মূল্য বৃদ্ধিতে জনসাধারনের আত্মসমর্পণ, সংগী হল হাহাকার আর নিরব অশ্রু।

প্রকাশিত: ৫:৪৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩

শিবব্রত (বিশেষ প্রতিনিধি)
*************************************

যদি প্রশ্ন করা হয় কেমন আছে দেশের মানুষ? মাত্র দুটি শব্দে এ প্রশ্নের জবাব দেয়া সম্ভব, শব্দ দুটি হচ্ছে ‘ভাল নেই’। আসলেই ভাল নেই দেশের মানুষ। বিস্তারিত বলতে গেলে বলতে হবে দেশের সিংহ ভাগ মানুষ এখন অসহায়, মানুষের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। যে বাঙ্গালী আশায় বুক বাঁধতে জানে, বুকের ভেতর জ্বালিয়ে রাখে আশার প্রদীপ সেই মানুষ আজ আর কোন আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না। দেখছে এক অনিশ্চিত ও অন্ধকার ভবিষ্যত। অথচ এই সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন এই সাধারণ মানুষই নতুন আশায় বুক বেধে ছিল।
যে চোখের দৃষ্টি আজ ঘোলাটে এই চোখই নতুন স্বপ্নে চকচক করে উঠে ছিল। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কি এমন ঘঠল যে মানুষের আশার ঝর্ণা শুকিয়ে গেল নিভে গেল আশার আলো?
সাধারণ বাঙ্গালীর সহজাত প্রবনতা আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে অতি পুরনো সত্য এই যে, বাঙ্গালী মোটা ভাত আর মোটা কাপড়ে সন্তুষ্ট। কিন্তু ভাতের চাল যখন বাড়ন্ত তখন আর মনে শান্তি থাকেনা। এখন আর ভাল থাকার কথা নয় কারও। একটানা তিন তিন বারের মত সরকার যখন দূর্নীতির মূলোৎপাটনের ঘোষনা দিয়ে ক্ষমতায় আসে তখন সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক ভাবে আশায় বুক বেধেছিল। কিন্তু জনগনের সে আশা এখন পর্যন্ত দুরাশাই থেকে গেছে, বাজারে জিনিস পত্রের দাম কমেনি, বেড়েছে। বাড়তে বাড়তে একেবারে মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ অবস্থায় আবার বাড়ল জ্বালানী তেলের দাম, ক’দিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন ছুতোয় বাড়ানো হয় বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম। ওদিকে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম সহ ভোজ্য তেলের দাম ও বেড়ে চলছে দফায় দফায়। সব মিলিয়ে সুখে নেই মানুষ। অথচ সুখে থাকবার ইতো স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। সেই স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল বলেই সাধারন মানুষের ভালবাসার বহি:প্রকাশ  এই সরকার। কিন্তু ফলটা কি দাড়াচ্ছে? অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে সাধারণ  মানুষের আয় হুমকীর সম্মুখীন। এছাড়া যে ভাবে প্রত্যেক পরিবারে থেকে কর্মসংস্থানের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল তা ও আমলে নেয়নি । এই পরিস্থিতিতে যদি কেউ এমন প্রশ্ন করেন  তাহলে এই সময়ে অনেকে অকাট্য যুক্তি উপস্থাপন করবেন ,দেশে নতুন নতুন ব্রীজ হচ্ছে,পাকা সড়ক হচ্ছে,ফ্লাই ওভার হচ্ছে, বিভিন্ন প্রকার ভাতা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এই সুযোগ সুবিধা দেশের কতটি মানুষ পাচ্ছেন? পেলে ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের নিত্য নিত্য বৃদ্ধির তুলনায় তা কতটুকু প্রাসঙ্গিক? সে প্রশ্নের জবাবের ভার দেশের জনগণের উপর। যুক্তি তর্কের কথা না হয় বাদ ই দেয়া গেল মানুষের ভাল থাকার যে আকাঙ্খা সে আকাঙ্খাকে নষ্ট হতে দেয়া নিশ্চয় উচিত নয়।
আমরা এটুকু বলতে পারি যে, সাধারন মানুষের চাওয়া খুব সামান্য তা হচ্ছে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বাজার, কিন্তু সেই বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের সাফল্য তুলনায় একেবারেই নাজুক। কিন্তু একটা ব্যর্থতা যখন আর সব সাফল্য কে ঢেকে ফেলে তখন তো মেনে নিতেই হয় যে সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লাভারী। বাজারে দ্রব্য মূল্য কমে আসবে মানুষ এমনটিই আশা করে বসে আছে ,এটাই বাস্তবতা। এ বাস্তব অবস্থার মুখে দাড়িয়ে  যখন বলা হয় দ্রব্য মূল্য কমবে এমন আশা অবাস্তব তখন এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে  জনগণের আত্ম সমর্পন ছাড়া আর উপায় কি?