শিশুর ইলেকট্রিক গ্যাজেট আসক্তি, জেনে নিন করণীয় ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ১২:৩২ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২৪ দিনের বেশির ভাগ সময় নানা রকম ইলেকট্রিক গ্যাজেটে ব্যয় করলে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ হয় না। নিজস্ব প্রতিনিধি শিশুদের স্মার্টফোনের আসক্তি তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। শিশুর স্মার্টফোন আসক্তি দূর করতে পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফ হোসেন, লিখেছেন আহমেদ ইমরান। শিশু কি মোবাইল ফোন নিয়ে সারাক্ষণ বসে থাকছে? কী করে এই নেশা কমাবেন? শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রাখুন। দিনের বেশির ভাগ সময় মোবাইল ঘেঁটে কাটালে তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ হয় না। শিশুদের মস্তিষ্কের বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে হওয়া উচিত। এর ফলে তাদের মধ্যে সংবেদনশীলতা বাড়ে, চিন্তার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর কিছু তথ্য। বর্তমানে একজন মানুষের ‘স্ক্রিন টাইম’ দিনে গড়ে প্রায় সাত ঘণ্টা! ২৪ ঘণ্টায় মানুষ ফোন স্পর্শ করে গড়ে দুই হাজার ৬১৭ বার! একজন মানুষ সারা দিনে যতক্ষণ সজাগ থাকে, তার ৪৪ ভাগ সময়ই কোনো না কোনো স্ক্রিনের সামনে থাকে! স্মার্টফোনের দিকে তাকিয়ে থেকেই বছরের মোট ৭৫ দিন কেটে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে মুক্ত নয় শিশুরাও। কারণ তারা তাদের মা-বাবাকেই অনুসরণ করে। আর ৯ বছরের একটি শিশু মোবাইল ফোনে ব্যয় করে দুই ঘণ্টারও বেশি! সন্তানের সামনে স্মার্টফোন ব্যবহার নয় শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। তারা চোখের সামনে অন্যদের যা করতে দেখে সেটাই করতে চায়। তাই আপনি যদি আপনার সন্তানের স্মার্টফোনের নেশা কাটানোর উপায় খুঁজতে যান, তাহলে প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো আপনাকে স্মার্টফোনে সময় কমিয়ে সময় দিতে হবে আপনার সন্তানকে। সন্তানরা স্বভাবতই তাদের মা-বাবাকে অনুকরণ করে বেশি। আগে মা-বাবা নিজেরা স্মার্টফোন থেকে বিরত থাকুন। ছবি আঁকা তাই ছবি আঁকা বা ক্র্যাফটিং শিশুর কল্পনার জগৎ আরো উন্মুক্ত দিতে হাতে তুলে দিতে পারেন রং আর তুলি। কৌটার রং, রং পেনসিল, আর্ট পেপার, ইজেল কিনে দিন তাকে। মুঠোফোনে গেম বা ভিডিও থেকে তার চোখ ফিরিয়ে আনুন সাদা কাগজে। যেখানে নিজের কল্পনার জগৎ তৈরি করবে শিশু। তার আঁকা ছবির প্রশংসা করুন, পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন। শেখাতে পারেন কাগজ দিয়ে নানা রকম খেলনা বা উপকরণ বানানোর কৌশল। বই পড়া সারা দিন পাঠ্য বই পড়ার চাপে শিশু যেন বই দেখলেই দৌড়ে না পালায়। তাকে কিছুটা সময় দিন নিজের পছন্দমতো বই পড়তে। কমিকস, রহস্য-রোমাঞ্চ, ভূতের গল্পের মতো নানা ধরনের বই পড়তে ভালোবাসে শিশুরা। নতুন বই কিনে তাকে বই পড়ায় উৎসাহ দিতে পারেন। গান বা নাচের চর্চা আপনার সন্তানের চোখ ডিজিটাল স্ক্রিন থেকে সরাতে নাচ, গান বা আবৃত্তির মতো সাংস্কৃতিক পরিবেশে আগ্রহী করতে পারেন। তবে কোনোটাই বেশি চাপ দিয়ে শেখানোর দরকার নেই, বরং তার যেদিকে আগ্রহ সেদিকে উৎসাহ দিন। কেউ হয়তো ঘুঙুরের তাল ভালোবাসবে, কেউ চাইবে হারমোনিয়ামে বসে সুর-তালের খেলায় মজতে। তাই শিশুকে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত রাখুন বাড়িতে। এতে সে আনন্দ খুঁজে পাবে। ঘরোয়া খেলাধুলা লুডু, ক্যারম, দাবার মতো বেশ কিছু খেলা আছে, যা বাসায় সময় কাটানোর জন্যে ভালো। সন্তানকে এসব খেলাধুলায় উৎসাহ দিতে পারেন। দাবার চাল শিশুর বুদ্ধি বিকাশে সহায়ক হবে। লুডু বা ক্যারম খেলতে