ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যানকে অপসারণের নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ক্রাইম পেট্রোল ক্রাইম পেট্রোল News প্রকাশিত: ৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ, মে ২৪, ২০২৩ বিশেষ প্রতিনিধি : ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান পদ থেকে গোলাম মোস্তফাকে অপসারণের নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গোলাম মোস্তফা গত সপ্তাহে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক সুজিত কুমার বালা। মঙ্গলবার ( ২৩ মে) টিআইবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, “ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগকারী বোর্ড চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে ঢাকা ওয়াসা অভিযুক্তদের রক্ষার উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।” এতে বলা হয়েছে, “এটি সরকারের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের কাছ থেকে দুর্নীতির জন্য জিরো টলারেন্স ঘোষণার পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের রক্ষা করার আইনি বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।” সাবেক চেয়ারম্যানের অভিযোগ বিবেচনা করে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “ওয়াসার সদ্য অপসারিত চেয়ারম্যানের মেয়াদ গত বছর অক্টোবরে শেষ হওয়ার পর, এতদিন পেরিয়ে গেলেও নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ হয়নি। অথচ, ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে বোর্ড চেয়ারম্যান মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়ার ঠিক পাঁচ দিনের মাথায় নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হলো।” তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী, ঘটনাটিকে যদি ‘কাকতালীয়’ হিসেবে মেনেও নেয়া হয়, তবুও উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অভিযোগকারীকে সরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে ‘ওয়াসা পরিচালনায় এমডির ইচ্ছা-ই শেষ কথা, আর নিজের স্বার্থ সুরক্ষায় যে কাউকে ওয়াসা থেকে বের করে দেয়ার ক্ষমতা ওয়াসা এমডির রয়েছে’; এই অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত করা হলো।’’ টিআইবি আরো বলেছে, ‘‘যার ফলে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এই বার্তাই দেয়া হলো যে ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থানের বলে, অবারিত বিচারহীনতার লাইসেন্স পাওয়া যায়; প্রয়োজনে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বার্তাবাহক বা অভিযোগকারীকে, তা যে-ই হোক না কেন, তাকে স্তব্ধ করতে ‘শ্যুট দ্য মেসেঞ্জার’ চর্চার ব্যবহারে কোনো দ্বিধা করা হবে না।’’ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘‘ঢাকা ওয়াসাকে স্বেচ্ছাচার, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিণত করার যে অভিযোগ বোর্ডের চেয়ারম্যান করেছেন, তা ২০১৯ সালে টিআইবি প্রকাশিত ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের ফলাফলের প্রতিফলন। তাছাড়া, দীর্ঘসময় ধরে সংবাদমাধ্যমেও একই ধরনের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে।’’ তিনি বলেন, “পুরো বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহি না থাকার প্রকট উদাহরণ। ওয়াসায় দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে জবাবদিহির লক্ষ্যে তদন্ত করতে আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। বরং আরো এক দফা দুর্নীতি ও অনিয়মের সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপরতার দৃষ্টান্তই স্থাপিত হলো, যা হতাশাজনক।” বিভিন্ন সময়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করে কার্যকর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। SHARES মুক্তমত বিষয়: