১৯ বছর ধরে পায়ে স্প্রিন্ডার বহন করে বেড়াচ্ছেন গ্রেনেড হামলায় আহত সিদ্দিক তালুকদার।

প্রকাশিত: ৯:২১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২৩

 

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ নাঈম ইসলাম

বরগুনার তালতলীতে ১৯ বছর ধরে পায়ে স্প্রিন্ডার বহন করে বেড়াচ্ছেন গ্রেনেড হামলায় আহত পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিদ্দিক তালুকদার। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে সিদ্দিক প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের দাবী জানিয়েছেন।

স্থাণীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে জীবন জীবিকার তাগিদে উপজেলার কলারং গ্রামের নুরুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে সিদ্দিক তালুকদার কাজের সন্ধানে ঢাকায় গিয়ে রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিশোর বয়স থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত ভক্ত থাকায় আওয়ামী লীগের সভা সমাবেশের খবর শুনলেই সেখানে সিদ্দিক ছুটে যেতেন।
২০০৪ সালে ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গিয়ে দলীয় নেতা ও সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনছিলেন। এমন মুহুর্তে ওই সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় গ্রেনেডের স্প্রিন্ডার তার পায়ে বিদ্ধ হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।ওই হাসপাতালে দুইদিন চিকিৎসা নেওয়ার পরে তিনি অজানা ভয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গ্রামে ফিরে আসেন। এরপর সিদ্দিক আর ঢাকায় ফিরে যাননি। এরপর তিনি গত ১৯ বছর ধরে পায়ে স্প্রিন্ডার বহন করে বেড়াচ্ছেন। পায়ে প্রচন্ড ব্যথায় হাঁটতে কষ্ট হলেও টাকার অভাবে সিদ্দিক চিকিৎসা করাতে পারেনি। বর্তমানে এলাকায় তিনি দিন মজুরীর কাজ করে জিবিকা নির্বাহ করছেন।

গ্রেনেড হামলায় আহত সিদ্দিক তালুকদার বলেন, ২১ আগষ্ট বিকেলে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে অংশ নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনছিলাম। নেত্রীর বক্তব্য শুরুর পরেই শুধুই শব্দ আর শব্দ। বেশ কয়েকটি গ্রেনেডের স্প্রিন্ডার আমার পায়ে বিদ্ধ হয়। সমাবেশে উপস্থিত মানুষজন ছুটাছুটি করে যে যার মত করে চলে যায়। রক্তাক্ত আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আমাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। দুইদিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে অজানা ভয়ে পালিয়ে গ্রামের বাড়ীতে চলে এসেছি। আর ঢাকায় ফিরে যাইনি।

তিনি আরো বলেন, পায়ের স্প্রিন্ডার এখন মাংসের সাথে মিশে গেছে। মাঝেমধ্যে পায়ে বেশ ব্যথা অনুভব করলেও অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি না। পুরোপুরি সেরে উঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাহায্যের দাবী জানাই।

তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার মুঠোফোনে বলেন, গ্রেনেড হামলায় আহত সিদ্দিক পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের কলারং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন। তার চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।