খেলতে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাও বাড়তে থাকবে। নানা রকম ধাঁধা, দেশ বা রাজধানীর নাম বিষয়ক খেলাও খেলতে পারেন সন্তানদের নিয়ে। এতে মজা করে পয়েন্ট অর্জনের ওপর উপহার থাকতে পারে তাদের জন্য। ঘর গোছানো প্রতিটি মায়েরই সন্তানের ওপর থাকা সাধারণ অভিযোগ হলো―ঘর না গোছানো। ঘর গোছানোর অভ্যাসে গড়ে তোলার এর থেকে ভালো সময় আর হয় না। তাদের পুরনো কাপড় আলাদা করাতে পারেন তাদের দিয়েই, যা সুবিধাবঞ্চিতদের দান করা যেতে পারে। নিজের ঘরটা জীবাণুমুক্ত করার দায়িত্ব দিতে পারেন তাদের ঘাড়েই, সম্ভব হলে পুরো বাসা। ঘুমের আগে নয় ঘুমের আগে শিশুকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেবেন না। এতে চোখের ক্ষতি হয় সবচেয়ে বেশি। ঘুমও ভালো হয় না। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত আধাঘণ্টা আগে মোবাইল ফোন সরিয়ে রাখুন। ধীরে ধীরে আসক্তি কমবে। শিশুকে সময় দিন অনেক শিশুই একাকিত্বের কারণে মোবাইল ফোনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ওদের সঙ্গে সময় কাটালে সেই আসক্তি কিছুটা কমে। সময়সীমা বেঁধে দিন দিনের কতটা সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবে, তা গোড়াতেই ঠিক করে দিন। সেই নিয়মের বদল যেন না হয়। শিশুর সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলুন বাড়ন্ত শিশুরা নিজেদের প্রতি কেউ গুরুত্ব দিক তা চায়। এ জন্য শিশুকে ব্যস্ততা কিংবা কোনো অজুহাতেই এড়িয়ে না গিয়ে সময় দিন, তাদের সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলুন। আপনি ওদের গুরুত্ব দিলে তারা সেটা বুঝতে পারে। সন্তানের কাছ থেকে ফোন নেওয়া বা টিভির সুইচ বন্ধ করার ক্ষেত্রে নরম হোন। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে তাকে আদর করুন। ভালোভাবে ডেকে স্কুল বা অন্য কোনো শিশুর ভালো লাগার বিষয় নিয়ে কথা বলে ভুলিয়ে দিন। শিশুকে ভালোবেসে বোঝান এবং অতিরিক্ত ডিভাইসে যে তারও ক্ষতি হচ্ছে তাও বুঝিয়ে বলুন। SHARES লাইফস্টাইল বিষয়: আসক্তিইলেকট্রিক গ্যাজেটকরণীয়শিশু
শিশুদের স্মার্টফোনের আসক্তি তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। শিশুর স্মার্টফোন আসক্তি দূর করতে পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফ হোসেন, লিখেছেন আহমেদ ইমরান। শিশু কি মোবাইল ফোন নিয়ে সারাক্ষণ বসে থাকছে? কী করে এই নেশা কমাবেন? শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রাখুন। দিনের বেশির ভাগ সময় মোবাইল ঘেঁটে কাটালে তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ হয় না।
শিশুদের মস্তিষ্কের বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে হওয়া উচিত। এর ফলে তাদের মধ্যে সংবেদনশীলতা বাড়ে, চিন্তার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর কিছু তথ্য। বর্তমানে একজন মানুষের ‘স্ক্রিন টাইম’ দিনে গড়ে প্রায় সাত ঘণ্টা! ২৪ ঘণ্টায় মানুষ ফোন স্পর্শ করে গড়ে দুই হাজার ৬১৭ বার! একজন মানুষ সারা দিনে যতক্ষণ সজাগ থাকে, তার ৪৪ ভাগ সময়ই কোনো না কোনো স্ক্রিনের সামনে থাকে! স্মার্টফোনের দিকে তাকিয়ে থেকেই বছরের মোট ৭৫ দিন কেটে যাচ্ছে।
এই অবস্থা থেকে মুক্ত নয় শিশুরাও। কারণ তারা তাদের মা-বাবাকেই অনুসরণ করে। আর ৯ বছরের একটি শিশু মোবাইল ফোনে ব্যয় করে দুই ঘণ্টারও বেশি! সন্তানের সামনে স্মার্টফোন ব্যবহার নয় শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। তারা চোখের সামনে অন্যদের যা করতে দেখে সেটাই করতে চায়।
তাই আপনি যদি আপনার সন্তানের স্মার্টফোনের নেশা কাটানোর উপায় খুঁজতে যান, তাহলে প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো আপনাকে স্মার্টফোনে সময় কমিয়ে সময় দিতে হবে আপনার সন্তানকে। সন্তানরা স্বভাবতই তাদের মা-বাবাকে অনুকরণ করে বেশি। আগে মা-বাবা নিজেরা স্মার্টফোন থেকে বিরত থাকুন। ছবি আঁকা তাই ছবি আঁকা বা ক্র্যাফটিং শিশুর কল্পনার জগৎ আরো উন্মুক্ত দিতে হাতে তুলে দিতে পারেন রং আর তুলি। কৌটার রং, রং পেনসিল, আর্ট পেপার, ইজেল কিনে দিন তাকে।
মুঠোফোনে গেম বা ভিডিও থেকে তার চোখ ফিরিয়ে আনুন সাদা কাগজে। যেখানে নিজের কল্পনার জগৎ তৈরি করবে শিশু। তার আঁকা ছবির প্রশংসা করুন, পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন। শেখাতে পারেন কাগজ দিয়ে নানা রকম খেলনা বা উপকরণ বানানোর কৌশল। বই পড়া সারা দিন পাঠ্য বই পড়ার চাপে শিশু যেন বই দেখলেই দৌড়ে না পালায়। তাকে কিছুটা সময় দিন নিজের পছন্দমতো বই পড়তে। কমিকস, রহস্য-রোমাঞ্চ, ভূতের গল্পের মতো নানা ধরনের বই পড়তে ভালোবাসে শিশুরা। নতুন বই কিনে তাকে বই পড়ায় উৎসাহ দিতে পারেন। গান বা নাচের চর্চা আপনার সন্তানের চোখ ডিজিটাল স্ক্রিন থেকে সরাতে নাচ, গান বা আবৃত্তির মতো সাংস্কৃতিক পরিবেশে আগ্রহী করতে পারেন। তবে কোনোটাই বেশি চাপ দিয়ে শেখানোর দরকার নেই, বরং তার যেদিকে আগ্রহ সেদিকে উৎসাহ দিন। কেউ হয়তো ঘুঙুরের তাল ভালোবাসবে, কেউ চাইবে হারমোনিয়ামে বসে সুর-তালের খেলায় মজতে। তাই শিশুকে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত রাখুন বাড়িতে। এতে সে আনন্দ খুঁজে পাবে। ঘরোয়া খেলাধুলা লুডু, ক্যারম, দাবার মতো বেশ কিছু খেলা আছে, যা বাসায় সময় কাটানোর জন্যে ভালো। সন্তানকে এসব খেলাধুলায় উৎসাহ দিতে পারেন। দাবার চাল শিশুর বুদ্ধি বিকাশে সহায়ক হবে। লুডু বা ক্যারম খেলতে খেলতে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাও বাড়তে থাকবে। নানা রকম ধাঁধা, দেশ বা রাজধানীর নাম বিষয়ক খেলাও খেলতে পারেন সন্তানদের নিয়ে। এতে মজা করে পয়েন্ট অর্জনের ওপর উপহার থাকতে পারে তাদের জন্য। ঘর গোছানো প্রতিটি মায়েরই সন্তানের ওপর থাকা সাধারণ অভিযোগ হলো―ঘর না গোছানো। ঘর গোছানোর অভ্যাসে গড়ে তোলার এর থেকে ভালো সময় আর হয় না। তাদের পুরনো কাপড় আলাদা করাতে পারেন তাদের দিয়েই, যা সুবিধাবঞ্চিতদের দান করা যেতে পারে। নিজের ঘরটা জীবাণুমুক্ত করার দায়িত্ব দিতে পারেন তাদের ঘাড়েই, সম্ভব হলে পুরো বাসা। ঘুমের আগে নয় ঘুমের আগে শিশুকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেবেন না। এতে চোখের ক্ষতি হয় সবচেয়ে বেশি। ঘুমও ভালো হয় না। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত আধাঘণ্টা আগে মোবাইল ফোন সরিয়ে রাখুন। ধীরে ধীরে আসক্তি কমবে। শিশুকে সময় দিন অনেক শিশুই একাকিত্বের কারণে মোবাইল ফোনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ওদের সঙ্গে সময় কাটালে সেই আসক্তি কিছুটা কমে। সময়সীমা বেঁধে দিন দিনের কতটা সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবে, তা গোড়াতেই ঠিক করে দিন। সেই নিয়মের বদল যেন না হয়। শিশুর সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলুন বাড়ন্ত শিশুরা নিজেদের প্রতি কেউ গুরুত্ব দিক তা চায়। এ জন্য শিশুকে ব্যস্ততা কিংবা কোনো অজুহাতেই এড়িয়ে না গিয়ে সময় দিন, তাদের সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলুন। আপনি ওদের গুরুত্ব দিলে তারা সেটা বুঝতে পারে। সন্তানের কাছ থেকে ফোন নেওয়া বা টিভির সুইচ বন্ধ করার ক্ষেত্রে নরম হোন। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে তাকে আদর করুন। ভালোভাবে ডেকে স্কুল বা অন্য কোনো শিশুর ভালো লাগার বিষয় নিয়ে কথা বলে ভুলিয়ে দিন। শিশুকে ভালোবেসে বোঝান এবং অতিরিক্ত ডিভাইসে যে তারও ক্ষতি হচ্ছে তাও বুঝিয়ে বলুন।