সবার জানা যে লন্ডন থেকে নিয়ে আসা ইনজেকশনের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তাই নেই। সেটি তিন মাসও ব্যথামুক্ত রাখতে পারে, আবার তিন দিন পরও ব্যথা ফিরতে পারে। দল চূড়ান্ত করার আগে তামিম সেই ঝুঁকির দিকটিই ভাবতে বলেন নির্বাচকদের। তাতেই অধিনায়ক আর হেড কোচ মনস্থির করে ফেলেন যে তামিমকে ছাড়াই তাঁরা বিশ্বকাপে যেতে চান। যত দূর জানা গেছে, বোর্ড সভাপতি নাজমুলও একমত হন তাঁদের সঙ্গে। না হওয়ারও কোনো কারণ নেই। একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে, সম্প্রতি তামিমের সঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসকের কথোপকথন তর্ক পর্যন্তও গড়িয়েছে। নাজমুল প্রথমে তামিমকে ৭ অক্টোবর ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে না খেলার পরামর্শ দেন বলে জানা গেছে। পরে আবার ওপেন না করে ব্যাটিং অর্ডারে তামিমকে আরো নিচে নেমে যাওয়ার প্রস্তাবও দিয়ে বসেন। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি তামিম। নিজের কড়া প্রতিক্রিয়া জানান তখনই। তাঁর সামর্থ্যে টিম ম্যানেজমেন্টের অনাস্থা মনোবেদনার কারণ হয় এই ওপেনারের। পরে তিনি নিজেও খুলে দেন দলে না থাকার পথ। সুবাদে তাঁকে না রাখার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেলেও কোথায় যেন বাধা ছিল। বাদই যখন দেওয়া হবে, তাহলে অবসর থেকে ফেরানো হয়েছিল কেন! এমন আলোচনাও উঠে আসে। তাই পিছিয়ে যায় দল ঘোষণা। সেই ঘোষণাটি আসে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটের হারে সিরিজ খোয়ানোর পরপরই, রাত ৮টা ১৬ মিনিটে। দিনভর নাটকের পর বিশ্বকাপ দলটি তামিমকে ছাড়াই! SHARES খেলাধুলা বিষয়: তামিমকে ছাড়াইদিনভরনাটকবিশ্বকাপ দল
দুই পা এগিয়ে আবার এক পা পেছানোর দ্বিধায় দিনজুড়ে ভুগতে থাকলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রশাসকরা। তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপ দলে রাখা হবে কি হবে না, তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় দল ঘোষণা পিছিয়ে দিতে দিতে তাঁরা নানাজনের পরামর্শও শুনছিলেন। এঁদের মধ্যে অন্যতম অভিজ্ঞ এক ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব। যিনি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকে অনুরোধ করে যান, ‘আগুন ধরাবেন না প্লিজ!’ তামিমকে দেশে রেখে আজ বিকেলে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপের ফ্লাইট ধরলে বিতর্কের গভীর এক জ্বালামুখ খুলে যাওয়ার শঙ্কার দিকটিই দেখিয়ে যান ওই সাবেক ক্রিকেটার।
অবশ্য যতক্ষণে তিনি সতর্ক করে গেছেন, এর আগেই আগুন ধরতে বাকিও ছিল না। সেটি লাগে আগের দিন মধ্যরাতে। সোমবার রাতে সিডনি থেকে ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় পৌঁছামাত্রই গুলশানে বিসিবি সভাপতির বাসায় ছুটে যান চন্দিকা হাতুরাসিংহে। সেখানে তাঁর সঙ্গী হন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
নাজমুলের সঙ্গে আলোচনা সেরে তাঁরা বেরিয়ে যাওয়ার আগেই চাউর হয়ে যায় মূল আলোচ্য। সকাল হতে না হতে খবর ছড়িয়ে পড়ে যে দুজনের কেউই তামিমকে বিশ্বকাপ দলে রাখার পক্ষে মত দেননি। মত না দেওয়ার কারণ একাধিক। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৪৪ রানের ইনিংস খেলা তামিম ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি ‘পুরো ফিট’ নন।
