শিশুর দাঁতের যত্ন

প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি

বড়দের যেমন নিয়মিত দাঁতের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন, তেমনি শিশুদেরও দাঁত, মাড়ি সুস্থ এবং দাঁত ক্ষয়মুক্ত রাখতে নিয়মিত যত্নের প্রয়োজন। তবে শিশুদের দাঁতের যত্নে বড়দের তুলনায় কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।

দাঁত ওঠার সময় থেকেই নজরদারি

শিশুর মুখে দাঁত ওঠার আগে থেকেই যত্ন নেওয়া উচিত। প্রতিবার দুধ খাওয়ার পর মাড়ি এবং জিহ্বা নরম সুতি কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে।

শিশুর ছয় মাস বয়স থেকে যত দিন পর্যন্ত কুলি করতে না পারে, তত দিন ফিঙ্গার টুথব্রাশ দিয়ে মাড়ি, দাঁত ও জিহ্বা পরিষ্কার করে দিতে হবে। ফিঙ্গার টুথব্রাশ সিলিকনের তৈরি, যা বাজারে পাওয়া যায়। এগুলো শিশুর জন্যই বিশেষভাবে তৈরি করা। শিশু যখন নিজেই কুলি করতে পারবে, তখন থেকে টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা শেখাতে হবে।
 

শিশুর দাঁতের যত্ন

শিশুর টুথব্রাশ কেমন হওয়া উচিত

শিশুর ছয় মাস বয়স থেকে দাঁত ওঠা শুরু পর্যন্ত ফিঙ্গার টুথব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ছোট মাথার ব্রাশ ব্যবহার করা ভালো। শিশুদের ব্রাশগুলো নরম ব্রিসলযুক্ত হতে হবে এবং ব্রাশের হাতল এমন হবে যেন শিশুরা হাতের মুঠায় স্বাচ্ছন্দ্যে ব্রাশ ধরতে পারে।

এক ব্রাশ কত দিন

প্রতিটি ব্রাশ তিন মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে।

তবে খেয়াল রাখতে হবে, ব্রাশের ব্রিসলগুলো বাঁকা হয়ে গেল কি না। বাঁকা হয়ে গেলে নতুন ব্রাশ ব্যবহার শুরু করতে হবে। 

কেমন টুথপেস্ট

এক থেকে তিন বছর বয়সী শিশুদের ফ্লোরাইডমুক্ত টুথপেস্ট দিতে হবে। এ সময় বিভিন্ন রং ও স্বাদের জেল টুথপেস্ট দেওয়া যেতে পারে। শিশুরা এ সময় সঠিকভাবে কুলি করতে পারে না বলে অনেক সময় টুথপেস্ট গিলে ফেলে।

 

এ ধরনের জেল টুথপেস্টে শিশুদের ফ্লোরোসিস হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। তিন বছর বয়স থেকে ফ্লোরাইড আছে এমন পেস্ট ব্যবহার করা উচিত। ফ্লোরাইড দাঁতকে শক্তিশালী করে, দাঁতের ক্ষয় রোধ করে এবং মুখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে। দাঁত ব্রাশের পর মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। ফ্লোরাইডের পরিমাণ বেশি হলে দাঁতে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই কম ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট বেছে নিতে হবে। ছয় মাস থেকে তিন বছর বয়সী শিশুদের জন্য চালের দানার সমান পেস্ট ব্যবহার করতে হবে। তিন বছর বা তার অধিক বয়সী শিশুদের জন্য মটরদানার পরিমাণ পেস্ট দিতে হবে।

কতবার ব্রাশ

সকালে নাশতার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। প্রতিবার কমপক্ষে দুই মিনিট করে দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস করতে হবে। শিশুর প্রায় সব কটি দুধদাঁত যখন উঠে যায়, তখন দেখা যায় দাঁতের ফাঁকে খাবার জমে যায়। ফাঁকা থেকে খাবার বের করতে ডেন্টাল ফ্লসের বিকল্প নেই। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি একবার ডেন্টাল ফ্লসের মাধ্যমে জমে থাকা খাবার পরিষ্কার করা হয়, তাহলে দাঁতের ক্ষয়রোগ অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে শিশুদের খুব সাবধানে ফ্লস ব্যবহার করতে হবে, যেন মাড়ি কেটে না যায়।