সেই সঙ্গে নির্বাচকদেরও এই ওপেনার জানিয়ে রাখেন, তাঁকে বিশ্বকাপ দলে রাখা হলে তাঁর জমাট বেঁধে থাকা কোমরের অস্বস্তির বাস্তবতা মেনেই যেন নেওয়া হয়। দুইয়ে মিলে ‘একজোট’ কোচ-অধিনায়ক নাজমুলকে জানিয়ে আসেন, তাঁরা বরং তামিমের জায়গায় পুরো ফিট একজন ক্রিকেটার নিয়েই বিশ্ব আসরে যেতে চান। সুবাদে সাকিব-তামিমের পুরনো দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ টেনে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে থাকে খবরের শাখা-উপশাখা। তাতে মূলধারার কিছু গণমাধ্যমও যোগ দেয়। এমনও বলা হতে থাকে যে, তামিমকে রাখা হলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্বই দেবেন না সাকিব।
দিনভর গুজবের মধ্যে নিশ্চুপ থাকার কৌশল বেছে নেয় বিসিবি। কর্তাব্যক্তিদের বেশির ভাগই ফোন কেটে দিয়ে যোগাযোগ এড়িয়ে চলছিলেন। এমনিতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিসিবির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট : দ্য টাইগার্স’ বেশির ভাগ সময়ই নিষ্ক্রিয় থাকে। কিন্তু কাল দেখা গেল সেটি ভীষণ সক্রিয়। ক্ষণে ক্ষণে আপডেট আসতে থাকে। একবার জানানো হয়, সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় বিশ্বকাপ জার্সি উন্মোচনের পাশাপাশি ঘোষণা করা হবে দলও। কিন্তু নির্ধারিত সময় ঘনিয়ে আসতে না আসতেই জানানো হয়, দল ঘোষণা বিলম্বিত হবে আরো কিছুটা। সেটি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচের পর। মাঠে সেই ম্যাচ চলছিল ঠিকই, তবে মাঠের বাইরে বরং এর চেয়েও উত্তেজনাপূর্ণ আরেক ম্যাচ চলছে তখন। তামিমকে রাখা না রাখা নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে অবশ্য এর আগেই একরকম পৌঁছে যান নীতিনির্ধারকরা। একসময় দৃশ্যপটে উপস্থিত হন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ডেকে এনে মতামত চাওয়া হয় তাঁরও। আরো অনেকের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে তামিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর-পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অবসর ভেঙে ফেরা এই বাঁহাতি ওপেনার ইংল্যান্ড থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসে নিজেকে তৈরি করছিলেন বিশ্বকাপ খেলার জন্যই। এটিও সবার জানা যে লন্ডন থেকে নিয়ে আসা ইনজেকশনের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তাই নেই। সেটি তিন মাসও ব্যথামুক্ত রাখতে পারে, আবার তিন দিন পরও ব্যথা ফিরতে পারে। দল চূড়ান্ত করার আগে তামিম সেই ঝুঁকির দিকটিই ভাবতে বলেন নির্বাচকদের। তাতেই অধিনায়ক আর হেড কোচ মনস্থির করে ফেলেন যে তামিমকে ছাড়াই তাঁরা বিশ্বকাপে যেতে চান। যত দূর জানা গেছে, বোর্ড সভাপতি নাজমুলও একমত হন তাঁদের সঙ্গে। না হওয়ারও কোনো কারণ নেই। একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে, সম্প্রতি তামিমের সঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসকের কথোপকথন তর্ক পর্যন্তও গড়িয়েছে। নাজমুল প্রথমে তামিমকে ৭ অক্টোবর ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে না খেলার পরামর্শ দেন বলে জানা গেছে। পরে আবার ওপেন না করে ব্যাটিং অর্ডারে তামিমকে আরো নিচে নেমে যাওয়ার প্রস্তাবও দিয়ে বসেন। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি তামিম। নিজের কড়া প্রতিক্রিয়া জানান তখনই। তাঁর সামর্থ্যে টিম ম্যানেজমেন্টের অনাস্থা মনোবেদনার কারণ হয় এই ওপেনারের। পরে তিনি নিজেও খুলে দেন দলে না থাকার পথ। সুবাদে তাঁকে না রাখার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেলেও কোথায় যেন বাধা ছিল। বাদই যখন দেওয়া হবে, তাহলে অবসর থেকে ফেরানো হয়েছিল কেন! এমন আলোচনাও উঠে আসে। তাই পিছিয়ে যায় দল ঘোষণা। সেই ঘোষণাটি আসে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটের হারে সিরিজ খোয়ানোর পরপরই, রাত ৮টা ১৬ মিনিটে। দিনভর নাটকের পর বিশ্বকাপ দলটি তামিমকে ছাড়াই!